• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অনুমোদনের অপেক্ষায় পুলিশের এমআরটি, ব্যাকআপ দিবে ডিএমপি


লাইজুল ইসলাম ডিসেম্বর ২৭, ২০২২, ০৯:৩০ এএম
অনুমোদনের অপেক্ষায় পুলিশের এমআরটি, ব্যাকআপ দিবে ডিএমপি

ঢাকা: একদিন পর স্বপ্নের মেট্রোরেলের যুগে পা দিতে চলেছে বাংলাদেশ। মেট্রো যেমন নতুন তেমনি এর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য তৈরি করা হচ্ছে পুলিশের নতুন একটি ইউনিট। যার নাম দেয়া হয়েছে ‘এমআরটি পুলিশ’। কিন্তু এই ইউনিটটি’র ফাইল  এখন আটকে আছে মন্ত্রণালয়ের টেবিলে। প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে ফাইলটি। যেহেতু এখনো ‘এমআরটি পুলিশ’তাদের কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি তাই আপাতত ব্যাকআপ হিসেবে ডিএমপির সদস্যরা কাজ করবে মেট্রোর নিরাপত্তায়। 

সরেজমিন পরিদর্শনে মেট্রোরেল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে আগারগাঁও থেকে মিরপুর সাড়ে এগারো পর্যন্ত প্রতিটি স্টেশনের সামনে পুলিশ পাহাড়ায় বসে আছে। প্রতিটি গেটে তালা লাগানো রয়েছে। অচেনা কোনো লোককে আশেপাশে দাঁড়াতেও দেয়া হচ্ছে না। মেট্রোরেলের স্টেশনগুলোর আশপাশের সব দোকানে পুলিশের করা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। 

শেওরাপাড়ার একটি দোকানের মালিক সোনালীনিউজকে বলেন, এই খানে পুলিশ আর পুলিশ। মেট্রো উদ্বোধন উপলক্ষে তাদের এতটা কড়াকড়ি।  

ঢাকা মহানগর পুলিশের মিরপুর বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, মেট্রোর নিরাপত্তায় সব ধরনের প্রস্তুতি তারা শেষ করেছে। প্রতিটি গেটে ইতোমধ্যে পাহাড়ায় বসেছে পুলিশ সদস্যরা। যত পুলিশ লাগবে তত সদস্য এখানে আপাতত দেয়া হবে। 

সাবেক এক পুলিশ কর্মকর্তার মতে, এই সময়ে মেট্রোর জন্য খুব প্রয়োজন আলাদা একটি ইউনিট। যেটি শুধু মেট্রোর নিরাপত্তায় কাজ করবে। প্রতিনি স্থাপনার নিরাপত্তা, শৃঙ্খলা ও যাত্রী সুরক্ষায় একটি বিশেষ ইউনিট গঠন সময়ের দাবি। এছাড়া মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনে এটিএম বুথ, ইলেকট্রিক সরঞ্জাম ও দোকান থাকবে। প্রতি মুহূর্তে হাজার হাজার যাত্রী যাতায়াত করবে। এজন্য প্রত্যেকটি স্টেশনে পুলিশ ফাঁড়ির প্রস্তাব করা হয়েছে।

জানাগেছে, মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ ডিএমটিসিএলের মোট স্টেশন থাকবে ১০৪টি। যার মধ্যে উড়াল ৫১টি ও পাতাল হবে ৫৩টি। এই ধরনের স্থাপনার নিরাপত্তায় বাংলাদেশ পুলিশ কখোনো কাজ করেনি। তাই বিশাল এ প্রকল্পের নিরাপত্তায় অবশ্যই বিশেষায়িত ইউনিট প্রয়োজন। 

জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কিমিটির অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা এমআরটি পুলিশের জন্য ৩৫৭টি পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। এর জন্য ২১ টি যানবাহন চাওয়া হয়েছে। অনুমোদনের পরই পুলিশ বাহিনী থেকে কর্মকর্ত ও সদস্যদের এই ইউনিটে বদলি করা হবে। 

এমআরটি পুলিশের জন্য চাহিদা পত্রে বলা হয়েছে, এই ইউনিটের প্রধান হবেন পুলিশের একজন উপ-মহাপরিদর্শক। এরপর একজন অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক, একজন পুলিশ সুপার, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সাতজন ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র), একজন ইন্সপেক্টর (সশস্ত্র), ছয়জন উপ-পরিদর্শক (এসআই), ৫১ জন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই), ১০ জন নায়েক, ২৭০ জন কনস্টেবল, একজন হিসাবরক্ষক, একজন উপ-সহকারী হিসাবরক্ষক ও একজন কম্পিউটার অপারেটরসহ মোট ৩৫৭ জন জনবলের একটি সাংগঠনিক কাঠামো মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (ওঅ্যান্ডএম) ফারুক আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, নিরাপত্তার জন্য আইনে যা যা রয়েছে তার সবকিছু পুলিশ দেখভাল করবে। মেট্রোরেলের ভেতর পুলিশ থাকবে না, তবে জরুরি প্রয়োজনে পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এছাড়া মেট্রোরেলের বাইরে স্টেশনে নিরাপত্তা, প্রবেশমুখে আর্চওয়েতে চেকিং, সিসিটিভি মনিটরিংসহ সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কাজ করবে পুলিশের নতুন এ ইউনিট।
তিনি আরও বলেন, মেট্রোরেলের ভেতরে কিংবা বাইরে অপরাধ সংঘটিত হলে সংশ্লিষ্ট এলাকার থানা পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক গণমাধ্যমকে বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা এমআরটি পুলিশ পাইনি। তবে যাদের পাবো তাদের বেশি কিছু বিষয়ৈ প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এরপর তাদের হাতে বুঝিয়ে দেয়া হবে মেট্রোর নিরাপত্তা।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে পুরো মেট্রোরেল নিরাপত্তার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশকে। কারণ এমআরটি পুলিশের ফাইলটি অনুমোদনের অপেক্ষায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে আছে। এটা দ্রুত সময়ের মধ্যে অনুমোদন পেয়ে যাবে। ততদিন ডিএমপি তাদের রিজার্ভ ফোর্স দিয়ে নিরাপত্তা দিবে। 

ডিএমটিসিএলের এমডি আরও বলেন, এই মেট্রো চালাতে আমাদের অনেক লোকবল প্রয়োজন ছিলো। যা আমাদের নিয়োগ দিতে হয়েছে। এই লোকবলগুলোকে আমরা প্রশিক্ষণও দিয়েছি। আশা করি কোথাও কোনো সমস্যা হবে না।

সোনালীনিউজ/এম

Wordbridge School
Link copied!