• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

ফেডারেশন কাপ কার, ঢাকা আবাহনী না বসুন্ধরা কিংস?


ক্রীড়া প্রতিবেদক নভেম্বর ২২, ২০১৮, ০৮:৩৭ পিএম
ফেডারেশন কাপ কার, ঢাকা আবাহনী না বসুন্ধরা কিংস?

ছবি: বাফুফের সৌজন্যে

ঢাকা: ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ৩০তম আসরের ফাইনাল হতে যাচ্ছে শুক্রবার (২৩ নভেম্বর)। এদিন বিকাল সাড়ে ৪ টায় বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী এবং নবাগত বসুন্ধরা কিংস। নতুন আর পুরাতন দুই দলের শিরোপা লড়াইটি সরাসরি সম্প্রচার করবে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল নাইন।  

উভয় দলের সামনেই রয়েছে ইতিহাসে নাম লেখানোর হাতছানি। ফেডারেশন কাপে গত দুই আসরে টানা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ঢাকা আবাহনী। এবার জিতলে হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হবে দলটি। অবশ্য এর আগেও একবার হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারা। সেই হিসাবে প্রথম দল হিসেবে দ্বিতীয়বার হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়নের স্বাদ পাবে তারা। তাছাড়া টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত ১০ বার করে চ্যাম্পিয়ন হয়ে সমান অবস্থানে মোহামেডান ও আবাহনী। তাই এবার জিতলে ১১ বার শিরোপা জয়ী দল হিসাবে সাবার উপরে থাকবে আবাহনীর নাম।

অপরদিকে প্রথমবার ফেডারেশন কাপে নাম লিখিয়ে ফাইনালে উঠেছে বসুন্ধরা কিংস। তাই জিতলেই অভিষেকেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ইতিহাস গড়বে নবাগত দলটি। থাকবে এএফসি কাপে খেলার সুযোগ। কারণ ফেডারেশন কাপ চ্যাম্পিয়নরা খেলবে এএফসির ক্লাব কাপে।

সেই লক্ষ্য সামনে রেখে মৌসুমের প্রথম এই টুর্নামেন্টের শিরোপা জয়ের অঙ্গিকার করেছে ঢাকা আবাহনী এবং নবাগত বসুন্ধরা কিংসের কোচ ও অধিনায়ক। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ভবনে অনুষ্ঠিত ফাইনাল ম্যাচপুর্ব সংবাদ সম্মেলনে উভয় দলের কোচ ও অধিনায়করা নিজেদের প্রস্তুতি ও লক্ষ্যের কথা জানান।  

শুরুতেই ঢাকা আবাহনীর কোচ জাকারিয়া বাবু বলেন, ‘আবাহনী ক্লাবের মূল টার্গেটই থাকে চ্যাম্পিয়ন হওয়া। কালকের (শুক্রবার) ফাইনালের জন্য আমরা প্রস্তুত। স্বাভাবিক নিয়মে আবাহনী আবাহনীর জায়গায় চলে এসেছে। আশা করি গত দুই ম্যাচের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে এবারও শিরোপা জিততে পারব।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আক্রমনে যাওয়া খেলার একটা পার্ট। আলাদা কোনো বিভাগ নিয়ে আমি কাজ করছি না। খেলোয়াড়দেও প্রতি আমার আত্ববিশ্বাস আছে। ফাইনালে অন্য দলের মতো বসুন্ধরাকে একই প্রতিপক্ষ ভাবছি। আলাদাভাবে চিন্তা করছি না। স্বাভাবিক নিয়মেই আমরা খেলবো।’

বসুন্ধরা কিংসের বিদেশী খেলোয়াড় কলিনড্রেসকে নিয়ে আলাদা পারিকল্পনা  আছে কিনা? এমন প্রশ্নে জাকারিয়া বাবু বলেন, ‘আমার কোনো স্পেশাল নজর নেই। আগের ম্যাচের মতো আমারা খেলোয়াড়রা যেভাবে দ্বায়িত্ব পালণ করেছে, আশা করি ফাইনালেও সেটা করতে পারবে। আর আমার কোনো ট্রাম্পকার্ড নেই। এগারজন খেলোয়াড়ই আমার ট্রাম্পকার্ড।’

কলিনড্রেস না সানডে কাকে এগিয়ে রাখছেন ‘আমি সানডেকে এগিয়ে রাখছি। আমি মনে করি সানডে তার স্বাভাবিক খেলায় ফিওে আসছে। শেষ দুই ম্যাচে সে গোল পেয়েছে। আমি কাউকে হুমকি মনে করি না। তারা এগারজন খেলবে আমারও সমান খেলোয়াড় খেলবে। জার্সি পরলে সবাই এক, কে বিশ্বকাপ খেলল আর নে খেলল তা বড় কথা নয়। আমি আলাদাভাবে কাউকে ভয় পায় না।’

প্রতি পক্ষ বসুন্ধরা কিংস প্রসঙ্গে ঢাকা আবাহনীর কোচ ‘আমি শুরুতেই বলেছি, ফুটবল খেলতে গেলে প্রতিপক্ষ লাগেহ আমি সেরকমই মনে করছি। আলাদা কোনো পরিকল্পনা নেই আমার। আমি নিশ্চয়ই আমার ক্লাবকেই ফেবারিট মনে করছি। শেষ দুটো ম্যাচে আমরা দুর্দান্ত খেলছি। আরামবার্গে সঙ্গে গোল হজম করেও ঘুওে দাঁড়িয়ে আমরা জিতেছি। কোয়ার্টার ফাইনালে ৩-২ এ জিতেছি। শেষ ম্যাচে আধিথপত্য বিস্তার করে খেলেই জিতেছি। ধারাবাকিভাবে ভাল খেলে আমরা ফাইনালে ওঠেছি। কাউকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।’

অধিনায়ক শহিদুল আলম সোহেল বলেন, ‘বরাবরের মতো আমরা আরেকটি ফাইনালে। আগের ম্যাচগুলো যেভাবে খেলে  আস ছি ফাইনালেও সেরকম খেলতে চাই। আসলে এটা আমার প্রথম ফাইনাল না। বিগত ১০ বছওে আমি আবাহনীর হয়ে খেলছি। দলকে অনেকবার শিরোপা জিতিয়েছি। কালকের ফাইনাল নিয়ে আমার ঘাবড়ানোর কোনো কিছু নেই। আমি মনে করি প্রতিপক্ষ কে সেটা বিষয় না। আমি শুধু বলটা ফোকাস করব।’

বসুন্ধরা কিংসের কোচ আবু ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘বসুন্ধরা কিংসের একটাই স্লোগান সেটা হলো বল ফর বিট। আমাদেও লক্ষ্যই ছিল চ্যাম্পিয়ন হবো। গ্রুপ পর্ব থেকে ভাল খেলার চেষ্টা করেছি। গ্রুপে দুটি ম্যাচ সমস্যা হলেও আমরা এখন ফাইনালে ওঠেছি। ভাল খেলে ঢাকা আবাহনীর মতো জায়ান্ট দলকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হতে চাই।’

অধিনায়ক তৌহিদুল আলম সবুজ বলেন, ‘আগামীকাল ফাইনাল ম্যাচ। আমাদের প্রধান টার্গেটই হলো চ্যাম্পিয়ন হওয়া। নতুন দল হলেও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য বসুন্ধরা দল গড়েছে। শিরোপা থেকে মাত্র এক ধাপ দূওে আমরা। আশা করি ফাইনালে শিরোপা জিতে অফিসিয়ালদেও মন রক্ষা করতে পারব। ফেডারেশন কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে এএফসি কাপে খেলব।’

সানডে না কলিনড্রেস কাকে এগিয়ে রাখবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কলিনড্রেসকে এগিয়ে রাখব। কলিনড্রেক গুরুত্বপূর্ন খেলোয়াড়। সে গোল বানিয়ে দিতে পারে। এই জন্যই আমি তাকে এগিয়ে রাখব। আর সানডেও ভাল খেলোয়াড়। গোল করার দিক দিয়ে সানডে ভাল।’

বসুন্ধরা কিংসের অধিনায়ক বলেন, ‘ঢাকা আবাহনী বড় টিম। তাদের খেলোয়াড় ভাল। বিদেশিরাও ভাল। আমাদেও লোকাল খেলোয়াড়রা অনেক ভাল। শেষ ম্যাচে আমাদেও দু’জন বিদেশি খেলোয়াড় ছিল না।  সেমিফাইনালে আপনারা দেখেছেন পার্থক্য গড়ে দিয়েছে স্থানীয় খেলোয়াড়। তাদের স্থানীয়দেও চেয়ে আমাদেও ভাল।’

তিনি আরও জানান, ‘আমি চোটের কারণে ম্যাচের শুরুতে ছিলাম না। এরপর নেমে গোল করেছি। এই জন্য ভাল লাগছে। কাল শুরু একাদশে নাও খেলতে পারি।’

উল্লেখ্য, রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলা কোস্টারিকান তারকা দানিয়েল কলিনড্রেস খেলছেন বসুন্ধরা কিংসের হয়ে। এরইমধ্যে যুগ্মভাবে ঢাকা আবাহনীর সানডে চিজোবার সঙ্গে চারটি করে গোল করেছেন তিনি। তবে কার দল জিতবে শিরোপা? কে হবেন সর্বোচ্চ গোলদাতা? সেটি জানা জাবে শুক্রবার বিকালে অনুষ্ঠিতব্য ফাইনালে। সেখানে এই দুই ফরোয়ার্ডের দিকে আলাদা দৃষ্টি থাকবে দর্শকদের।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!