খুলনা: জেলার পাইকগাছা উপজেলার রাডুলী ইউনিয়নে সাবেক ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসর, এমপি আক্তারুজ্জামান বাবুর পাইকগাছা-কয়রার প্রধান সহচর, নৌকার মনোনীত চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের পদত্যাগের দাবিতে ১৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার বেলা ১২টায় রাডুলী ইউনিয়নের বাঁকা বাজারে মানববন্ধন ও গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ছাত্রসমাজ ও সাধারণ জনগণের আয়োজনে মানববন্ধনে ইউনিয়নের সাধারণ গণমানুষ অংশ নেয়। কালামের ছোট পুত্র মো. তারিকুল ইসলাম (উজ্জ্বল) এসএসএফ এ থাকাকালীন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত ড্রাইভার হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।
মাগুরা জেলায় পোষ্টিং নিয়ে তৎকালীন এমপি সাইফুজ্জামান শেখরকে নির্বাচিত করার জন্য রাতের আঁধারে ভোট প্রয়োগে প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করেন। পরবর্তীতে ভোট কারচুপির উদ্দেশ্যে তৎকালীন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক তাকে নাটোরে জেলা এসপি হিসেবে পদায়ন করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে তিনি নাটোরের সাধারণ ছাত্র জনতার উপর নির্মম নির্যাতন করে। ফলে তার নামেও আদালতে ফৌজদারি মামলা চলমান রয়েছে। তিনি বর্তমানে ওএসডি হয়ে খুলনা ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত আছেন। পতিত সরকারের সময়ে তার বিরুদ্ধে গৃহকর্মী হত্যার অভিযোগ থাকলেও নিজের ক্ষমতা বলে সেটার বিচার এখনও হয়নি।
কালাম চেয়ারম্যানের সেজো পুত্র মো. এনামুল ইসলাম (বকুল) মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি), খুলনা তে সহকারী পরিচালক হিসেবে নিয়োগ ও বদলী বাণিজ্য করেছে, বর্তমানে স্বপদে বহাল আছেন।
কালাম চেয়ারম্যান ছিলেন সাবেক পাইকগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগ এর সাধারণ সম্পাদক। তার ছোট পুত্র এসপি তারিকুল এবং সাবেক এমপি বাবুর সহযোগিতায় হাইকমান্ড থেকে যোগাযোগের মাধ্যমে তিনি গত ইউপি নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পেয়ে রাতের ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। জয় লাভের পর সাবেক এমপি বাবুর ছত্রছায়ায় তিনি এবং তার নাতি আজমাইন আজাদ (মুক্ত) এলাকায় ত্রাস ও চাঁদাবাজি মহড়া শুরু করেন।
৫ আগস্ট তৎকালীন স্বৈরাচারী সরকারের পতন কালে রাড়লী ইউনিয়নের অনেক আওয়ামী লীগের নেতার বাড়ি ভাংচুর হলেও তথাকথিত বিএনপি নেতা ও কালাম চেয়ারম্যানের পালক পুত্র মো. রফিকুল ইসলাম (পাগলা রফিক) এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক রাডুলী ইউনিয়ন নেতা মো. মমিন শেখ (মমিন মাস্টার) এর প্রত্যক্ষ ভূমিকার কারণে তার অবস্থান এখনও আগের মতই বহাল তবিয়তে আছে বলে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন।
এমনকি পাগলা রফিকের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে তিনি বাজার কমিটির সভাপতি, মসজিদ কমিটির সভাপতিসহ নতুন নতুন পদ দখল করছেন। এসপি পুত্রের জুজুর ভয় দেখিয়ে তিনি সাধারণ মানুষকে এতোদিন নিরব রাখতে পারলেও ১৫ ফেব্রুয়ারি সাধারণ ছাত্র জনতা ফুসে উঠে ইউনিয়নের বাঁকা বাজারে মানববন্ধন ও গণ মিছিলের আয়োজন করে।
শান্তিপূর্ণ মানব বন্ধনে ছাত্র সমাজ ও সাধারণ জনতার দাবি খুনি নৌকার চেয়ারম্যান কালামের পদত্যাগ চাই, খুনি কালামের ছোট পুত্র এসপির স্থায়ী বরখাস্ত চাই, গৃহকর্মী খুনের বিচার চাই, এবং বিএনপি নামধারী নেতা মো. রফিকুল ইসলাম (পাগলা রফিক) এর বিএনপি থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার চাই।
উক্ত দাবি মানা না হলে ১৬ ফেব্রুয়ারি, রোববার রাডুলী ইউনিয়ন পরিষদ এর চত্বরে সাধারণ ছাত্র সমাজ ও সাধারণ জনগণের অবস্থান কর্মসুচি পালন করা হবে।
ছাত্র প্রতিনিধি আশফাক হোসাইন ইব্রাহিমের সঞ্চালনায় মানববন্ধন ও গণ মিছিলে আব্দুর রাজ্জাক গাজী, মো. ইকবাল হোসেন, মো. বাচ্চু, মো. মাসুদ রানাসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।
এআর
আপনার মতামত লিখুন :