• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

তাসাউফের পরিচয়


মুফতি আহমদ আবদুল্লাহ জানুয়ারি ২৬, ২০১৯, ০১:২০ পিএম
তাসাউফের পরিচয়

ঢাকা : ‘তাসাউফ’ আরবি শব্দ। আভিধানিক অর্থ সুফিবাদ, আধ্যাত্মিকতা, অধ্যাত্মবাদ। মুসলিম দর্শনে ‘তাসাউফ’ সুফিবাদ নামে খ্যাত। বিশেষজ্ঞদের মতে, সুফি শব্দটি সুফ শব্দ থেকে উৎপন্ন, যার অর্থ পশম। পশমি বস্ত্র সরলতা ও আড়ম্বরতাহীনতার প্রতীক। রসুল (সা.) ও তাঁর সাহাবারা বিলাসিতার পরিবর্তে সাদাসিধা পোশাক পরিধান করতেন। তাই সাদাসিধা জীবনযাপনকারী ব্যক্তিরা মুসলিম দর্শনে সুফি নামে অভিহিত।

তাসাউফ বা সুফিবাদের পারিভাষিক বর্ণনায় শাইখুল ইসলাম জাকারিয়া আল আনসারী (রা.) বলেন, ইসলাম দ্বারা অনন্ত সৌভাগ্য লাভের উদ্দেশ্যে আত্মশুদ্ধি ও চারিত্রিক উৎকর্ষ সাধনের প্রক্রিয়া এবং মানুষের জাহির ও বাতিন গঠন করা সম্পর্কে অবগত হওয়া যায়, তাকে ইলমে তাসাউফ বলা হয়। ইলমে শরিয়ত ও ইলমে মারেফাতকে অনেকে আলাদা করে দেখে। কিন্তু এ দুটি বিষয় অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এ প্রসঙ্গে আল্লামা আলী কারী (রা.) বলেন, শরিয়তের বিধি-বিধান যথাযথভাবে পালন না করলে মারিফাত লাভ যেমন সম্ভব নয়, তদ্রূপ ইলমে মারিফাতও সঠিকভাবে না শিখলে শরিয়তের হুকুম-আহকাম ঠিকমতো আদায় করা যায় না।

রসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি তার ইলম অনুযায়ী আমল করে, তাকে এমন জ্ঞানদান করা হয়, যা আগে তার অজানা ছিল। যা সে আমল করে, তিনি তার ভেতর তাকে তাওফিক দেন, যে পর্যন্ত তার জন্য জান্নাত অবধারিত না হয়। আর যে ব্যক্তি তার ইলম অনুযায়ী আমল করে না, সে তার ইলমের ভেতর ঘুরতে থাকে।

সে যা আমল করে, তার জন্য তিনি তাকে তাওফিক প্রদান করেন না, যে পর্যন্ত না জাহান্নাম তার জন্য নিশ্চিত হয়।’ রসুল (সা.)-এর এ কথার সমর্থনে মহান আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ! যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, তবে তিনি তোমাদের ন্যায়-অন্যায় পার্থক্য করার শক্তি প্রদান করবেন’ (সুরা আনফাল : ২৯)। প্রিয়নবী (সা.) আরো বলেন, ‘তোমরা মুমিনের ফিরাসাত অর্থাৎ প্রজ্ঞা ও অন্তর্দৃষ্টিকে ভয় করবে। কেননা সে আল্লাহর নূরের সাহায্যে দেখে থাকে’ (মেশকাত : ৫৫৬)। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ যার বক্ষকে ইসলামের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন, সে তার প্রতিপালকের প্রদত্ত আলোতে রয়েছে’ (সুরা জুমার : ২২)।

কোরআন ও হাদিসের অসংখ্য বর্ণনা রয়েছে, যার দ্বারা তাসাউফের সত্যতা প্রমাণিত হয়। তাছাড়া সাহাবায় কেরাম, হাক্কানী আলেম ও আউলিয়াদের জীবন থেকে সহজেই প্রতীয়মান হয় যে, তাসাউফ সত্য। সুতরাং আমাদের কর্তব্য তাসাউফকে ইনকার না করা এবং জীবনকে ইলমে মারিফাত তথা কুসংস্কার ও বিদআতমুক্ত রাখা। নিজেদের তাসাউফের আলোতে আলোকিত করার চেষ্টা করা। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দিন। আমিন।

লেখক : শিক্ষক, রসুলপুর জামিয়া ইসলামিয়া, ঢাকা

Wordbridge School
Link copied!