• ঢাকা
  • বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

নেতাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বললেন খালেদা 


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৭, ০১:০৫ পিএম
নেতাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বললেন খালেদা 

ঢাকা : নতুন নির্বাচন কমিশনকে নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর পরবর্তী কর্মপন্থা ঠিক করতে ধারাবাহিক বৈঠকের অংশ হিসেবে দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যিদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গুলশানের নিজের কার্যালয়ে গতকাল রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতের এই বৈঠকে ৭৩ সদস্যেপর উপদেষ্টা পরিষদের বাইরে কয়েকজন পেশাজীবী নেতাকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়।

স্থায়ী কমিটি ও ভাইস চেয়ারম্যাোনদের পর উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও বৈঠকে ছিলেন।

সাবেক সচিব কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে প্রশ্ন তুললেও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে যাচ্ছে বিএনপি। এ জন্য দলের সিনিয়র নেতাদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালোদা জিয়া। আর এলাকায় গিয়ে তাদের সভা-সমাবেশের পাশাপাশি জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোরও কথা বলেছেন তিনি। গত শনিবার রাতে গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলের ভাইস চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপারসন এ নির্দেশ দেন। 

দলীয় প্রধানের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেয়া ভাইস চেয়ারম্যানরা জানান, গত শনিবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।  টানা দুই ঘণ্টার বৈঠকে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বিএনপির পরবর্তী করণীয়, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন প্রসঙ্গ, এ কমিশনের অধীনে আগামী নির্বাচনে যাওয়া ঠিক হবে কি না, নির্বাচনকালীন ‘সহায়ক সরকার’ব্যবস্থা, ভবিষ্যতে কোন পলিসিতে এগোবে বিএনপি, দলকে শক্তিশালী করতে কোন কোন বিষয়ে জোর দিতে হবে এবং দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসনসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভাইস চেয়ারমম্যান বৈঠকের আলোচনার বিষয়ে বলেন, নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার নিরপেক্ষতা, তার বিগত দিনের কার্যক্রম, সিইসি হওয়ার পর ফুলেল শুভেচ্ছাপ্রাপ্তির ঘটনা নিয়ে বৈঠকে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক ভাইস চেয়ারম্যানই কথা বলেন। এ ছাড়া দেশের সার্বিক পরিস্থিতির ওপর আরেকটা সংবাদ সম্মেলন করা যায় কি না, সে বিষয়টি ভেবে দেখার জন্য চেয়ারপারসনকে পরামর্শ দেন। 

এদিকে দলীয় চেয়ারপারসনের ধারাবাহিক এ বৈঠক প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও দলের মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী জানান, সাবেক সচিব কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের পর দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি এবং ২০ দলীয় জোটের শরিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর ভাইস চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বসলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গত শনিবার রাতের এই বৈঠকে নতুন নির্বাচন কমিশন ছাড়াও দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং খালেদা জিয়ার মামলার সর্বশেষ অবস্থাসহ সাংগঠনিক নানা বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান রুহুল কবির রিজভী। 

বৈঠকে অনুপস্থিত বিএনপির ১৭ ভাইস চেয়ারম্যান: দলের ৩৬ জন ভাইস চেয়ারম্যানের মধ্যে গত শনিবারের বৈঠকে মাত্র ১৯ জন ভাইস চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন। এ বৈঠক চলাকালে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সিনিয়র নেতাদের আলোচনার মুখ্য বিষয়গুলো নোট করেন। প্রসঙ্গত, গত বছরের মার্চে অনুষ্ঠিত দলের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের পর নতুন কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যানদের সঙ্গে এটাই প্রথম বৈঠক ছিল বিএনপি চেয়ারপারসনের।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, প্রথম এ বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন দলের অন্যতম ভাইস চেয়ারম্যান বিচারপতি টি এইচ খান, এম মোর্শেদ খান, হারুন আর রশিদ, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, আবদুল্লাহ আল নোমান, রাবেয়া চৌধুরী, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, ড. এম ওসমান ফারুক, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আমিনুল হক ও নিতাই রায় চৌধুরী। এ ছাড়া বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান দীর্ঘদিন ধরে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে অবস্থান করছেন। আর সাদেক হোসেন খোকা যুক্তরাষ্ট্রে, বরকত উল্লা বুলু মালয়েশিয়ায়, শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে বেশ কয়েক বছর ধরে অবস্থান করছেন। তাদের বিরুদ্ধে দেশে একাধিক মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। এ ছাড়া সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু কারাগারে রয়েছেন এবং মোসাদ্দেক আলী ফালু পদত্যাগ করেছেন (যদিও তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়নি)। 

অন্যদিকে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে পরবর্তী দলীয় কৌশল নির্ধারণে ‘জরুরি’ এসব বৈঠক করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এরই অংশ হিসেবে গতকাল রোববার রাতে নিজের উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি। 

উপদেষ্টাদের মধ্যে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কবির হোসেন, হারুন আল রশীদ, লুৎফর রহমান খান আজাদ, আখতার হামিদ সিদ্দিকী, মনিরুল হক চৌধুরী, ফজলুর রহমান, আমানউল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, জয়নুল আবদীন ফারুক, গোলাম আকবর খোন্দকার, আবদুস সালাম, মশিউর রহমান, জয়নাল আবেদীন (ভিপি জয়নাল), আবুল খায়ের ভুঁইয়া, সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমি, কবির মুরাদ, হাবিবুর রহমান হাবিব, আতাউর রহমান ঢালী, নাজমুল হক নান্নু, মোহাম্মদ শাহজাদা মিয়া, একে মাহবুবুর রহমান, একরামুজ্জামান, হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু।

পেশাজীবীদের মধ্যে আ ন হ আখতার হোসেন, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, এ জে মোহাম্মদ আলী, জিয়াউর রহমান খান, আফজাল এইচ খান, তৈমুর আলম খন্দকার, বোরহান উদ্দিন, জাফরুল হাসান, সিরাজউদ্দিন আহমেদ, ফরহাদ হোসেন ডোনার, এস এম ফজলুল হক, সৈয়দ আলমগীর হোসেন, আমিনুল হক, খন্দকার আবদুল মুক্তাদির, সঞ্জিব চৌধুরী, এনামুল হক চৌধুরী, আবদুল কুদ্দুস, আবদুল হাই শিকদার এই বৈঠকে অংশ নেন।

সাবেক আমলাদের মধ্যে মুশফিকুর রহমান, আবদুল হালিম, খন্দকার শহিদুল ইসলাম, জহুরুল ইসলাম, ইসমাইল জবিউল্লাহ, সুজাউদ্দিন, এম এ কাউয়ুম, হায়দার আলী, আবদুর রশীদ সরকার, এম এ লতিফ, বিজন কান্তি সরকার বৈঠকে ছিলেন।

অধ্যাপিক শাহিদা রফিক, অধ্যাপিকা তাজমেরী ইসলাম, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, অধ্যাপক মামুন আহমেদ, অধ্যাপক শামসুল আলমও বৈঠকে অংশ নেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!