• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

কারাগারে যেভাবে দিন কাটছে সেই ঐশীর


গাজীপুর প্রতিনিধি মে ১৫, ২০২১, ০৯:১৩ পিএম
কারাগারে যেভাবে দিন কাটছে সেই ঐশীর

গাজীপুর: বাবা-মা’কে খুন করার অভিযোগে দণ্ডপ্রাপ্ত ঐশী রহমান এখন ধর্মীয় বিধিনিষেধের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। ২০১৩ সালে রাজধানীর চামেলীবাগে নিজ বাসায় খুন হন পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের পলিটিকাল শাখার পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান। বাবা-মা’কে খুনের দায়ে আদালতে যাবজ্জীবন দণ্ড পাওয়া ঐশী এখন গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কারাগারে বন্দি। কারা প্রকোষ্ঠে কীভাবে তার একাকী সময় কাটছে সে বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ নানা ধরনের তথ্য দিয়েছেন।

কারা কর্তৃপক্ষের ভাষ্যমতে, ঐশী পবিত্র রমজান মাসে নিয়মিত রোজা রেখেছেন ও নামাজ পড়ে দিন পার করেছেন। বিভিন্ন ধরনের বইপত্র পড়ে সময় কাটান এ বন্দি তরুণী। কিছুদিন আগে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী গ্রন্থ ‘কারাগারের রোজনামচা’ পড়তেও দেখা গেছে তাকে।

কাশিমপুর মহিলা কারাগারের জেলার হোসনে আরা বীথি জানান, কারাগারে ভালোই আছে ঐশী। নামাজ-কালাম পড়ে সময় কাটে তার। এছাড়া সে কিছু বইপত্র পড়ে। কিছুদিন আগে ‘কারাগারের রোজনামচা’ বইটি পড়তে দেখেছেন তিনি।

নেশাসক্ত অবস্থায় ঐশী তার বাবা-মাকে হত্যা করে বলে জানা গিয়েছিল। কফির সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে এবং পরে কুপিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটায় সে। নির্বিবাদে নেশা করার জন্যই সে বাবা-মা হত্যার মতো জঘন্য ঘটনা খুব সহজেই ঘটাতে সক্ষম হয়। সেই নেশা এখন আর ঐশীর মধ্যে নেই। কারাগারে যাওয়ার পর থেকে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন তিনি। তবে সে এখন অনেক চুপচাপ থাকে।

জেলার আরও বলেন, করোনাকালীন পরিবারের কেউ তাঁর খোঁজখবর নিতে আসেনি। এসময়ে সাক্ষাৎ একেবারেই বন্ধ। ঈদের দিনে আমাদের কারাগারের বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা থাকে। ঈদের দিন সকালে সেমাই খেতে দেওয়া হয়েছিলো। এছাড়া দুপুরে ছিল গরুর গোশত, পোলাও আর সালাদ। রাতে ছিলো রুই মাছ, ভাত সবজি। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েদীদের নতুন পোশাকও দেওয়া হয়েছিলো। কারাগারে বসে কেউ চাইলে তিন মিনিট তার পরিবারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথাও বলতে পারে। ঐশীও চাইলে সেই সুযোগটি নিতে পারে বলে জানান জেলার হোসনে আরা।

প্রসঙ্গত, বাবা-মাকে হত্যার দায়ে ২০১৫ সালে ঐশীকে ফাঁসির আদেশ দেয় বিচারিক আদালত। পরে আপিলে ২০১৭ সালের ৬ জুন উচ্চ আদালত ঐশীর সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন করে। সেই থেকে ঐশী স্থায়ীভাবে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে আছেন। এর আগে ২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট সকালে রাজধানীর চামেলীবাগের বাসা থেকে পুলিশ পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগেই ঐশী বাসা থেকে পালিয়ে যায়।

পরদিন ১৭ আগস্ট মাহফুজুর রহমানের ভাই মশিউর রহমান এ ঘটনায় পল্টন থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই দিনই ঐশী পল্টন থানায় আত্মসমর্পণ করে তার বাবা-মাকে খুন করার কথা জানায়।

২০১৩ সালের ২৪ আগস্ট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন ঐশী। পরে ওই জবানবন্দি প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করেছিল। কিন্তু সাক্ষ্য, আলামত ও অন্যান্য যুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে তা নাকচ হয়ে যায়।

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School
Link copied!