• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভোলায় আরও দুই নতুন স্পটে গ্যাসের সন্ধান


ভোলা প্রতিনিধি মে ৩১, ২০২৩, ০৯:৩৩ এএম
ভোলায় আরও দুই নতুন স্পটে গ্যাসের সন্ধান

ভোলা: একের পর এক গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়ে আসছে ভোলায়। ভূ-তাত্ত্বিক জরিপে দ্বীপ জেলাটিতে আরও দুটি নতুন স্পটে গ্যাসের সন্ধান মিলেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স) কর্মকর্তারা। তবে এ বিষয়ে এখনই কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিচ্ছে না রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস অনুসন্ধান সংস্থাটি।

ভোলায় সর্বশেষ গত ২২ মে আরও একটির নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের ঘোষণা দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। নতুন গ্যাসক্ষেত্রটি আবিষ্কার করে বাপেক্স। ভোলার ইলিশা-১ নামে নতুন কূপটি দেশের ২৯তম গ্যাসক্ষেত্র, আর ভোলার তৃতীয়।

ভোলায় এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত তিনটি গ্যাসক্ষেত্র থেকে ৯টি কূপ খনন হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে মোট গ্যাস মজুদের পরিমাণ ৭ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। এ মজুদ আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করছে বাপেক্সের ভূ-তাত্ত্বিক বিভাগ।

এ বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, ভূ-তাত্ত্বিক জরিপে দ্বীপজেলা ভোলায় আরও দুটি নতুন স্পটে গ্যাসের সন্ধান মিলেছে। ওই সব স্পটে আরও অনুসন্ধান করা হবে এবং খুব শিগগির কূপ খনন করা হবে। নতুন স্পটগুলোতে গ্যাসের বিস্তৃত বেশি থাকায় সেগুলো কূপ নয়, বরং আলাদা গ্যাসক্ষেত্র হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে এখনই কোনো ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে না। বাপেক্সের সম্ভাব্য ধারণা, ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা এবং বোরহানউদ্দিন উপজেলার বোরহানগঞ্জ বাজারের আশপাশে এ গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হবে। কবে নাগাদ ঘোষণা বা কূপ খননের সিদ্ধান্ত আসবে তা নিশ্চিত করেনি

বাপেক্স। তবে তাদের তথ্য সূত্রে আভাস পাওয়া যাচ্ছে, সব কিছু ঠিক থাকলে কূপ খননের পরই ঘোষণা আসবে। আর খননে ফলাফল ইতিবাচক হলে দেশের ৩০ এবং ৩১তম গ্যাসক্ষেত্রও হতে পারে দ্বীপ জেলা ভোলাতেই।

বাপেক্সের ভূ-তাত্ত্বিক বিভাগের ব্যবস্থাপক মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ইলিশা-১, ভোলা নর্থ এবং শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্রে আপাতত নতুন আরও পাঁচটি কূপ খননের অনুমোদন হয়ে গেছে। সেগুলো খুব শিগগির খনন করবে বাপেক্স। এরপরই নতুন যেসব পয়েন্ট গ্যাসের সন্ধান মিলেছে সেগুলো নিয়ে চিন্তা করা হবে।

মো. আলমগীর হোসেন আরও বলেন, নতুন আরও দুটি গ্যাসক্ষেত্র ভোলাতেই হতে পারে। যেটি এখন চূড়ান্ত জরিপ ও বিশ্লেষণের অপেক্ষায়। আমাদের স্থান নির্ধারণ হয়ে গেছে।

জানা যায়, ভোলায় ১৯৯৪-৯৫ সালে শাহবাজপুরে, ২০১৮ সালে ভোলা নর্থ এবং চলতি বছর ইলিশা-১ গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার হয়। তবে সে তুলনায় জেলায় উল্লেখযোগ্য গ্যাসভিত্তিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। বাসাবাড়িতেও গ্যাসের সংযোগ পাননি ভোলার বেশির ভাগ মানুষ। জেলাবাসী মনে করে, গ্যাসভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠান হলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি কর্মসংস্থান হবে বেকার যুবকদের। কিন্তু এসবের কিছুই বাস্তবায়ন না হওয়ায় ক্ষুব্ধ ভোলার মানুষ। এরই মধ্য পৌরবাসীকে নিয়ে মাবববন্ধন করেছেন ভোলা পৌর মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান। তিনি দাবি তুলেছেন, ভোলার ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার।

এদিকে বাপেক্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলী সম্প্রতি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, দক্ষিণাঞ্চলের জেলা ভোলায় বিপুল পরিমাণ খনিজ সম্পদ রয়েছে। আর তাই এ জেলাসহ ১২ জেলায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান করবে বাপেক্স। সেটি এখন সময়ে অপেক্ষা। তাদের আশা, নতুন করে সন্ধান মিলবে গ্যাসের।

বাপেক্সের একাধিক সূত্রে জানা যায়, ভোলার ৯টি কূপের মধ্যে এখন পর্যন্ত পাঁচটি থেকে প্রতিদিন গড়ে ৬০ থেকে ৮০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে, যা তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে সরবরাহ হচ্ছে। বাকি চারটি কূপ অব্যবহৃত রয়েছে। এ মুহূর্তে গ্যাস উত্তোলনের সক্ষমতা ১০০ থেকে ১৮০ মিলিয়ন ঘনফুট। 

সোনালীনিউজ/এম

Wordbridge School
Link copied!