• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভক্তের স্ত্রীদেরও কাছে রাখতো গুরমিত


আন্তর্জাতিক ডেস্ক আগস্ট ২৮, ২০১৭, ০১:০৬ পিএম
ভক্তের স্ত্রীদেরও কাছে রাখতো গুরমিত

ফাইল ছবি

ঢাকা: দুই নারী ভক্তকে ধর্ষণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আজ সাজা দেয়া হবে ভারতের বিতর্কিত ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিম সিং-কে। এর পর থেকেই একের পর এক বের হয়ে আসছে অপকীর্তির কাহিনী। নারীলোভী এই ধর্মগুরুর নিজের পালক মেয়ে হানিপ্রীত ইনসানের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। এরইমধ্যে অপর এক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেছেন, তার স্ত্রীকেও ‘চুরি করেছিলেন’ গুরুবাবা।

দিন মজুর কমলেশ রায়গড় জানান, ২০১৫ সালে স্ত্রীকে নিয়ে গুরুর সাক্ষাতে যান তিনি। সংসারের অভাব, অশান্তি এসব কাটিয়ে গুরুর আশীর্বাদের আশায় রাজস্থানের জয়পুর থেকে হরিয়ানার সির্সায় পাড়ি দিয়েছিলেন কমলেশ। গুরু গুরমিত রাম রহিমের সাক্ষাতও পান তিনি। ২৪ থেকে ২৮ মার্চ ডেরা সচ্চা সৌদার সদর দপ্তরের আশ্রমে থেকে ভেবেছিলেন, দেখা যখন হলো, এবার ফিরে আসবেন জয়পুরে। কিন্তু ২৮ তারিখ সকালে ভেতর থেকে ডাক পড়ে কমলেশের স্ত্রী গুড্ডির। এক সেবক এসে কমলেশকে বলে, ‘ডেরার সেবা করতে তোমার বৌ তাতে স্থান পেয়েছে। সে ভাগ্যবতী।’

কমলেশও যেতে দেন স্ত্রীকে। ভেবেছিলেন, ভালোই হলো। গুরুর নজরে কপাল ফিরবে। কিন্তু আসলে কপাল পুড়েছিল। দুইদিন পরও গুড্ডি না ফেরায় কমলেশ খোঁজ নিতে যান ডেরার কর্মকর্তাদের কাছে। তাকে বলা হয়, ‘বৌ ভালো আছে। তুমি এখন বাড়ি যাও। ঠিক সময়ে গুড্ডি ফিরে যাবে।’ কমলেশ যান সির্সা থানায়। সেখানে বলা হয়, ‘যেখান থেকে এসেছ, সেখানেই অভিযোগ করো।’ চার ও ছয় বছরের ছেলেকে নিয়ে রাজস্থানে ফেরেন কমলেশ। জয়পুরের জহওর সার্কেল থানায় ডেরা ও তার প্রধান গুরমিতের বিরুদ্ধে মামলা দেন তিনি।

শুরু হয় তদন্ত। কিন্তু তদন্তকারী অফিসারদেরই গা-ছাড়া মনোভাব দেখে আদালতের দ্বারস্থ হন কমলেশ। তার আইনজীবী বাবুলাল বৈরোয়া বলেন, ‘প্রভাব খাটিয়ে তদন্ত হালকা করার চেষ্টা করছিল ডেরা। ২০১৫ সালের ২১ মে আদালতে শুনানির দুইদিন আগে কমলেশকে অপহরণ করে ডেরার সন্ত্রাসীরা। এরপর কোনোরকমে মুক্তি পান তিনি। বেশ কয়েকবার স্ত্রীকে খুঁজতে গেলেও লাভ হয়নি কোনো। এখনো নিজের স্ত্রীকে ফিরে পাননি তিনি।

কমলেশের আশা, রাম রহিমের সাজা হলে মুক্তি পাবে তার স্ত্রী। এভাবে আরো অসংখ্য নারীকে ডেরায় নিয়ে তাদের আটকে রাখা, সেবাদাসী বানানো এবং তাদের ধর্ষণের অভিযোগ আছে ভারতের বিতর্কিত এই ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে। আজ সোমবার তার মামলার রায় দেবে আদালত। ধারণা করা হচ্ছে, সাত বছরের কারাদণ্ড হতে পারে রাম রহিমের।

বিতর্কিত এই ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে ২০১১ সালে আরো গুরুতর অভি‌যোগ করেছিলেন তার দত্তক কন্যা হানিপ্রীতের স্বামী বিশ্বাস গুপ্তা। তার অভি‌যোগ ছিল, পালক কন্যা হানিপ্রীতের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে ডেরা সচ সওদার প্রধান গুরমিতের। নিজের পাপ ঢাকতে হানিপ্রীতকে দত্তক নিয়েছিলেন।

গুপ্তা বিশ্বাসের জানিয়েছিলেন, ২০১১ সালে একবার তিনি আশ্রমে বাবার গুফায় গিয়েছিলেন। ঘরের দরজা খোলা ছিল। উঁকি মেরে দেখতেই স্তম্ভিত হয়েছিলেন। আপত্তিকর অবস্থায় ছিলেন রাম রহিম ও তার স্ত্রী হানিপ্রীত। বিশ্বাস গুপ্তা জানিয়েছেন, ১৯৯৯ সালে ফতেহাবাদে তাদের বিয়ে হয়েছিল। রাম রহিম ‌যদি হানিপ্রীতকে দত্তক নিয়ে থাকেন, তাহলে উনি আমাকে সঙ্গে থাকতে দেন না কেন? প্রশ্ন তুলেছিলেন বিশ্বাস। ২০১১ সালে তিনি রাম রহিমের বিরুদ্ধে মামলাও করেছিলেন। তবে পরে আদালতের বাইরে আলোচনার মাধ্যমে মামলার নিষ্পত্তি করে নেন। 

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!