• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

তাপপ্রবাহ: আসছে আরও ৩ দিনের সতর্কবার্তা


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ২৫, ২০২৪, ১০:১০ এএম
তাপপ্রবাহ: আসছে আরও ৩ দিনের সতর্কবার্তা

ঢাকা: আবহাওয়ার কয়েকদিনের পূর্বাভাসগুলোতে চলমান এ দাবদাহ থেকে দ্রুতই ‍মুক্তি না মেলার কথা আগেই বলা হয়েছিল। জনগণকে সচেতন করতে সতর্ক থাকার পরামর্শও দেওয়া হয়েছিল বিশেষ বার্তায়। 

আগামী কয়েকদিনে আবহাওয়ার আগাম খবরে কোনো সুখবর না থাকায় আরও তিন দিনের সতর্কবার্তা আসতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান।

বুধবার তিনি বলেন, “তাপপ্রবাহ চলে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে তাপমাত্রা একটু ওঠানামা করবে। আগামীকাল আবার আসবে সতর্কবার্তা।”

চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় শনিবার; সেদিন যশোরে তাপমাত্রা উঠেছিল ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ওই দিন ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ওই দিনের পর থেকে থার্মোমিটারের পারদ কিছুটা নিচে নামলেও প্রখর রোদ ও গরম হাওয়ায় প্রকৃতির রুদ্র রোষ থেকে জনজীবনে রেহাই মেলেনি। অতি তীব্র তাপপ্রবাহের মুখে পড়তে না হলেও মৃদু থেকে তীব্র তাপপ্রবাহের কবলের উত্তাপ থেকে রেহাই মেলেনি। বুধবারও দেশের ৫২ জেলার উপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার তথ্য সন্ধ্যার বুলেটিনে দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। 

বুলেটিনে বলা হয়, খুলনা বিভাগসহ দিনাজপুর, নীলফামারী, রাজশাহী, পাবনা, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জের উপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এর বাইরে ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝরি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের বাকি অংশে।

>> বাতাসে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম হলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ ধরা হয়। ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রির কম তাপমাত্রাকে বলা হয় মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রির কম তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। আর তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির উপরে উঠলে তাকে বলা হয় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ। 

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, তাপপ্রবাহ চলতে পারে মে মাসের ৪/৫ তারিখ পর্যন্ত; তবে এ সময়ে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে উঠবে না। 

“তাপমাত্রা আরেকটু বাড়ার সম্ভাবনা আছে, তবে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এর মধ্যে হালকা বৃষ্টি সিলেট, নেত্রকোণা- এসব এলাকায় হতে পারে, অন্য অঞ্চলে হওয়ার সম্ভাবনা নেই।” 

স্বাভাবিক তাপমাত্রার তারতম্য

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সব পর্যবেক্ষণাগারের তথ্য অনুযায়ী, দেশের মাসওয়ারি স্বাভাবিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা জানুয়ারিতে ২৫ দশমিক ২, ফেব্রুয়ারিতে ২৭ দশমিক ৮, মার্চে ৩১ দশমিক ৬, এপ্রিলে ৩৩ দশমিক ২, মে মাসে ৩২ দশমিক ৯, জুনে ৩১ দশমিক ৯, জুলাইয়ে ৩১ দশমিক ১, অগাস্টে ৩১ দশমিক ৪, সেপ্টেম্বরে ৩১ দশমিক ৫, অক্টোবরে ৩১ দশমিক ৫, নভেম্বরে ২৯ দশমিক ৫ এবং ডিসেম্বরে ২৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

২৪ এপ্রিলের দৈনিক স্বাভাবিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হচ্ছে ঢাকায় ৩৩ দশমিক ২, ফরিদপুর ৩৪ দশমিক ৩, রাজশাহীতে ৩৫, মোংলায় ৩৫ দশমিক ১, যেশোরে ৩৬ ও চুয়াডাঙ্গায় ৩৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৩৪ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য)।

২৪ এপ্রিল ঢাকায় ৩৯ দশমিক ২ এবং মোংলায় ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

যা বলছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক
এপ্রিল উষ্ণতম মাস হওয়ায় বরাবরই এ সময়ে দেশের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে উল্লেখ করে অধিদপ্তরের পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, এটা অস্বাভাবিক নয়। এবার টানা দুসপ্তাহ ধরে তাপপ্রবাহ থাকায় ও বৃষ্টিহীন পরিস্থিতি বিরাজ করায় গরমের অনুভূতি বেড়েছে।

“জলীয়বাষ্পের পরিমাণটা বেশি, যে কারণে অস্বস্তি বেশি হচ্ছে। স্বাভাবিক যা থাকার কথা, তার চেয়ে ৪ থেকে ৭ ডিগ্রি বেশি তাপমাত্রা উঠছে বিভিন্ন এলাকায়।”

এই আবহাওয়াবিদ বলেন, “এসময়ে যে কালবৈশাখী ঝড়ো হাওয়া চলার কথা, সেটা চলে গেছে অনেক উপরে-বিশেষ করে চায়না, এসব এলাকায়। এটা যদি বাংলাদেশ বা পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি-এসব বরাবর থাকত তাহলে এদিকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা থাকত। স্কেল উপরে থাকার কারণে এ অঞ্চলটা শুষ্ক হয়ে গেছে।”

গত কয়েকদিনের প্রখর রোদ ও গরম হাওয়ায় দেশজুড়ে তেমন পরিস্থিতিই দেখা গেছে। গরমে কাহিল মানুষ ঘরে ও বাইরে অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। অনেকে অসুস্থও হয়ে যাচ্ছেন অতি গরমে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গরমের মধ্যে ও হিটস্ট্রোকে মৃত্যুর খবরও আসছে।

মঙ্গলবার গুলিস্তানের রাস্তায় হাঁটার সময় প্রচণ্ড গরমে রাস্তায় ঢলে পড়েন এক ব্যক্তি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। ওই ব্যক্তি হিটস্ট্রোকে মারা যেতে পারেন ধারণা পুলিশের।

এআর

Wordbridge School
Link copied!