• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

কোহলির সাফল্যের পেছনে ‘ধর্ষক’ রাম-রহিম


ক্রীড়া ডেস্ক আগস্ট ২৬, ২০১৭, ০৪:৪৬ পিএম
কোহলির সাফল্যের পেছনে ‘ধর্ষক’ রাম-রহিম

ঢাকা: রাম রহিম সিং। একজন গায়ক, অভিনেতা, নির্দেশক এবং লেখক। দাদাসাহেব ফালকেসহ দেশি বিদেশি অনেক পুরষ্কারও পেয়েছেন। সব থেকে বড় পরিচয় তিনি একজন ‘ধর্মগুরু’। তার বিরুদ্ধে রয়েছে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ। আর সে কারণেই তিনি বিতর্কিত। সম্প্রতি ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিতর্কিত এই ধর্মগুরুকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। শুক্রবার (২৫ আগস্ট) হরিয়ানার পাঁচকুলায় সিবিআই-এর বিশেষ আদালতে বাবা রাম রহিমকে দোষী সাবস্ত করেন বিচারক জগদীপ সিং। আচর্যের বিষয় হলো এই গুরুই নাকি টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়ক বিরাট কোহলির সাফল্যের কারণ।

এই ‘ধর্ষক গুরু’র কাছে ট্রেনিং নিয়েই না কি ক্রিকেট বিশ্ব মাতাচ্ছেন বিরাট কোহলি। বছর খানেক আগে একটি অনুষ্ঠানে এমটাই দাবী করেছিল বাবা রাম রহিম।

জাতীয় দলে তখনও অভিষেক হয়নি কোহলির। দিল্লির হয়ে রঞ্জি ট্রফি খেলার সময় সতীর্থ আশিস নেহেরা ও বিজয় দাহিয়ার সঙ্গে ডেরা সাচা সৌদা প্রধানের আশির্বাদ নিতে গিয়েছিলেন কোহলি। বাবা রাম রহিমের সঙ্গে বর্তমানে ভারত অধিনায়কের ছবিও দেখা গেছে। ছবিতে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে, তার আশির্বাদ নিচ্ছেন বিরাট।

বিরাট সম্পর্কে এক সাক্ষাৎকারে রাম রহিম বলেন, ‘বিরাট যখন বড় রান পাচ্ছিল না, তখন একবার আমার কাছে আসে। আমি ওকে নিয়মিত প্র্যাকটিস ও অবিরাম শেখার পরামর্শ দিই। ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পর বিরাট আমাকে ধন্যবাদ জানিয়েছিল। ’ বাবা রাম রহিম আগেও নানা অপরাধমূলক কাজে যুক্ত ছিল। তার বিরুদ্ধে হত্যা এবং ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে অনেকবার।

শুধু বিরাট কোহলি বা আশিস নেহেরা নয়, দেশের বক্সিং তারকা বিজেন্দ্রে সিং-কেও বাবা রাম রহিমের সঙ্গে একই মঞ্চে দেখা গেছে। গত বছর এক সাক্ষাৎকারে বাবা রাম রহিম দাবি করেছিল, ‘জীবনে আমি প্রচুর সাফল্য পেয়েছি। জাতীয় স্তরে আমি ৩২ রকমের খেলায় অংশ নিয়েছি। পরে কোচিংও করিয়েছি। প্রচুর তরুণ আমার কাছে আসত। যেমন বক্সার বিজেন্দ্রর সিং, যে দেশকে অনেক পদক দিয়েছে। বিজেন্দ্রর ও কোহলি আমার কাছে শিখতে আসত। এখন কোহলি বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার।

২০০২ সালে এক শিষ্য রাম রহিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীকে চিঠি লেখেন। চিঠিতে ওই শিষ্য অভিযোগ করেন, অন্য শিষ্যদেরও হরিয়ানার সিরসায় ডেরা চত্বরে একাধিক বার ধর্ষণ করেন। পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট সিবিআইকে রাম রহিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা রুজু করতে নির্দেশ দেয়।

রাম রহিমের দুই শিষ্যর মধ্যে একজন সিবিআইকে গোপন জবানবন্দিতে জানান, তিনি ডেরা প্রধানের চেম্বারে ঢোকার পরই দরজা বন্ধ হয়ে যায়। এবং তিনি দেখেন রাম রহিম বড় স্ক্রিনে পর্নোগ্রাফি ছবি দেখছেন।  

প্রসঙ্গত, বিতর্কিত ধর্মগুরু রাম রহিম সিংয়ের সাজাকে কেন্দ্র করে ভারতের পাঁচটি রাজ্যে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। হরিয়ানা, পাঞ্জাব, দিল্লি, উত্তর প্রদেশ ও হিমাচল প্রদেশের বিভিন্ন শহরে গুরুভক্তদের সঙ্গে নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩২ জন নিহত হয়েছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় জারি করা হয়েছে কারফিউ।

সিবিআই-এর বিশেষ আদালতে এদিন রায় ঘোষণা হতেই আদলত চত্বরের দখল নেয় সেনা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাইরে প্রস্তুত ছিল পুলিশও। তবু অশান্তি রোখা যায়নি। লাঠি চালিয়ে, কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়েও পাঁচকুলার পরিস্থিতি পুলিশ নিয়ন্ত্রণে ঘাম ছুটে যায় পুলিশের। পঞ্জাব এবং হরিয়ানার বিভিন্ন জায়গা গোলমালে মারা যায় বেশ কয়েকজন।

ইতিমধ্যেই দু’টি রেলস্টেশনে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে ক্ষিপ্ত ডেরা অনুগামীরা। দু’টি থানাতেও আগুন হয়েছে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে টেলিফোন এক্সচেঞ্জ। ডেরা সচ্চা সৌদার সদর দফতর সিরসায় এবং পাঁচকুলায় ডেরা অনুগামীদের হাতে সংবাদমাধ্যমও প্রবল ভাবে আক্রান্ত হয়েছে বলে খবর। বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেলের ওবি ভ্যান জ্বালিয়ে দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!