• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১
জেলা প্রশাসক সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী

১৫ হাজার মুক্তিযোদ্ধার বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হবে


নিজস্ব প্রতিবেদক জুলাই ১৫, ২০১৯, ০৮:১২ পিএম
১৫ হাজার মুক্তিযোদ্ধার বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হবে

ঢাকা: দেশের কৃতি সন্তান বীরমুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসনের জন্য ‘ভূমিহীন ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বাসস্থান নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে প্রথম পর্যায়ে সারা দেশে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ২৯৬২টি বাসস্থান নির্মাণ ও বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। অসহায় এবং আর্থিকভাবে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন সুবিধা দিতে দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও প্রায় ১৫ হাজার বাসস্থান নির্মাণে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। 

সোমবার (১৫ জুলাই) বেলা ১১টায় মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিষয়ে আলোচনাকালে তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, বাসস্থানের ডিজাইন সম্পন্ন করা হয়েছে এবং তা চূড়ান্ত অনুমোদন পর্যায়ে রয়েছে। আগামী ২০২০ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উপহার হিসেবে এসব বাড়ি প্রদান করা হবে। 

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলামের প্রস্তাবে মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী বলেন, দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত মুক্তিযোদ্ধাদের তাৎক্ষণিক বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা প্রদানের লক্ষ্যে সব উপজেলা সরকারি হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল, সরকারি মেডিকেল কলেজ ও বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোতে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত মুক্তিযোদ্ধারা বিশেষায়িত হাসপাতালগুলো থেকেও চিকিৎসাসেবা নিতে পারেন।

মন্ত্রী জানান, মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের নিদর্শন হিসেবে চট্টগ্রাম জেলার কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রটিতে স্বাধীনতা জাদুঘর প্রতিষ্ঠার জন্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

এ সময় যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট কর্তৃক যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মার্ট কার্ড বা পরিচয়পত্র দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মার্ট কার্ড বা পরিচয়পত্র দেয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক মো. আতাউল গনির এক প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে মন্ত্রী জানান, মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্সকে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্রে উন্নতীকরণের লক্ষ্যে ‘মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্র স্থাপন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রকল্পের ডিপিপি প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে। নকশা প্রণয়ণ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থান-স্থাপনাগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে বরিশালের জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমানের প্রস্তাবে মোজাম্মেল হক জানান, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থানগুলো সংস্কার ও সংরক্ষণের জন্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের মাধ্যমে ২টি প্রকল্প বর্তমানে চলমান রয়েছে।

‘মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থানগুলো সংক্ষণ ও মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সারা দেশে ৩৬০টি ঐতিহাসিক স্থান সংরক্ষণ ও স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ করা হবে। ইতিমধ্যে জুন ২০১৯ পর্যন্ত ২৮টি ঐতিহাসিক স্থানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে, ১১৩টি স্থানে কাজ চলমান আছে, ১১টি দরপত্র প্রক্রিয়াকরণের বিভিন্ন পর্যায়ে আছে, ২টির ডিজাইন/প্রাক্কলন করা হচ্ছে, ৩৪টির জমি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে দরপত্র প্রক্রিয়াকরণ করা যাচ্ছে না এবং ১৭২টি উপজেলায় এখনো জমি পাওয়া যায়নি।

মন্ত্রী আরও জানান, 'মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি স্থাপনাগুলো সংরক্ষণ ও পুনঃনির্মাণ' শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় পূর্বে নির্মাণ করা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ৩৪২টি স্থাপনা সংরক্ষণ ও পুনঃনির্মাণ করা হবে। ইতিমধ্যে চলতি বছরের জুনে ২২০টি স্মৃতি স্থাপনা সংরক্ষণ ও পুনঃনির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে, ৪০টি স্মৃতি স্থাপনার কাজ চলমান রয়েছে, ১০টির দরপত্র কার্যক্রম চলমান আছে, দ্বৈততা-স্থান সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ৭৬টি স্কিমের মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। চলমান প্রকল্প দুইটির বাইরেও যদি কোনো মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক স্মৃতিস্থাপনা থেকে থাকে তাহলে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পাওয়া গেলে পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে তা সংরক্ষণ ও মেরামত করা হবে।

প্রতিটি ইউনিয়নে একটি নির্দিষ্ট স্থানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কবরস্থান নির্মাণের প্রস্তাবে মন্ত্রী জানান, সব মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য একই ডিজাইনের কবর তৈরির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন থাকলেও কবরস্থান নির্মাণের কোনো কার্যক্রম বর্তমানে চলমান নেই। তবে প্রস্তাবটি বিবেচনা করা হবে।

মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই সংক্রান্ত অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বিভিন্ন সময়ে সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অথবা যাচাই বাছাই ছাড়াই মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে এ যাচাই-বাছাই কার্যক্রম চলমান আছে- যা অচিরেই সম্পন্ন হবে।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!