• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
স্ত্রীর পরকীয়ায় ডাক্তারের আত্মহত্যা

ও মা তুমি মাফ করে দিও, তোমার স্বপ্ন পূরণ করতে পারলাম না


চট্টগ্রাম প্রতিনিধি জানুয়ারি ৩১, ২০১৯, ০৩:৩৯ পিএম
ও মা তুমি মাফ করে দিও, তোমার স্বপ্ন পূরণ করতে পারলাম না

চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম নগরীর নিজ বাসা থেকে ডা. মোস্তফা মোরশেদ আকাশ (৩২) নামে এক চিকিৎসকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ স্ত্রীর পরকীয়ায় অভিমান করে আত্মহত্যা করেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মোস্তফা মোরশেদ আকাশ।

বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল ৬টার দিকে চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার দুই নম্বর সড়কের ২০ নম্বরে নিজ বাসা থেকে ওই চিকিৎসকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত আকাশ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার বরকল এলাকার মৃত আবদুস সবুরের ছেলে। তিনি এমবিবিএস শেষ করে এফসিপিএস পড়ছিলেন।

মৃত্যুর আগে ওই চিকিৎসক তার ফেসবুক আইডিতে স্ত্রীর পরকীয়া নিয়ে একাধিক পোস্ট করেছেন। ওইসব পোস্টে স্ত্রীকে নিয়ে তার চরম হতাশার কথা ফুটে উঠে।

চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ পরিদর্শক (এএসআই) আলাউদ্দিন তালুকদার জানান, চমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ছিলেন ডা. আকাশ। চান্দগাঁও আবাসিকের বাসা থেকে স্বজনরা গুরুতর অবস্থায় তাকে চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আত্মহত্যা করা চিকিৎসকের ফেসবুক আইডি থেকে পাওয়া ছবি (স্ত্রী মিতুর সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তে ডা. আকাশ)

ইনসুলিনের সাহায্যে ডা. আকাশ আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন চিকিৎসকরা। ডা. আকাশ নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আমার সাথে তানজিলা হক চৌধুরী মিতুর ২০০৯ সাল থেকে পরিচয়। প্রচণ্ড ভালবাসি ওকে। ও নিজেও আমাকে অনেক ভালবাসে। আমরা ঘুরে বেড়াই, প্রেম করে বেড়াই। আমাদের ভালবাসা কম বেশি সবাই জানে। অনেকে বউ পাগলাও ডাকতো। আমি তো বেঁচে থেকেও মৃত হয়ে গেলাম।

আরেক স্ট্যাটাসে ডা. আকাশ লেখেন ‘তারপর ক্ষমা চাইলো শবে কদরের রাতে, কান্না করে পা ধরে আর কখনো এমন হবে না। আমিও ক্ষমা করে দিয়ে ১ বছর ভাল ভাবেই সংসার করলাম। তারপর ও দেশের বাইরে আমেরিকা গেল। মাঝখানে একবার ঈদ পালন করতে আসল, সেপ্টেম্বরে ২০১৮ আবার চলে গেল ইউএসএমএলই এর প্রিপারেশন নিচ্ছিল। ফেব্রুয়ারি ২০১৯ এ আমার ইউএসএ যাওয়ার কথা।  আমি বারবার বলছি আমাকে ভাল না লাগলে ছেড়ে দাও কিন্তু চিট করো না মিথ্যা বল না।’

‘আমার ভালবাসা সবসময় ওর জন্য ১০০% ছিল। আমি আর সহ্য করতে পারিনি। আমাদের দেশে তো ভালবাসায় চিটিং এর শান্তি নেই। তাই আমিই বিচার করলাম আর আমি চিরশান্তির পথ বেছে নিলাম।

সর্বশেষ ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছিলেন ‘ভাল থেক আমার ভালবাসা তোমার প্রেমিকদের নিয়ে।’

আরেকটি স্ট্যাটাসে তিনি মাকে উদ্দেশ্য করে লিখেছিলেন ‘ও মা তুমি মাফ করে দিও তোমার স্বপ্ন পূরণ করতে পারলাম না। মায়ের ভালবাসার কখনো তুলনা চলে না’।

জানা গেছে, চন্দনাইশ উপজেলার বরকল বাংলাবাজার এলাকার মৃত আবদুস সবুরের ছেলে ডা. আকাশের সঙ্গে তানজিলা চৌধুরী মিতুর পরিচয় ২০০৯ সাল থেকে। ২০১৬ সালে তাদের প্রেমরূপ নেয় বৈবাহিক সম্পর্কে।

ডা. আকাশের ভাই অসীম জানান, আমার ভাইকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে নিয়ে গেছে তার স্ত্রী মিতু। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ থেকে পাশ করা ওই মেয়ের একাধিক ছেলের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক ছিলো। এসব বিষয় আমার ভাই মেনে নিতে পারেনি। যার ফলে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট পাওয়ার পর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হবে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!