বিদেশে চাকরি দেওয়ার নামে মানুষ বিক্রি করাই তার পেশা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ২৬, ২০২৩, ১২:২৫ পিএম
বিদেশে চাকরি দেওয়ার নামে মানুষ বিক্রি করাই তার পেশা

ঢাকা: আকর্ষণীয় বেতনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ফাঁদে ফেলে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় ও বিদেশে নিয়ে দালালদের কাছে বিক্রি করার অভিযোগে মানবপাচারকারী চক্রের সদস্য ওসমান গণি (৩০) কে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।

গত মঙ্গলবার মঙ্গলবার (২৩ মে) নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার গোয়ালদী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিদেশে পাঠিয়ে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় ও বিক্রির অভিযোগে এক প্রবাসীর মামলার পলাতক আসামি গণি। 

শুক্রবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‍্যাব-১১ এর মিডিয়া কর্মকর্তা সিনিয়র এএসপি (মিডিয়া অফিসার) মো. রিজওয়ান সাঈদ জিকু।

তিনি জানান, তরিকুল ইসলাম ওরফে আলামিনসহ বিভিন্ন নামে নিজেকে পরিচয় দিত। তরিকুল ইসলাম ওরফে আল-আমিন (৩০)। সোনারগাঁ উপজেলার গোয়ালদী চর এলাকার মো. আব্দুল জলিলের ছেলে। গ্রেপ্তার এড়াতে ছদ্মনাম ব্যবহার করত।

র‍্যাবের এ কর্মকর্তা আরও জানান, নিরীহ মানুষকে বিদেশে নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলত। টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়ে নেপালে নিয়ে মানবপাচারকারী দালালদের হাতে তুলে দিত। তারা আবার জিম্মি করে টাকা আদায় করত।

তেমনি এক ভুক্তভোগী বরিশালের ধুড়িয়াইল গ্রামের মো. নয়ন সরদার। তাকে মালয়েশিয়া পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে আকর্ষণীয় বেতনের চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দেয়। বিদেশে যাওয়ার খরচ বাবদ ৪ লাখ টাকার একটি চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী ভুক্তভোগী তিন ধাপে মোট ৩ লাখ টাকা পাচারকারী চক্রের সদস্যের দেয়। 

পরে ২০২২ সালের ৮ অক্টোবর ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীসহ ৫/৭ জনকে মালয়েশিয়া পাঠানোর উদ্দেশ্যে বিমান যোগে নেপালের কাঠমুন্ডুতে পাঠিয়ে দেয় এবং সেখানে তাদেরকে জিম্মি করে আরও ১ লাখ টাকা করে মুক্তিপণ আদায় করে।  

১ লাখ টাকা দেওয়ার পরও মালয়েশিয়া না পাঠিয়ে নেপালের কিছু দালালদের কাছে বিক্রি করে দেয়। প্রায় ২৫ দিন সেখানে মানবেতর জীবন কাটিয়ে নেপালে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের সহায়তায় দেশে ফিরে আসে। পরবর্তীতে দেশে এসে আসামিদের বিরুদ্ধে বরিশাল গৌরনদী মডেল থানায় মামলা দায়ের করে। 

গ্রেপ্তার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‌্যাব জানায়, মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকায় মালয়েশিয়ান সরকার দেশটিতে তার অবস্থান নিষিদ্ধ করে ও তার পাসপোর্ট বাতিল করে দেয়। তাকে আইনের আওতায় আনার জন্য মালয়েশিয়ার সরকার তাকে খুঁজতে থাকে।
 
আসামি বিষয়টি বুঝতে পেরে সম্পূর্ণ নতুন নাম পরিচয় দিয়ে নতুন পাসপোর্ট তৈরি করে। পরবর্তীতে সে এই তথ্যের ভিত্তিতে মালয়েশিয়ায় ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং স্থায়ী রেসিডেন্সশিপ কার্ড ইত্যাদি সংগ্রহ করে। এইভাবে সে প্রায় দুই যুগ অবাধে মালয়েশিয়া অবস্থান ও বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রম করে আসছিল।

গ্রেপ্তার আসামির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বরিশাল গৌরনদী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

সোনালীনিউজ/এআর

Link copied!