ঢাকা : করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সেপ্টেম্বরে খোলার কথা থাকলেও সেই সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা সচিব মোঃ আকরাম-আল-হোসেন। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে বেশ কয়েকটি প্রস্তুাবনা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলেও জানান সচিব।
রোববার (২৩ আগস্ট) সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
তিনি আরো বলেন, করোনার কারণে এ বছর পিইসি বা প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা না নেয়ার প্রস্তাব দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সারসংক্ষেপ পাঠানো হলেও এখনো এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলেই দ্রুত সিদ্ধান্ত ও তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হবে। এছাড়া স্কুল খুললে, স্ব স্ব স্কুলে কিভাবে পরীক্ষা নেয়া হবে, কিভাবে ক্লাস হবে সে ব্যাপারে নীতিমালা প্রস্তুত করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: প্রাথমিকের সমাপনী পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানালেন সচিব
বিগত পাঁচ মাস ধরে দেশের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে শিগগিরই শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। কিন্তু সচেতন অভিভাবকরা বলছেন, টিকা আসার আগে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান খুলে দিলে করোনার ঝুঁকি আরও বাড়তে পারে।
সরকারের পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ থাকবে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান। তবে এতে থেমে নেই শিক্ষা কার্যক্রম। অনলাইনভিত্তিক পাঠদান চলছে। অনুকূল পরিবেশ তৈরি হলে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া কথাও ভাবছে সরকার।
অভিভাবকরা বলছেন, এখনই খুলে দিলে লাভের চেয়ে ক্ষতির সম্মুখীন বেশি হতে হবে। এতে করোনা আক্রান্তের হার বাড়তে পারে।
শিক্ষকরা বলছেন, সরকার সিদ্ধান্ত নিলে প্রথমেই পরীক্ষামূলকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলতে পারে। প্রথমেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক কোনো শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান খোলা একেবারেই ঠিক হবে না। দেশের শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশে রয়েছে শিশুরা। প্রাপ্তবয়ষ্ক শিক্ষার্থীরা নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে পারলেও শিশুরা এ বিষয়ে অনেক অবুঝ। এমন পরিস্থিতিতে নিজের সন্তানকে বাইরে বেরোতে দেওয়াই ঝুঁকিপূর্ণ।
আরও পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে চূড়ান্ত তথ্য দিলেন ওবায়দুল কাদের
এর আগে গত সোমবার (১৭ আগস্ট) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ কালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেছেন, উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) এবং জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। যখনই সিদ্ধান্ত হবে তা সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হবে। আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলছে কিনা তা ২৫ আগস্টের পর জানানো হবে।
সচিব আরো বলেন, শিক্ষামন্ত্রী সুস্পষ্টভাবে বলেছেন আমরা যখনই পরীক্ষা নেব, দুই সপ্তহের নোটিশ দিয়ে সবাইকে জানাবো। পরীক্ষার তারিখ ঠিক করে আমরা প্রকাশ্যে জানাবো। আমাদের তরফ থেকে সব সময় আমরা প্রস্তুত, আগেও প্রস্তুতি ছিল। করোনা পরিস্থিতির কারণে বিশেষ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি যে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে প্রয়োজনে কেন্দ্র সংখ্যা বাড়িয়ে যাতে পরীক্ষা নেওয়া যায়। যখনই আমরা তারিখ ঠিক করবো, তাতে স্বাস্থ্যবিধি যেন যথাযথ অনুসরণ করতে পারি, সেটি আমরা নিশ্চিত করবো।
নভেম্বরে আসন্ন জেএসসি পরীক্ষা নিয়ে সচিব বলেন, শুধু জেএসসি না, অন্যান্য পরীক্ষার ব্যাপারে আমাদের বিশেষজ্ঞারা যে পরামর্শ দিয়েছেন সেগুলো পর্যালোচনা করে আমরা উপযুক্ত সময়ে ঘোষণা করবো আমরা কী করতে যাচ্ছি। আমরা যখনই পরিপূর্ণভাবে সিদ্ধান্ত নেব, তখনই আপনাদের জানাবো।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে মাহবুব হোসেন বলেন, আমরা কাছাকাছি সময়ে যেয়ে তখন আমরা সিদ্ধান্ত ঘোষণা করি। ২৫ তারিখের পরে আমরা এক সময় ঘোষণা করবো। পর্যায়ক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুল খোলা হবে না কী- প্রশ্নে তিনি বলেন, যখনই আমরা ক্লিয়ারেন্স পাবো তখনই জানাবো।
গত ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা রয়েছে।
সোনালীনিউজ/এএস
আপনার মতামত লিখুন :