• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

শততম টেস্টকে স্মরণীয় করে রাখতে চায় বাংলাদেশ


ক্রীড়া ডেস্ক মার্চ ১৪, ২০১৭, ০১:৩৪ পিএম
শততম টেস্টকে স্মরণীয় করে রাখতে চায় বাংলাদেশ

ঢাকা : শততম টেস্টের দুয়ারে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে ২০০০ সালের ১০ ডিসেম্বরে ম্যাচ দিয়ে টেস্ট আঙ্গিনায় পথ চলা শুরু বাংলাদেশের। এরপর গেল ১৭ বছরে ৯৯টি টেস্ট খেলেছে টাইগাররা। তাই আর একটি টেস্ট খেললেই শততম ম্যাচ খেলার মাইলফলক অর্জন করবে বাংলাদেশ। সেই মাইলফলকে বুধবার (১৫ মার্চ) পা রাখতে যাচ্ছে টাইগাররা। কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টটি হবে বাংলাদেশের শততম ম্যাচ।

ওয়ানডে ক্রিকেটে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ ভাল করলেও টেস্ট ক্রিকেটে এখনো নিজেদেরকে ঠিকমত মেলে ধরতে পারেনি টাইগাররা। ক্রিকেটের দীর্ঘ সংস্করণে এখনো তুলনামূলক দুর্বল হিসেবেই পরিচিত দলটি চলমান শ্রীলঙ্কা সফরেই নিজেদের শততম টেস্ট খেলতে যাচ্ছে। স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শুরু হতে যাওয়া মাইলফলক স্পর্শ করা ম্যাচে জয় দিয়ে পরাজয়ের বৃত্ত থেকে বেড়িয়ে আসতে চায় মুশফিকুর রহমানের নেতৃত্বাধীন টাইগাররা।

তাই শততম টেস্টটি স্মরণীয় করে রাখার ইচ্ছা পোষণ করেছেন বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশও। আজ কলম্বোতে অনুশীলন শেষে ওয়ালশ বলেন, ‘শততম টেস্ট বাংলাদেশের ক্রিকেটে স্মরণীয় একটা ঘটনা, বড় অর্জন। একটা উৎসব মুখর পরিবেশ। সবচেয়ে বড় কথা এটা একটা মাইলফলক। এই টেস্টকে স্মরণীয় করে রাখার চিন্তা আমাদের মাথায়ও আছে। সে কারণেই আগে আমরা চেষ্টা করছি কন্ডিশনের সঙ্গে উপযোগী একাদশ সাজাতে। আমরা চেষ্টা করবো পি সারা স্টেডিয়ামের উইকেটের সঙ্গে মিল রেখে টিম কম্বিনেশন গড়তে।’

প্রথম টেস্টে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় হারের স্বাদ পায় বাংলাদেশ। ব্যাটসম্যানদের পাশাপাশি ব্যর্থ বোলাররাও। অভিজ্ঞতার কারণেই এমনটা হয়েছে বলে মনে করেন পেস বোলিং কোচ ওয়ালশ, ‘আমাদের পেসারদের প্রায় সবাই তরুণ ও অনভিজ্ঞ। এর বাইরে তাদের আরও একটা সমস্যা আছে। তারা ধারাবাহিকভাবে দীর্ঘ সময় লম্বা স্পেলে ভালো জায়গায় বল করতে পারে না। এর কারণ অভিজ্ঞতায় ঘাটতি। যত বেশি খেলবে তত অভিজ্ঞতা বাড়বে। আর অভিজ্ঞতা বাড়ার সঙ্গে তত এ ঘাটতি কেটে যাবে।’

গলের মত কলম্বোতেও অনেক গরম। পাঁচ মিনিট খোলা আকাশে দাঁড়িয়ে থাকলে ঘেমে শরীর নেয়ে উঠে। তার মধ্যে মধ্যে পেসারদের ভালো করা কঠিন। এ সম্পর্কে পেস বোলিং কোচের মতামত, ‘কন্ডিশনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতেই হবে। যত গরমই পরুক না কেন এর সঙ্গে মানাতে হবে। তবে আমার ধারণা গলে প্রচণ্ড গরমে পাঁচ দিন খেলার পর কিছুটা ধাতস্থ হয়ে গেছে পেসাররা। গরমে খুব একটা অসুবিধা হবে বলে মনে হয় না।’

চলমান সফরে প্রথম টেস্টে ২৫৯ রানে পরাজিত হয় দলটি। যা কিনা তাদের ৭৬তম ও এক নাগারে চতুর্থ পরাজয়।

টেস্ট খেলুড়ে কোন দেশই এখন পর্যন্ত নিজেদের প্রথম একশ’ ম্যাচে এত বেশি পরাজয়ের স্বাদ পায়নি। বলতে গেলে গত ১৭ বছর যাবতই দীর্ঘ সংস্করণে ধুকছে বাংলাদেশ। অবশ্য নিজেদের প্রথম একশ’ ম্যাচে জয়ের ক্ষেত্রে সবার নিচে রয়েছে নিউজিল্যান্ড। কিউইরা নিজেদের প্রথম একশ’ ম্যাচে জয় পেয়েছে সাতটিতে। পক্ষান্তরে বাংলাদেশ জিতেছে আটটিতে। তবে নিউজিল্যান্ড ড্র করেছে ৪৭টি, বাংলাদেশ করেছে ১৫টি।

বাংলাদেশের আট জয়ের পাঁচটিই এসেছে নিজ মাঠে দুবর্ল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। টাইগাররা বিদেশের মাটিতে ৪৬ ম্যাচের অন্য তিনটি জয়ের মধ্যে দু’টি এসেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও একটি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। টাইগাররা ২০০১-২০০৪ সালের মধ্যে এক নাগারে ২১ ম্যাচে হেরেছে। যে রেকর্ড অন্য কোন দলের নেই। তবে সম্প্রতি নিজ মাঠে প্রথম ম্যাচে পরাজয় সত্ত্বেও দ্বিতীয়টিতে জয়ী হয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয় করেছে বাংলাদেশ। যা এ যাবত কালে নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

কোচ চন্ডিকা হাতুরুসিংহে গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সঠিক কাজটিই করছি যে কারণে সব ম্যাচেই আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে সক্ষম হচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘আপনার প্রত্যাশা বেশি কেন? কারণ আপনি ভাল করছেন, আমি ঠিক বলছি কিনা?’

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) মুখপাত্র জালাল ইউনুস বলেন, ‘সব কিছুই আমরা স্বাভাবিক রাখতে চেষ্টা করছি। তবে শততম টেস্ট হওয়ায় অবশ্যই এটা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণও বটে।’

 তবে, শততম টেস্টে ভাল করতে শুধু বোলিং নয়, ব্যাটিংয়েও জোর দিতে হবে বাংলাদেশকে- এমন কথা বললেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান লিটন দাস, ‘বোলারদের সমান দায়িত্ব থাকলেও টিম বাংলাদেশের ভাগ্য নির্ভর করে ব্যাটসম্যানদের উপর। তাই পিসারায় শততম টেস্টে ব্যাটিংয়ে ভালো করায় মনযোগী আমরা।’

কলম্বোতে ভাল করতে বড় ইনিংস খেলার কোনো বিকল্প নেই বলেই জানালেন লিটন। তিনি বলেন, ‘গলে প্রথম ইনিংসে ৫০০ রান করা উচিত ছিল। উইকেট তেমনই ছিল। একইভাবে দ্বিতীয় ইনিংসেও সাড়ে ৩৫০ থেকে ৩৬০/৩৭০ রান করার মতো কন্ডিশন ছিল; কিন্তু আমরা পারিনি। চেষ্টা থাকবে শততম টেস্টকে স্মরণীয় করে রাখার।’

ভারতের বিপক্ষে ২০০০ সালে বাংলাদেশের উদ্বোধনী টেস্ট খেলা সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার বলেন, সাবেক ইংল্যান্ড খেলোয়াড় জিওফ্রে বয়কটসহ অন্য সমালোচনাকারীদের ভুল প্রমাণ করতে দলকে অবশ্যই আরো বেশি বেশি ম্যাচ জিততে হবে। তিনি আরো বলেন, ‘শততম টেস্ট উদযাপনে সবচেয়ে ভাল উপায় হচ্ছে এই ম্যাচে জয়ী হওয়া। অন্য অনেক দিক থেকেও এই ম্যাচে বাংলাদেশের জয় দরকার। সীমিতি ওভারের ক্রিকেটে আমরা এখন একটি শক্তিশালী দল। তবে আমাদের টেস্ট ম্যাচ জয়ের যোগ্যতারও প্রমাণ দিতে হবে।’
 
সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!