ঢাকা: লর্ডস টেস্টের তৃতীয় দিনের শেষ ওভারে সময় নষ্টের অভিযোগে যে ভাষায় জ্যাক ক্রওলির সঙ্গে কথা বলেছেন, তাতে ম্যাচ শেষে জরিমানা হতে পারে ভারতীয় অধিনায়ক শুবমন গিলের। ভারতীয় অধিনায়কের এমন আচরণকে ইংল্যান্ডের বিশেষজ্ঞ কোচ টিম সাউদি ‘দ্বিচারিতা’ হিসেবে দেখছেন।
ভারত ৩৮৭ রানে প্রথম ইনিংসে অলআউট হওয়ার পর কাল ইংল্যান্ড ব্যাটিং করে মাত্র ১ ওভার। শেষ বিকেলে ব্যাটিং করা যেকোনো ব্যাটসম্যানের জন্য কঠিন। এ ধরনের সময়ে কোনো কোনো ব্যাটসম্যানের মধ্যে সময় নষ্ট করার যে প্রবণতা দেখা যায়, এ যাত্রায় ইংল্যান্ডের ওপেনাররাও সে চেষ্টাই করেছেন। যশপ্রীত বুমরা বল নিয়ে দৌড়াচ্ছেন, এমন সময়ে স্টান্স থেকে সরে দাঁড়ান জ্যাক ক্রলি। একবার নয়, দুবার।
ক্রলির এমন সময়ক্ষেপণের চেষ্টায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন গিল। সম্প্রচার মাইকে ধরা পড়ে, ইংল্যান্ড ওপেনারের উদ্দেশে অশ্রাব্য শব্দ উচ্চারণ করেছেন ভারত অধিনায়ক।
ওভারের চতুর্থ বলে ক্রলি আঙুলে আঘাত পেয়ে ফিজিওকে ডাকলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ভারতের ক্রিকেটাররা একসঙ্গে তার দিকে এগিয়ে গিয়ে ব্যাঙ্গাত্মকভাবে তালি দিতে থাকেন। এভাবে বুমরার ওভার শেষ করতেই লেগে যায় ৭ মিনিট। যে কারণে ভারতের সামনে দিনের শেষবেলায় দুই ওভার বল করার সুযোগ থাকলেও বুমরার ওভারেই থামতে হয়।
এমন উত্তাপের মধ্য দিন শেষ হওয়ার পর বিষয়টি সংবাদ সম্মেলনে উঠে আসে। ইংল্যান্ড দলের হয়ে সংবাদকর্মীদের সামনে আসা টিম সাউদি এ নিয়ে বলেন, ‘দিনের শেষে দুই দলের উত্তাপের মুহূর্ত দেখা সব সময়ই রোমাঞ্চকর। তবে আমি বুঝতে পারছি না, কাল (ম্যাচের দ্বিতীয় দিন) দুপুরে যখন শুবমান গিল মাঠে শুয়ে ম্যাসাজ নিচ্ছিল, তখন তারা ঠিক কী নিয়ে অভিযোগ করছিল। দিনের শেষদিকে এমন কিছু তো (সময় নষ্ট) খেলারই অংশ। এটা দিন শেষ হওয়ার এক রোমাঞ্চকর উপায়।’
তবে টেস্টে দিনের শেষভাগে এক-দুই ওভারের জন্য ব্যাটিংয়ে নামলে ওপেনারদের মনে কী চলে, সেই অভিজ্ঞতা থেকে ভারতের লোকেশ রাহুল ক্রলির পাশেই দাঁড়িয়েছেন, ‘দিনের শেষে যা হয়েছে, সেটা খেলারই অংশ। একজন ওপেনারের দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টা আমি বুঝি। আমি পুরোপুরি জানি, সেখানে কী হচ্ছিল আর সবাই-ই জানে কী হচ্ছিল। শেষ পাঁচ মিনিটে কী ঘটেছিল, তা একজন ওপেনার বুঝতে পারবে।’
দুই দলই প্রথম ইনিংসে ৩৮৭ রান করে থেমেছে। শেষ বিকেলে কাল উইকেট পেলে এগিয়ে যেত ভারত। সেটাই ভারতের চাওয়া ছিল বলে জানিয়েছেন রাহুল, ‘আমরা দুই ওভার বোলিং করতে চেয়েছিলাম। তখন ছয় মিনিট বাকি ছিল। এটা খুবই স্বাভাবিক যেকোনো দল ছয় মিনিটে দুটি ওভার করবেই। তবে আমরা জানি, পুরো দিন মাঠে কাটানোর পর দুই ওভারের জন্য ব্যাটিংয়ে নামা একজন ব্যাটসম্যানের জন্য কতটা কঠিন। দিনের শেষ বলে যদি একটা উইকেট পেয়ে যেতাম, সেটাই আমাদের জন্য ভালো হতো।’
এ ঘটনা কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার আর ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। তার দাবি, আইপিএলে ইংলিশ ক্রিকেটাররা কম খেলায় এমন ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেছেন এভাবে, ‘এ ঘটনার পেছনে একটা কারণ আছে। সেটা হলো ইংল্যান্ডের অনেক খেলোয়াড় আইপিএলে খেলে না। আমি এভাবে ভাবছি।
এই ইংল্যান্ড দল থেকে আইপিএলে জো রুট খেলেনি, বেন স্টোকস খেলেনি। অন্য দলগুলোর সঙ্গে যা হয়েছে, তা হলো তাদের অনেক খেলোয়াড় আইপিএলে খেলে। তারা ভারতীয় খেলোয়াড়দের সঙ্গে মেশে, একসঙ্গে সফর করে, একই ড্রেসিংরুম ভাগ করে নেয়। ভারত-ইংল্যান্ড খেলোয়াড়দের মধ্যে অনেক সংঘাত হয়। কারণ, তারা আইপিএলে একসঙ্গে খেলে না।’
এআর
আপনার মতামত লিখুন :