• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
বিবস্ত্র করে নির্যাতন

ইবির দুই ছাত্রীকে ক্যাম্পাস ছাড়ার নির্দেশ হাইকোর্টের


আদালত প্রতিবেদক  ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৩, ০১:১০ পিএম
ইবির দুই ছাত্রীকে ক্যাম্পাস ছাড়ার নির্দেশ হাইকোর্টের

ঢাকা: র‌্যাগিংয়ের নামে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণে অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একইসঙ্গে নির্যাতনের ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এক রিট আবেদনের শুনানি করে বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এমন আদেশ দেন। রিটটি সংশ্লিষ্ট হাইকোর্ট বেঞ্চের কার্যতালিকায় ১২ নম্বর ক্রমিকে ছিল।

এর আগে বুধবার দুপুরে জনস্বার্থে রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী গাজী মো. মোহসীন।

ইবি শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনায় ইতোমধ্যে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এইচ. এম. আলী হাসানের স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক রেবা মণ্ডলকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা, খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন আরা সাথী, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি প্রক্টোর অধ্যাপক মুর্শিদ খান, একাডেমি শাখার উপ-রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) মো. আলীবদ্দীন খান। কমিটিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। 

গত ১১ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হলের গণরুমে ডেকে নিয়ে ওই ছাত্রীকে নির্যাতন করা হয়।

নির্যাতনকারী ছাত্রলীগ নেত্রীর নাম সানজিদা চৌধুরী অন্তরা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তার সহযোগী তাবাসসুম ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী ছাত্রীও একই বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

গত মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন নির্যাতনের শিকার ছাত্রী।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী তাবাসসুম রাত ৮টায় ভুক্তভোগী ছাত্রীকে প্রজাপতি-২ রুমে যেতে বলেন। অসুস্থ থাকায় সেদিন তিনি যেতে পারেননি। এরপর ভুক্তভোগী ছাত্রীকে হল থেকে নামিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন তাবাসসুম। ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে প্রথম দফায় র‍্যাগিং করে তাকে হল থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তবে হলের প্রভোস্টের সহযোগিতায় তখন সেটা সম্ভব হয়নি।

পরদিন রোববার ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ ৭-৮ জন মিলে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে গণরুমে ডেকে নিয়ে মারধর করেন। এ সময় তাকে এলোপাথাড়ি চড়-থাপ্পড় মারা হয় এবং মুখ চেপে ধরে গালিগালাজ করা হয়। এমনকি তাকে ময়লা গ্লাস মুখ দিয়ে পরিষ্কার করতে বলেন সানজিদা। পরে ওই ছাত্রীকে জামা খুলতে বলেন অভিযুক্তরা। জামা না খুললে পুনরায় মারতে থাকেন তাকে। এরপর জোর করে তাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করা হয়। ওই ভিডিও সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকি দেন তারা। এ ঘটনা কাউকে বললে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয় ভুক্তভোগীকে।

ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, আমাকে গণরুমে ডেকে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করেছে। আমার শরীরে এখনও ব্যথা করছে। জীবন বাঁচাতে পরদিন সোমবার ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে আসি। আমি অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েই র‍্যাগিংয়ের অনুমতি নেই। আমি নীতিগতভাবে এটা কখনো সমর্থন করি না। আমি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বসে বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

সোনালীনিউজ/এম

Wordbridge School
Link copied!