• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

নিরাপদ অবস্থানে সোহেল!


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ২৮, ২০১৭, ০৩:৫৭ পিএম
নিরাপদ অবস্থানে সোহেল!

ঢাকা: দলের ষষ্ঠ কাউন্সিলের এক বছর পরও ‘এক নেতার এক পদ’ নীতি বাস্তবায়ন করতে পরেনি বিএনপি। এই নীতি বাস্তবায়নে একাধিকার ‘ডেডলাইন’ দিলেও দৃশ্যমান কোনো আগ্রগতি নেই। এরই মধ্যে একাধিক পদে থাকতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ‘বিশেষ ক্ষমতা’র সুযোগ নিতে চায় কেউ কেউ।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দলের হাইকমান্ড নির্দেশ দেয় সম্প্রতি যাদের একাদিক পদ আছে তারা যে কোনো একটি রেখে বাকি পদগুলো ছেড়ে দেয়। এর জন্য ডেডলাইন বেঁধে দেয়া হয়। এ জন্য দলের ১৯ জন নেতাকে চিঠি পাঠানো হয়। তবে সবাই চিঠির উত্তর দিলেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

রুহুল কবির রিজভী দলের গুরুত্বপূর্ণ ‘সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব’ পদটি পাওয়ার পরও দপ্তর সম্পাদক-এর পদটি ছাড়েননি তিনি। এ নিয়ে দলের ভেতরে-বাইরে দীর্ঘদিন ধরে চলছে নানা আলোচনা, সমালোচা, অসন্তোষ ও হৈ-চৈ। এছাড়া বিএনপি ঘরোনার বুদ্ধিজীবী এবং পেশাজীবীরাও প্রকাশ্যে রুহুল কবির রিজভীর এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন পদ দখলের সমালোচনা করেন। তবুও এক অদৃশ্য কারণে সব কিছুই নীরবে সয়ে যাচ্ছেন রিজভী। এবার আর তিনি একা নন। সঙ্গে পেয়ে গেছেন আরেক যোগ্য সঙ্গী। তিনি দলের অন্যতম যুগ্ম মহাসচিব হাবীব-উন-নবী খান সোহেল। সম্প্রতি তাকে দেয়া হয়েছে ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) বিএনপির দায়িত্ব। এখন থেকে কেন্দ্রের যুগ্ম মহাসচিব পদটির পাশাপাশি বিএনপির মহাগুরুত্বপূর্ণ আরেকটি পদ ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) বিএনপির সভাপতিও তিনি।

এই যখন অবস্থা- তখন দলের ভেতরেই প্রশ্ন উঠছে, ‘এক নেতার এক পদ’ নীতিতে অন্যদের বেলায় কঠোর অবস্থান নিলেও রিজভী-সোহেলের ক্ষেত্রে এতোটা নমনীয় কেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া? এই দুই নেতাকে কেন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে বসালেন তিনি?

একটি সূত্র জানায়, হাবীব-উন-নবী খান সোহেলের বিষয়টি একটু ভিন্ন মাত্রার। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক এ সভাপতিকে অত্যন্ত স্নেহ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। পাশাপাশি সোহেলের সাংগঠনিক দক্ষতাকে দলের জন্য কাজে লাগাতে চান তিনি। তরুণদের নেতৃত্বে আনার মিশনে যাদেরকে তিনি যোগ্য মনে করেন, তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন হাবীব-উন-নবী খান সোহেল। দক্ষ এ সংগঠককে নিয়ে খালেদা জিয়ার পরিকল্পনাও নাকি দীর্ঘদিনের।

এছাড়া, সোহেলের মধ্যে ভবিষ্যৎ নেতৃত্বগুণ দেখে তরুণ বয়সে রংপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব করেছিলেন খালেদা জিয়া। এরই ধারাবাহিকতায় কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিবের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) বিএনপির সভাপতি করেছেন সোহেলকে। সর্বশেষ সোহেলের এই পদায়নের পর দলের চেয়ারপারসন সরে এসেছেন ‘এক নেতার এক পদ’ নীতির সিদ্ধান্ত থেকে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এক নেতার এক পদ’ নীতি তো দলের প্রয়োজনেই। আবার দলের প্রয়োজনেই যদি এ সিদ্ধান্তের নড়চড় করতে হয়, সেটি করার এখতিয়ার দলীয় প্রধান সংরক্ষণ করেন।

এ বিষয়ে গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ও বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বক্তব্য হলো, নিজে দুই পদে বহাল থেকে অন্যকে পদ ছাড়তে বলা অনৈতিক। তার মতে, এটাই বিএনপির সমস্যা। তিনি বলেন, বিশেষ বিবেচনা কখনো বিধান হতে পারে না। তা ছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসন দলের সবার নেত্রী। সুতরাং ওই বিবেচনা সবাই দাবি করতে পারেন।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!