• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

নারী শ্রমিকদের ছোঁয়ায় সমৃদ্ধ হচ্ছে গাজীপুর শিল্পাঞ্চল 


এম. এস রুকন, গাজীপুর মার্চ ৯, ২০২৩, ০১:২১ পিএম
নারী শ্রমিকদের ছোঁয়ায় সমৃদ্ধ হচ্ছে গাজীপুর শিল্পাঞ্চল 

ফাইল ছবি

গাজীপুর: দেশের অন্যসব জেলার চেয়ে রাজধানী ঢাকার সংগে ব্যবসা বাণিজ্য এবং যোগাযোগের জন্য সহজলভ্য ও গুরুত্বপূর্ণ টানজিট পয়েন্ট খ্যাত জেলা গাজীপুর। তবে রাজধানীর পাশে হলেও এ জেলার অর্থনীতির অবস্থা একটা সময়ে তেমন ভালো ছিলো না। অর্থনীতির অবস্থা খুবই দুর্বল ছিলো। 

১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় গাজীপুরের টঙ্গী বিসিক শিল্পনগরী।বর্তমানে সেখানে কয়েকশত বিভিন্ন প্রকার শিল্প কারখানা রয়েছে। আর এসব কারখানায় হাজার-হাজার শ্রমিক কাজ করছেন। 

বিশেষ করে পোশাক শিল্প কারখানায় নারী শ্রমিকদের ধারণাবিহীন উপস্থিতি এবংপণ্য উৎপাদনে যোগ্য দক্ষমতার ছোঁয়ায় শুধু টঙ্গী শিল্পাঞ্চল নয় কোনাবাড়ী, কালিয়াকৈর এবং শ্রীপুরসহ পুরো গাজীপুর শিল্পাঞ্চল সমৃদ্ধ হচ্ছে। 

সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন গবেষণা তথ্যে জানা গেছে, ব্যাপক সংখ্যক লোকজনদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ঢাকা শিল্পাঞ্চল সব চেয়ে বেশি এগিয়ে। তবে ঢাকা শিল্পাঞ্চলের পরের অবস্থানে বিপুল সংখ্যক লোকজনের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে নাম উঠে এসেছে গাজীপুর 
শিল্পাঞ্চল। 

অথচ যেখানে ২০১২ সালের পূর্বে ১ থেকে ২০ নম্বর তালিকাতেও গাজীপুরের নাম ছিল না। সেখানে উচ্চ হারে কর্মসংস্থানের সুযোগ হওয়ায় এক দশকের ব্যবধানে সব জেলাকে ছাড়িয়ে গাজীপুর এখন দ্বিতীয় অবস্থানে। 

সরেজমিনে, কালিয়াকৈর শিল্প অঞ্চলের মৌচাক এলাকায় কথা হয়। বে-ফুট ওয়্যার জুতা কারখানায় কর্মরত নারী শ্রমিক মুসলিমা আক্তার এর সঙ্গে। এ সময়ে তিনি জানান,তার গ্রামের বাড়ি সুদূর রংপুরে। তিনি সংসারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার লক্ষে এখানে কাজ করছেন প্রায় ১ বছর।এরই মধ্যে তিনি নিজেকে একজন দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলছেন। একই সঙ্গে তার চাকরি করার মধ্য দিয়েই সংসারে স্বচ্ছতা ফিরেছে। 

জেনারেল ফার্মাতে দীর্ঘ ৫ বছর যাবত চাকরি করেন। মোছা: বিলকিস বেগম। কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন,গাজীপুরে যদি মিল কারখানা না থাকতো তাহলে দেশের শিক্ষত যুবকরা  কর্মসংস্থানের অভাবে হতাশায় ভুগতেন। 

তিনি আরও বলেন,এই কারখানায় কাজ করে তিনি পরিবারের অভাব অনাটন দুর করেছেন।
একই সঙ্গে তিনি জানান,তারা যে ভাবে কাজ করছেন। ছেলে শ্রমিকরাও সে ভাবে পেরে উঠছে না। এর পরেরও মেয়ে শ্রমিকদের মজুরি অনেক কম। 

এটিএস এ্যাপারেলস লি: চাকরি করেন বিউটি আক্তার। তিনি এই পোশাক কারখানার একজন 
সুইং মেশিন অপারেটর। কথা তার সঙ্গে।এ সময়ে বিউটি আক্তার জানান,তাদের কারখানার উন্নতির মুল ভুমিকা পালন করছেন তারা। মাসে কোটি কোটি টাকার পোশাক তৈরি করেন। অথচ মালিকরা ন্যায্য মজুরি প্রদানে অনিহা। 

বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন এবংস্থানীয় কারখানার  নারী শ্রমিক নেতা ও সংস্থার সূত্রে জানা গেছে,বিদ্যমান শ্রম আইন অনুযায়ী,প্রতি পাঁচ বছর পরপর নতুন মজুরি বোর্ড গঠনের মাধ্যমে শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণ করতে হয়। অথচ সরকার তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের নতুন করে মজুরি বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে বিভিন্ন প্রকার বিলম্ব করছেন। 

পোশাক শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দামি নিয়ে কাজ করছেন বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি।তিনি জানান,ইতিমধ্যে সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট পোশাক শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির ব্যাপারে দ্রুত মজুরি বোর্ড গঠনের জন্য জোরাল দামি জানানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন,আশা রাখছেন এ বছরের মধ্যেই নতুন মজুরি ঘোষণা আসবে। 

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এবং বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্য মতে,নতুন মজুরি বোর্ড গঠনের বিষয়ে তাদের প্রতিনিধির নামের তালিকা চেয়ে মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

গাজীপুর শিল্পাঞ্চলে নারী শ্রমিকদের পণ্য উৎপাদনে জয়জয়কার পারফর্ম থাকলেও নতুন মজুরি নিয়ে তারা হতাশায় ভুগছেন। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বিজিএমইএ সভাপতি মোঃ ফারুক হাসান জানান,শুধু গাজীপুর শিল্পাঞ্চল নয় দেশের সকল শিল্প অঞ্চলের পোশাক শ্রমিকদের জন্য চলতি অর্থবছরের মধ্যে নতুন মজুরি ঘোষণা করা হবে। তিনি বলেন,এ জন্য শ্রমিকদের ধৈর্য ধারণ করতে হবে। 

সোনালীনিউজ/এম

Wordbridge School
Link copied!