ফাইল ছবি
তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া শারীরিক জটিলতা নিয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন টানা ১৪ দিন। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে লন্ডনে নেওয়ার প্রস্তুতিও প্রায় চূড়ান্ত। মেডিক্যাল বোর্ড সবুজ সংকেত দিলেই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা হবেন তিনি। ইতোমধ্যে দেশে এসেছেন তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমান।
হাসপাতালে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা জানতে ভিড় করছেন বিএনপির শীর্ষ নেতার পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও। কিন্তু নেত্রী অসুস্থ থাকার কারণে বিএনপির নিয়মিত রাজনৈতিক কর্মসূচিতে দেখা দিয়েছে বড় ধরণের ভাটা। এর প্রভাব পড়েছে সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিবেশেও।
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর তৎপরতা আগের তুলনায় অনেকটাই স্তিমিত। সরেজমিনে দেখা গেছে, ভোট নিয়ে সাধারণ মানুষের আগ্রহও কমে এসেছে উল্লেখযোগ্যভাবে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ১১ ডিসেম্বর নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা করার প্রস্তুতি চলছে। ভোটগ্রহণের সম্ভাব্য তারিখ হিসেবে বিবেচনায় রয়েছে ৮, ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি।
এমন সময়েই খালেদা জিয়ার অসুস্থতা বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে প্রায় থমকে দিয়েছে। কয়েকটি শূন্য আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলেও প্রচার-প্রচারণা জমিয়ে তুলতে পারছেন না প্রার্থীরা। অনেকেই বলছেন, দলের প্রধান নেত্রী সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে, এমন সময় পুরোপুরি নির্বাচনী মাঠে নামা শোভন নয়।
বিভিন্ন দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরাও মনে করেন, খালেদা জিয়া মাঠে থাকলে বিএনপির প্রচারণা ও জনসমর্থনে যে মাত্রা তৈরি হয়, তা এখন আর দেখা যাচ্ছে না। এই অনুপস্থিতি সরাসরি নির্বাচনী প্রতিযোগিতার ওপর প্রভাব ফেলছে। দেশের ক্রান্তিলগ্নে তাঁর মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের অনুপস্থিতি ভোটারদের আগ্রহও কমিয়ে দিচ্ছে।
জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনাদের পাঁচ দফা দাবি আদায়ের কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিভাগীয় শহরগুলোয় সমাবেশ হচ্ছে। কয়েকটিতে ভালো উপস্থিতি দেখা গেলেও বেশির ভাগ সমাবেশে প্রত্যাশিত জনসমাগম হয়নি। বেশ কয়েকটি বড় কর্মসূচিতেও জনগণের আগ্রহ ছিল খুবই কম।
তৃণমূল পর্যায়ের অনেক নেতা মনে করেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ হওয়ার পর বিএনপির প্রার্থীরা মাঠে সক্রিয় না হওয়ায় নির্বাচনী প্রতিযোগিতার তীব্রতা অনেক জায়গায় নরম হয়ে গেছে। অনেক আসনে আগের হিসাব–নিকাশ বদলে যাচ্ছে। কারণ বেগম জিয়া শুধু বিএনপি নয়, দেশের রাজনীতিরও একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাঁর মাঠে থাকার উপস্থিতি নিজেই একটি বড় রাজনৈতিক শক্তি।
দেশের সামনে গুরুত্বপূর্ণ একটি নির্বাচন। কিন্তু কেন্দ্রে থাকা একজন অপরিহার্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় আগামী দিনের রাজনৈতিক সমীকরণ কোন পথে যাবে, তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
এসএইচ
আপনার মতামত লিখুন :