• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

‘বর্ণিকে পেতে এসআই আকরামকে হত্যা করে বাবুল’


ঝিনাইদহ প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৭, ১০:৫৪ এএম
‘বর্ণিকে পেতে এসআই আকরামকে হত্যা করে বাবুল’

সাবেক এসপি বাবুল আক্তার

ঝিনাইদহ: কথিত প্রেমিকা বনানী বিনতে বসির বর্ণিকে কাছে পেতে তার স্বামী পুলিশের বিশেষ শাখার এসআই আকরাম হোসেনকে হত্যা করেছিলেন সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার। এমন একটি অভিযোগ তুলেছেন এসআই আকরামের পরিবার।

শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন এসআই আকরামের পাঁচ বোন। এ সময় লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন তার সেজো বোন জান্নাত আরা পারভীন রিনি।

আকরামের স্ত্রী ঝিনাইদহের মেয়ে বনানী বিনতে বসির বর্ণির সঙ্গে বাবুলের সঙ্গে পরকিয়া সম্পর্ক ছিল বলে দাবি করেন রিনি।

অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘খুলনায় বাবুল আক্তারের বাবা পুলিশে ও বর্ণির বাবা বিআরডিবিতে চাকরি করতেন। থাকতেন পাশাপাশি বাসায়। সেই সুবাদে বাবুল-বর্ণির মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়। কিন্তু ২০০৫ সালের ১৩ জানুয়ারি আকরামের সাথে বিয়ে হয় বর্ণির। অন্যদিকে পারিবারিকভাবে মিতুকে বিয়ে করেন বাবুল। কিন্তু বিয়ের পরও বাবুল আর বর্ণির মধ্যে যোগাযোগ ছিল। এরই মাঝে আকরামের একটি সন্তান হয়। সন্তান জন্মকালে বর্ণি যখন হাসপাতালে ছিলেন তখন প্রায় দিনই এসপি বাবুল আক্তার হাসপাতালে আসতেন। হাসপাতাল থেকে রিলিজ করার পর বর্ণিকে বাবুল আক্তারের বোন লাবনীর বাসায় নিয়ে তোলা হয়। বিভিন্ন সময় বর্ণির সাথে যোগাযোগ করতেন বাবুল আক্তার। এসআই আকরাম বিদেশে মিশনে থাকা অবস্থায় ঘন্টার পর ঘন্টা বাবুল আক্তারের সাথে কথা বলতো বর্ণি।’

সংবাদ সম্মেলনে জান্নাত আরা পারভীন রিনি

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়- ‘২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর আকরামকে যমুনা সেতু হয়ে ঢাকা আসার পরামর্শ দেয় বর্ণি। একই সাথে বাবুলের সঙ্গে কুটকৌশল করে পথে সন্ত্রাসী দিয়ে আকরামকে হত্যা করে তারা। পরে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার বড়দাহ নামক স্থানে মহাসড়কে মুমূর্ষু অবস্থায় আকরামকে উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকে তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আকরামের শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে প্রথমে ফরিদপুর ও পরে ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়।’

রিনি অভিযোগ করে আরো বলেন, ‘আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকাকালে আকরামের অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল। কিন্তু বর্ণি স্যুপের সাথে বিষ মিশিয়ে আকরামকে খাওয়ায়। এরপর ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি আকরাম মারা যান। সেখান থেকে ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার স্ত্রী বর্ণি আকরামের লাশ গ্রহণ করে। তখন পুলিশ ঘটনাটিকে সড়ক দুর্ঘটনা বলে চালানোর চেষ্টা করে। লাশ ঝিনাইদহে আনার সময় বন্নী না আসার জন্য নানা প্রকার ভনিতা করে। পরে ঝিনাইদহে এনে দাফন করা হয়। বর্ণির বাবা একমাত্র জামাইয়ের জানাজায় অংশ না নিয়ে বর্ণিসহ পরিবারের অন্যদের নিয়ে বাবুল আক্তারের মাগুরার বাড়িতে গিয়ে ওঠেন।’ 

সাংবাদিক সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, ময়নাতদন্তের সময় চিকিৎসকরা বলেছিলেন আকরামের মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তখনই সন্দেহ হয় এটি হত্যা। কিন্তু ওই ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। এছাড়া তৎকালীন পুলিশ সুপারের নিকট অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি তারা।
পরবর্তীতে বাবুল আক্তার, বর্ণি ও তার ফুফাতো ভাই সাদিমুল ইসলাম মুনকে আসামী করে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। পরে লাশ পুনরায় তুলে ময়না তদন্ত করা হয়। যে রিপোর্ট প্রভাবিত করে বাবুল আক্তার। সাংবাদিক সম্মেলনে ভাই হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন বনেরা।

প্রসঙ্গত, গত ৩০ জানুয়ারি বাবুল আক্তারের শ্বশুর মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে দেখা করে বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে প্রথমে বর্ণির সঙ্গে পরকিয়ার অভিযোগ তোলেন জান্নাত আরা পারভীন রিনি।

এদিকে, গণমাধ্যমে বাবুল আক্তার ও বর্ণিকে জড়িয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে গত ৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে মাগুরা প্রেস ক্লাবে আসেন বর্ণি। তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি দাবি করেন, মূলতঃ শ্বশুর বাড়িসহ অন্যান্য জায়গায় তার প্রাপ্য সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতেই তার ননদরা এ ধরণের কল্প-কাহিনীর আশ্রয় নিচ্ছেন।

সোনালীনিউজ ডটকম/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!