• ঢাকা
  • বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারি অফিসে ধর্মঘটে সরকার আতঙ্কিত হয়ে পড়ে


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৭, ১০:১১ এএম
সরকারি অফিসে ধর্মঘটে সরকার আতঙ্কিত হয়ে পড়ে

ঢাকা : উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার দাবিদার কতিপয় সন্ত্রাসী ১৯৪৭ সালের ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পলাশি ব্যারাক ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হোস্টেলে হামলা চালায়। এসব সন্ত্রাসী বাস ও ট্রাকে করে এসে হামলা চালিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ছাত্রসহ ১৭ জন আহত হয়। 

হামলার প্রতিবাদে ওইদিন বিকেলেই বিপুল সংখ্যক ছাত্র-জনতা পলাশি ব্যারাকে হাজির হয়। প্রথমে প্রতিবাদসভা পরে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। প্রতিবাদসভায় এই হামলার বিচার এবং বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে পরদিন ১৩ ডিসেম্বর সরকারি অফিসে ধর্মঘট আহ্বান করা হয়।

যথারীতি পরদিন সব সরকারি অফিসে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ধর্মঘট পালন করা হয়। স্বাধীন পাকিস্তানে এটাই ছিল সরকারি অফিসে প্রথম ধর্মঘট। ওইদিন আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা সচিবায়ের সামনে পিকেটিং করে। সরকারি কর্মচারীরা অফিস থেকে বের হয়ে আসেন এবং তাদের অনেকে পিকেটিংয়েও অংশ নেন। 

সরকার এতে ভীত হয়ে পড়ে এবং সেদিন থেকে পরবর্তী ১৫ দিন ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে। সরকারি অফিসে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ধর্মঘট পালিত হওয়ায় ভাষা আন্দেলনের নেতা-কর্মীদের মনোবল বেড়ে যায়। এই ঘটনার কয়েকদিন পর তমদ্দুন মজলিশের রাষ্ট্রভাষা সাব-কমিটি নামে প্রথম রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়।

সরকারি অফিসে ধর্মঘট পালনের ঘটনায় সরকার আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। তারা অনুমান করতে পারে, সরকারি কর্মচারীদের একটি বিপুল অংশ রাষ্ট্রভাষা বাংলার দিকে ঝুঁকছেন। এ অবস্থা চলতে থাকেল উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্টভাষা করা কঠিন হবে। এ অবস্থায় সরকারি কর্মচারীদের শায়েস্তা করার উদ্দেশ্যে এবং ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ১৯৪৭ সালের ২০ সেপ্টেম্বর সরকারি অফিসগুলোয় ‘সরকারি কর্মচারীদের আচরণ’ বিষয়ে একটি সাধারণ সার্কুলার জারি করা হয়। 

তাছাড়া ধর্মঘটের প্রতি সমর্থনদানের অজুহাতে অনেককে সতর্ককরণ নোটিশ প্রদান করা হয়। পরবর্তীকালে ভাষা সংগ্রামের আন্দোলনের মুখে সরকার সাময়িকভাবে ওই সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!