কক্সবাজার: ভিক্ষুকদের উৎপাত বেড়েই চলেছে। এদের জন্য শান্তিতে ঘুরতে পারছে না কক্সবাজার ভ্রমণে আসা মানুষগুলো। যেখানে সেখানে এসে টাকা চেয়ে বিরক্ত করছে ঘুরতে আসা মানুষদের।
বুধবার (২৪ নভেম্বর) সকালের থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কক্সবাজারের বিভিন্ন স্পট ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
দুই দিনের ছুটিতে সহকর্মীদের সঙ্গে ঢাকা থেকে প্রথমবার কক্সবাজার এসেছেন আহসান হাবীব সৌরভ। পেশায় তিনি চিকিৎসক। হাতে ছুটি কম থাকায় হোটেলে চেক ইন করেই পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখতে বেরিয়েছেন। প্রথমে গিয়েছেন সমুদ্র সৈকত দর্শনে।
কথা মাঝে সৌরভ বলেন, হোটেলে ঢোকার মুখে ইজিবাইক থেকে নামতেই টাকা চেয়ে ঘিরে ধরছে এক শ্রেণির মানুষ। এরপর যখন সৈকতে গিয়েছি তখনও একইভাবে সাহায্যপ্রার্থীদের আর্তনাদ শুনতে হয়। প্রথমদিকে কয়েকজনকে সাহায্যও করেছি কিন্তু এ সাহায্যপ্রার্থীর সংখ্যাটি অগণিত।
মধুচন্দ্রিমা কাটাতে কক্সবাজারে এসেছেন নবদম্পতি রাহুল ও আশা। বিপনী বিতান থেকে খাওয়ার হোটেলে ঢুকতে-বের হতে তাদেরও পোহাতে হচ্ছে একই বিড়ম্বনা। রাহুল বলেন, মানুষ পর্যটন স্পটে রিফ্রেশ বা অবকাশ যাপনের জন্য আসে। প্রতি পদক্ষেপে এমন বিড়ম্বনা অসহনীয়।
সরেজমিন কক্সবাজার ঘুরে রাস্তা থেকে বাজারে, সৈকত থেকে হোটেলের আশেপাশে এমন চিত্র দেখা গেছে। ভিক্ষুকদের উৎপাতে পর্যটকরা বিড়ম্বনাসহ নানা ধরনের হেনস্থার শিকার হচ্ছেন। স্থানীয়রা বলছেন এ অবস্থা ক্রমেই বেগতিক হচ্ছে।
কলাতলীর উপবল রেস্তোরার সামনে ভিক্ষা করতে দেখা যায় ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিকে। তিনি বলেন, তার নাম আমজেদ মোল্লা। মেয়ের বিয়ে ও নিজের শরীরের নানা সমস্যার কারণে পর্যটকদের কাছে অর্থ চাচ্ছেন তিনি। এসময় বয়স্ক ভাতা না পাওয়ার অভিযোগ করেন তিনি।
আমজাদ মোল্লা নামে এক ভিক্ষুক বলেন, শরীরে শক্তি না থাকায় কিছুই করতে পারিনা। এ কারণেই ভিক্ষা করছি। তবে তিনি দাবি করেন, কক্সবাজারে যেসব ভিক্ষুক দেখা যাচ্ছে তাদের অনেকেই রোহিঙ্গা অর্থাৎ বাংলাদেশি নয়।
বুধবার বিকেলে এমন বেশ কিছু মানুষকেই দেখা যায় তারা মুখে কোন কথা বলেন না। শুধু ইশারায় টাকা দাবি করেন। নাম ও টাকা চাওয়ার কোনো কারণ শুনতে চাওয়া হলে কেউ কোনো কথা না বলে স্থান ত্যাগ করেন। অনেকে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দেন তিনি কথা বলতে পারেন না।
এসব ভিক্ষুকদের বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এরা রোহিঙ্গা। এখনো বাংলা ভালোভাবে না বলতে পারায় মুখে কোনো কথা বলেন না। আর বর্তমানে এমন ভিক্ষুকের সংখ্যাও এ এলাকায় কম নয়৷ যে কারণে এ শ্রেণির মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে বাড়ছে ভিক্ষুকদের তৎপরতা।
সোনালীনিউজ/এন
আপনার মতামত লিখুন :