• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

দেবী দুর্গার মাহাত্ম সরাসরি দেখাবে কৃষিবিদ ইন্সটিটিউট! 


জগেশ রায়, জবি প্রতিনিধি সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৭, ০৬:২৪ পিএম
দেবী দুর্গার মাহাত্ম সরাসরি দেখাবে কৃষিবিদ ইন্সটিটিউট! 

ঢাকা: প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বাংলাদেশে সনাতনধর্ম্বাবলীরা দেবী দুর্গার মাহাত্মের বর্ণনার জন্য পূজা আর্চনার আয়োজন করছে। ঢাকা নগরীর প্রধান তিনটি পূজামণ্ডপ ঢাকেশ্বরী জাতীয় পূজা মণ্ডপ, বনানী পূজা মণ্ডপ ও কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে সব চেয়ে বড় ও ঝাকঝমকভাবে পূজা আর্চনার আয়োজন করেছে। 

এর মধ্যে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে সনাতন সমাজ কল্যাণ সংঘের (সসকস) আয়োজনে ভিন্নমাত্রা যোগ করবে বলে আয়োজকদের দাবি। তারা দেবী দুর্গার মাহাত্ম্য ইলেক্ট্রনিক বাতি, মোটরে প্রবাহিত লাল জলের সাহায্যে সরাসরি দেখাবে। সসকসের পূজা মণ্ডপটি ভারতের বেলুর মঠের মত করে সাজানো হচ্ছে। 

শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সরেজমিনে মণ্ডপ প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। মৃৎ শিল্পীরা জানান, পূজা মণ্ডপে দুই সেট প্রতিমা স্থাপন করা হবে। মাটির তৈরীর প্রতিমা মূল বেদীতে ও ককসেটের তৈরীর প্রতিমা পূজা মণ্ডপের সামনের দেওয়ালে স্থাপন করা হবে।

ককসেটের প্রতিমার শিল্পীরা প্রতিমা সেটের বিভিন্ন অংশ মূল বেদীর দক্ষিণ পাশে বসে ককসেট কেটে কেটে, দেবী দূর্গা গণেশ, কার্তিক, মহাদেব, সরস্বতী, লক্ষ্মী, মহিষাসুরের অবয়ব দিচ্ছেন। সাড়ে তিন মাস ধরে এ পূজা মণ্ডপের সাজ সজ্জার কাজ করছেন শিল্পীরা। তারা ভারতের শ্রী শ্রী স্বামী বিবেকানন্দের আশ্রম বেলুড় মঠের মত করে এ মন্দির প্রাঙ্গন সাজাচ্ছেন। 

তাদের কাজে সরাসরি ভারতের শিল্পীরা সহযোগিতা করছেন বলে জানা গেছে। দ্রুত কাজ শেষ করার লক্ষ্যে চব্বিশ ঘণ্টাই কাজ চলছে। লক্ষ্য চব্বিশ তারিখের মধ্যে সব কাজ শেষ করা। পুরো মণ্ডপের নকশার কাজ তত্ত্বাবধান করছেন চারু শিল্পী উত্তম রায়। 

কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে দেবী দুর্গার মাহাত্ম ইলেক্ট্রিক বাতি, মোটরের সাহায্য প্রবাহিত লাল জলের মাধ্যমে দেবী দুর্গার মাহাত্ম লাইফ দেখানো হবে। দেবী দুর্গার এক হাতে মহিষাসুর বধের রক্তাক্ত খড়গ, অন্য হাতে মহিষাসুরের খণ্ডিত মস্তক থাকবে। দেবী দুর্গা মহিষাসুরের উপর পা দিয়ে দণ্ডায়মান থাকবে। 

দেবীর পায়ের নিচে কর্তিত মহিষাসুরের ঘাড় থেকে লাল পানি রক্তের মত করে প্রবাহিত হবে। এ কাজে মোটর ও রাবারের টিউবের মাধ্যমে মহিষাসুরের ভিতর দিয়ে লাল পানি ঘাড় দিয়ে বের করা হবে। মহিষাসুর থেকে প্রবাহিত রক্ত বেদীতে পড়া মাত্র দেবী দুর্গা কালী রুপে পান করবে। যা কালির মুখ দিয়ে টিউবের সাহায্যে দেবীর জিহ্বা দিয়ে শুষে নিবে। ফলে আর মহিষাসুর জন্মাতে পারবে না। এ দৃশ্যটি চক্রারে বারবার চলতে থাকবে। 

জানতে চাইল সনাতন সমাজ কল্যাণ সংঘের সভাপতি কৃষিবিদ সমির চন্দ্র সোনালি নিউজকে বলেন, ঢাকা শহরে ২৮ বছর পূর্বে ঢাকেশ্বরী জাতীয় জাদুঘর, রাম কৃষ্ণ মিশন ও সনাতন সমাজ কল্যাণ সংঘ ঝাকঝমকপূর্ণভাবে দুর্গতি নাশিনী দেবী দুর্গার পূজার আয়োজন করে আসছে। বলতে গেলে ঢাকার প্রাচীনতম পূজা মণ্ডপ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণ। 

আমরা গতবার প্রতিমা প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হয়েছিলাম। আশা করছি এবার প্রথম হব। ভক্ত সাধারণেরা জেনে খুশি হবে, স্বামী বিবেকাননন্দ আশ্রমের বেলুড় মঠের মত কনে মন্দিরের অবয়ব করা হচ্ছে। এবার দুটি প্রতিমা সেটে মন্দিরের পূজা মণ্ডপ সাজানো হবে।

তিনি আরো বলেন, দুর্গতি নাশিনী দুর্গা দেবী মহিষাসুর বধ করে বিশ্বে শান্তি আনেন। কিন্তু কাজটা সহজে সম্ভব ছিল না। দেবী দুর্গার যতবার মহিষাসুরকে আঘাতে যত ফোটা রক্ত বের হয়, তত সংখ্যক নতুন করে মহিষাসুর জন্ম নেয়। 

দেবকুলে মহিষাসুরকে দ্রুত বধ করতে কালী দেবীর জন্ম। যতটুকু রক্ত পড়ে ততটুকু দেবী কালি জিহ্বা দিয়ে শুষে নেয়। পুরাণের মাঙ্গলিক ক্রিড়ার পাশাপাশি কৃর্তি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। 

তিনি অরও বলেন, সবকিছু মিলে দেশে পূজার আয়োজনে আমরা প্রথম হবো বলে প্রত্যাশা করি। এ কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করছি। 

প্রসঙ্গত, ২৬ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে দুর্গা পূজা শুরু হয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর বিজয়া দশমীর প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে সনাতন ধর্মালম্বীদের দুর্গোৎসব সমাপ্ত হবে। 

সোনালীনিউজ/জেএ

Wordbridge School
Link copied!