• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

কুয়াশাচ্ছন্ন হলেই শৈত্যপ্রবাহ নয় যে কারণে


নিউজ ডেস্ক ডিসেম্বর ১২, ২০২০, ০৮:৪৩ এএম
কুয়াশাচ্ছন্ন হলেই শৈত্যপ্রবাহ নয় যে কারণে

ঢাকা: শীত এলে বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তার করে হিমালয় থেকে আসা উত্তরের সমীরণ। এ কারণে শীতের অনুভূতি তুলনামূলক বেশি থাকে।  মাঝেমধ্যে বয়ে যায় শৈত্যপ্রবাহ। 

গত কয়েকদিন ধরে প্রকৃতি শীতকালের আগমনী জানান দিচ্ছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জেঁকে বসতে শুরু করেছে শীত। পাশাপাশি আছে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা। নদীর তীরবর্তী এলাকায় এই কুয়াশা ঘন হয়ে পড়ছে। কুয়াশার প্রকোপে শুক্রবার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়নি সূর্যের মুখ। ফলে শীতের অনুভূতি আরও বেড়েছে।  তবে এটিকে এখনও শৈত্যপ্রবাহ বলা যাবে না। 

শৈত্যপ্রবাহ কী?
সাধারণত তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামলে এবং ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদ্যু শৈত্যপ্রবাহ বলে।  এছাড়া ৬ থেকে ৮ ডিগ্রিতে নেমে এলে তা মাঝারি আকারের এবং এর নিচে নামলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহে পরিণত হয়।

কুয়াশাচ্ছন্ন হলেই শৈত্যপ্রবাহ নয় কেন?

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এখন যে শীতের অনুভূতি সেটা শৈত্যপ্রবাহ নয়।  কেননা, শুক্রবার দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস সীতাকুণ্ডে। এদিন ঢাকায় ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একইভাবে ময়মনসিংহে ১৫ দশমিক ৬,  চট্টগ্রামে ১৭ দশমিক ৪, সিলেটে ১৬ দশমিক ৪, রাজশাহীতে ১৬, রংপুরে ১৬ দশমিক ৩, খুলনায় ১৬ এবং বরিশালে ১৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।  যেহেতু তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামেনি তাই কুয়াশা যত ঘনই থাকুক না কেন একে শৈত্যপ্রবাহ বলা যাবে না।

এ বছর কখন হবে শৈত্যপ্রবাহ?

আবহাওয়া বিভাগের (বিএমডি) আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, শীতের আসল প্রকোপ শুরু হবে মধ্য ডিসেম্বরের পর। বিশেষ করে ১৮-১৯ ডিসেম্বরের দিকে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।  এটি কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে।

তবে তেমন শীত না পড়লেও বেড়েছে কুয়াশার আধিক্য। দেশের উত্তরাঞ্চলে মাঝারি থেকে ঘন এবং অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি আকারের কুয়াশার চাদর দেখা যাচ্ছে। পরিস্থিতি এমনই ছিল যে, শুক্রবার রাজধানীতে সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকেও একই তথ্য পাওয়া গেছে। 

শীতের প্রকোপ সম্পর্কে আবহাওয়াবিদ ড. আবুল কালাম মলি­ক বলেন, যদি উচ্চচাপ বলয়ের বিস্তার বাংলাদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে এবং উত্তর-উত্তর পশ্চিমের বায়ু প্রভাবিত হয় তাহলে শীতের অনুভ‚তি বেড়ে যায়। ওই পরিস্থিতিতে বাস্তবে তাপমাত্রা যা থাকে, তার চেয়েও বেশি শীতানুভূতি থাকে। 

তিনি আরও বলেন, সাধারণত দিনের ব্যাপ্তিকাল হ্রাস পেলে এবং রাত বড় হলে শীতের প্রভাব বাড়তে থাকে। এর কারণ হচ্ছে, এ সময়ে দিনে ধরণীকে সূর্য আর তেমন উষ্ণ করতে পারে না। সকালে পুব আকাশে যে রবি ওঠে, তা ধরণীকে গরম করার আগেই আবার অস্তমিত হয়ে যায়। ফলে বায়ুমণ্ডল আর উষ্ণ হতে পারে না। ধরণীও অপেক্ষাকৃত শীতল থাকে। এমন পরিস্থিতিতে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে যায়। তখন শীতের অনুভূতি বেশি হয়ে থাকে।

কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা ৪০০ মিটার 

বিএমডির শুক্রবারের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর বিভাগের দু’এক জায়গায় হালকা/গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।  রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা থাকতে পারে।  তা কোথাও বিকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

দেশের কোথাও কোথাও নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্য এলাকায় মাঝারি থেকে হালকা কুয়াশা পড়তে পারে।  কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা ৪০০ মিটার অথবা কোথাও কোথাও এর চেয়ে কম হতে পারে। এসব এলাকার নৌযানগুলোকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।  তবে কোনো সংকেত দেখাতে হবে না।

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School
Link copied!