• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সিলেটে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগ, বেশি আক্রান্ত শিশু-বয়োজ্যেষ্ঠরা 


সিলেট ব্যুরো: জানুয়ারি ৭, ২০২৩, ০৯:২২ পিএম
সিলেটে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগ, বেশি আক্রান্ত শিশু-বয়োজ্যেষ্ঠরা 

সিলেট: সিলেটে তীব্র শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন। দুপুর পর্যন্ত মিলে না সূর্যের দেখা। দিনের কিছু সময় সূর্য মাঝ আকাশে উকি দিলেও, বিকেল থেকে শুরু হয় ঠান্ডা বাতাস ও ঘন কুয়াশা। ফলে বিকেল থেকেই নগর কিংবা আশপাশের এলাকায় গাড়ি চলাচল করতে হয় লাইট জ্বালিয়ে।

শৈত্যপ্রবাহ ও ঘনকুয়াশার কারণে বিপাকে পড়েছেন হাওরাঞ্চল ঘেরা সুনামগঞ্জ ও পাহাড়, টিলা সমৃদ্ধ মৌলভীবাজার এবং হবিগঞ্জের জনসাধারণ। আগামী ১০ দিন এভাবেই চলবে। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে থাকবে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। এমন তথ্য জানিয়েছে সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তর।

বৃহস্পতিবার রাতে ও শুক্রবার সকালে সিলেট নগরী ও আশপাশ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঘন কুয়াশার কারণে সিলেট নগরীতে হেডলাইট ও পার্কিং লাইট জ্বালিয়ে ধীর গতিতে চলাচল করছে যানবাহন। শীত থেকে কিছুটা রক্ষা পেতে রাস্থার পাশে আগুন জ্বালিয়ে লোকজন আগুন পোহাচ্ছেন। অনেকেই শীতের অতিরিক্ত গরম কাপড় পড়ে চলাচল করছেন। এছাড়া তীব্র শীতের কারণে ক্বীন ব্রীজের উত্তর ও দক্ষিণ পারের বস্তিবাসি এবং নগরীর বিভিন্ন এলাকার বস্তিবাসিরা পড়েছেন চরম বিপাকে, তারা একটু ঠান্ডা থেকে বাঁচতে গরম কাপড়ের জন্য অপেক্ষা করছেন বিভিন্ন সেবামূলক ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানের এমনই কথা জানিয়েছেন বস্তিবাসীরা। তারা আরও জানান, তীব্র শীতের কারণে অনেকেই ভুগছেন নানা ধরণের ঠান্ডা জনিত রোগে। এছাড়া শীতের তীব্রতার কারণে বস্তিতে থাকা শিশুদের মধ্যে দেখা দিয়েছে জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়াসহ নানা ধরণের রোগ বালাই।

সিলেটের মালনী ছড়া চা বাগানের শ্রমিকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, দুদিন ধরে কুয়াশা না থাকলেও মেঘলা পরিবেশ। সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয় ঠাণ্ডা বাতাস। এ বাতাসের কারণে শীতের মাত্রা বেড়ে যায়। রাতে মনে হয় তাপমাত্রা শূন্যতে চলে আসে। অতিরক্ত শীতের কারণে অনেকেই কাজেও যাচ্ছেন না।

সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং একাধিক প্রাইভেট ক্লিনিকের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শীতের প্রকোপে বেড়েছে নানা ধরনের শীতজনিত রোগ। জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগ নিয়ে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। এক্ষেত্রে শিশুদের সংখ্যা বেশি।

সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন এণ্ড টক্সিকোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারি অধ্যাপক ডা. শামসুল ইসলাম জানান, শীত মৌসুমে আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় বাতাসে জীবানুর পরিমাণ বেড়ে যায়। শীতজনিত রোগ হিসেবে সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট বেশি হয়ে থাকে। আর শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা শীতজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। তাই এসময়টাতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে পারলে কিছুটা হলেও সুরক্ষা মিলবে।

সিলেটে আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, সিলেটে আগামী ৯ থেকে ১০ দিনে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রির নিচে নামার আশঙ্কা কম। এ সময়ের মধ্যে ঘন কুয়াশা থাকলেও তাপমাত্রা কমবে না।

তিনি আরও বলেন, কুয়াশা থাকায় শীতের অনুভূতি বেশি থাকলেও তাপমাত্রা বাড়বে। দেরিতে হলেও আকাশে সূর্যের দেখা মিলবে।

এদিকে-শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। পূর্বাভাসে বলা হয়, মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। এটি দেশের কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এ ছাড়া সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। সেইসঙ্গে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। দিন ও রাতে তাপমাত্রার পার্থক্য কমে যাওয়ায় দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে মাঝারি থেকে তীব্র শীত পড়তে পারে। আরও বলা হয়, উপমহাদেশীয় উচ্চ চাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

সোনালীনিউজ/আইএ

Wordbridge School
Link copied!