ঢাকা: নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারের উপর ২৪ ঘণ্টার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ভারতের নির্বাচন কমিশন।
এক বিবৃতিতে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, সোমবার রাত ৮টা থেকে মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত কোনো প্রচারণা করতে পারবেন না তৃণমূল এই নেত্রী।
এদিকে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গান্ধী মূর্তির নিচে ধর্নায় বসার হুমকি দিয়ে মমতা টুইট করেছেন বলে জানায় কলকাতার দৈনিক আনন্দবাজার।
মমতা টুইটে লেখেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের অগণতান্ত্রিক এবং অসাংবিধানিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আমি বেলা ১২টা থেকে কলকাতার গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধর্নায় বসছি।”
গত ৩ এপ্রিল তারকেশ্বরের জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির বিরুদ্ধে বার্তা দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘সংখ্যালঘু ভাই-বোনদের কাছে হাতজোড় করে একটা কথা বলব, বিজেপির টাকা নিয়ে ভোট দেবেন না। ওরা সাম্প্রদায়িক কথা বলে। বিজেপি টাকা নিয়ে বেরিয়েছে যাতে সংখ্যালঘু ভোট ভাগ হয়ে যায়। মনে রাখবেন, বিজেপি আসলে দুর্ভোগ আপনাদের বেশি, এটা মাথায় রাখবেন।’
এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তৃণমূল নেত্রীকে নোটিশ পাঠিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তৃণমূল নেত্রী জানিয়েছেন, ‘ধর্মীয় লাইনে ভোটারদের প্রভাবিত করতে চাইনি। সম্প্রীতির কথাই বলেছি আমি। হিন্দু ভাই-বোনদের বলেছি, হিন্দু-মুসলিম বিভাজন করবেন না। ধর্মীয় উস্কানি দিতে চাইনি।’
মমতার জবাবে সন্তুষ্ট হতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। তাদের বক্তব্য, ভাষণের মূল অংশটি উল্লেখ করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ে মমতার দুটি ভাষণেও প্ররোচনা রয়েছে বলে নোটিশ পাঠায় নির্বাচন কমিশন। একটি ভাষণে মমতা বলেছেন, সিআরপিএফ গন্ডগোল করলে একদল নারী ঘেরাও করবেন। আর একদল ভোট দিতে যাবে। আর একটি ভাষণে তিনি বলেন, ‘মা-বোনদের কাউকে একটাও আঘাত করা হলে হাতা, খুন্তি, ছুরি নিয়ে আক্রমণ করুন। এটা নারীদের অধিকার। ভোট দিতে না দিলে বিদ্রোহ করুন।’
এ বিষয়ে মমতা ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘ঘেরাও মানে ঘিরে ধরা বলতে চাইনি বরং গণতান্ত্রিকভাবে প্রতিবাদের উদ্দেশ্যেই ব্যবহার করেছি। স্বচ্ছ ভোটপ্রক্রিয়ায় বাধা দিলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। এমনকি সিআরপিএফকেও নয়।’
এক্ষেত্রেও নির্বাচন কমিশনের বলেছে, মূল বিষয় এড়িয়ে গিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েও জনপ্রতিনিধিত্ব আইন ও নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন করেছেন। তার বক্তব্য প্ররোচনামূলক এবং আইনশৃঙ্খলায় কুপ্রভাব ফেলতে পারে। এ ধরনের বক্তব্যের নিন্দা করেছে কমিশন। এ ধরনের মন্তব্য থেকে বিরত থাকতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সতর্ক করা হচ্ছে।
তবে মমতাই প্রথম নন, এর আগে নিষিদ্ধ হয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ২০১৯ সালে তাকে ৭২ ঘণ্টার জন্য প্রচারণা থেকে বিরত থাকতে বলেছিল নির্বাচন কমিশন।
সোনালীনিউজ/এমএইচ
আপনার মতামত লিখুন :