• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
ইউএনও অবরুদ্ধ ৬ ঘণ্টা

বুড়িমারী স্থলবন্দরে শ্রমিক ও সর্দার দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১৫ 


পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি  সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৩, ০৯:২২ এএম
বুড়িমারী স্থলবন্দরে শ্রমিক ও সর্দার দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১৫ 

পাটগ্রাম: লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দরে মজুরীর টাকা না দেওয়া ও সাধারণ শ্রমিকদেরকে কাজের সিরিয়াল দেওয়াকে কেন্দ্র করে সাধারণ শ্রমিক ও সর্দার গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন শ্রমিক আহত হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঘটনাস্থলে গেলে শ্রমিকেরা তাঁকে প্রায় ৬ ঘন্টা ধরে অবরুদ্ধ করে রাখে।  
শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বুড়িমারী স্থলবন্দরের লোড-আনলোড কাজের সাধারণ শ্রমিকেরা দীর্ঘদিন যাবত ২৩ জন সর্দারদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ, অনিয়ম ও তাঁদের নায্য মজুরী থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ করছেন। সর্দারেরা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।

গত সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) সর্দার ও লেবার হ্যান্ডেলিং ঠিকাদার শ্রমিকদেরকে মজুরীর টাকা পরিশোধ না করায় ওইদিন বুড়িমারী স্থলবন্দরের তিনটি শ্রমিকলীগের ব্যানারে অধিকাংশ শ্রমিক লোড-আনলোড কাজ বন্ধ রাখে। এ বিষয় জেনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুল ইসলাম, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ ও বুড়িমারী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান তাহাজুল ইসলাম মিঠু, শ্রমিক হ্যান্ডেলিং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি নজরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের সাথে কথা বলেন। এ সময় তাঁরা আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর মজুরীর টাকা পরিশোধ করবেন বলে আশ্বাস দেন। পরেরদিন মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) শ্রমিকদেরকে বুড়িমারী স্থলবন্দর শ্রমিকলীগের সদস্যরা কাজের সিরিয়াল দিতে গিয়ে সর্দার গ্রুপের লোকজনেরা বাধা দেয়। এ সময় উভয় গ্রুপের মধ্যে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি শান্ত করতে বেলা ১২ টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) ফরহাদ ইমরুল কায়েস ও পাটগ্রাম থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ ঘটনাস্থলে যান। এ সময় শ্রমিক ও সর্দারদের সৃষ্ট বিষয় নিয়ে সাধারণ শ্রমিকদের সাথে কথা বলার সময় উভয় গ্রæপ উত্তেজিত হয়ে ওঠে। এ সময় বুড়িমারী স্থলবন্দর-ঢাকা মহসড়ক অবরোধ করে রাখে শ্রমিক ও সর্দারের লোকজনেরা। এতে ভারত-বাংলাদেশের শত শত পণ্যবাহী গাড়ি আটকে পড়ে। পাসপোর্টধারী যাত্রীরা চরম বিপাকে পরে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে উভয়  গ্রুপের অন্তত ১৫ জন আহত হয়। আহতরা হলো- আসাদুজ্জামান, বাবুল, জামিয়াল, নুরনবী, হাসানুর, আলী হোসেন, সুমন, বুলেট, লিটন, মনিজুল, আলীয়ার, শরিফুদ্দিন, মালেকুল ও মানিক। এ সময় খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে এশিয়ান টিভির পাটগ্রাম প্রতিনিধি এম এ কামাল আহত হন। গুরুত্বর আহত লিটন, নুরনবী, আলী হোসেন, আলীয়ারকে রংপুরে পাঠানো হয়েছে।

ঘটনার সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুল ইসলাম বুড়িমারী স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কার্যালয়ে অবস্থান করলে উত্তেজিত শ্রমিকেরা তাঁকে প্রায় ৬ ঘন্টা ধরে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্থলবন্দরের মহাসড়কে অতিরিক্ত পুলিশ ও ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সদস্যদেরকে মোতায়েন করা হয়। পরে সন্ধায় শ্রমিক, সর্দার ও লেবার হ্যান্ডেলিং ঠিকাদারের প্রতিনিধিকে নিয়ে আলোচনা করা হয়। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সমস্যা সমাধানে বৈঠকের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। সন্ধার ৭ টার পর যানবাহন ও পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এমএস

Wordbridge School
Link copied!