• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

রাস্তা ছাড়াই সরকারি ব্রিজ, বাড়ি করবেন আ.লীগ নেতা


লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৪, ০৮:৩৮ পিএম
রাস্তা ছাড়াই সরকারি ব্রিজ, বাড়ি করবেন আ.লীগ নেতা

ছবি প্রতিনিধি

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে বিপরীত পাশে রাস্তা ছাড়াই সরকারি বরাদ্দে খালের ওপর একটি ব্রিজ (ছোট) নির্মাণ করা হয়েছে। জনস্বার্থে ব্রিজের বরাদ্দ হলেও ঘটনা ঘটছে বিপরীত। সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য (মেম্বার) মাহবুবুর রহমান রাজু সেখানে বাড়ি করবেন বলেই ব্রিজটি করিয়েছেন। কাজের আগেই বিল পেয়ে যাওয়ায় কেউ কোন সমস্যা করতে পারবে না বলেও দাবি জানালেন রাজু। 

সরেজমিনে মান্দারী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের রতনপুর এলাকায় গিয়ে রাস্তা ছাড়াই খালি স্থানে ব্রিজটি দেখা যায়। ব্রিজের এক পাশে মান্দারী-দত্তপাড়া সড়ক থাকলেও অন্য পাশে বিশাল ক্ষেত। এ ব্রিজ জনস্বার্থে ব্যবহারেরও সুযোগ নেই। ব্রিজের বিপরীত পাশের খালি জমিতে বাড়ি করার উদ্দেশ্যে সীমানা দিয়ে রাখছেন ইউপি সদস্য রাজু। 

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক স্থানীয় ৩ জন বাসিন্দা জানায়, ইউপি সদস্য রাজুর এলাকা রতনপুর গ্রামের অনেক স্থানে বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে হচ্ছে জনসাধারণকে। কিন্তু তার সেদিকে লক্ষ্য নেয়। ঘটনাস্থলে খালের নালার পাশে তাঁর জমি রয়েছে। সেখানে তিনি বাড়ি করবেন। এজন্যই তিনি সরকারি বরাদ্দের টাকায় একটি ব্রিজ নির্মাণ করেছেন। জনসাধারণ কখনোই এ ব্রিজ ব্যবহার করতে পারবে না। ব্যক্তিগত স্বার্থেই রাজু ব্রিজটি করিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট কার্যালয় সূত্র জানা যায়, ২০২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসকের বরাবর লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শাহজাহান কামালের বরাদ্দে উন্নয়নমূলক কাজের চিঠি ইস্যু করা হয়। এটি ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) কর্মসূচির আওতায় ১ম কিস্তির প্রকল্প ছিল। ২০২৩ সালের ৩ আগস্ট দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর কর্তৃক স্মারক প্রদান করা হয়। ওই তালিকার ২৯ নম্বরে মান্দারী স্কুল রোড হারুনের বাড়ির পাশে ব্রি নির্মাণে ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ইস্যুকৃত ওই চিঠিতে ১৪ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন সই করেন।

আওয়ামী লীগ নেতা ও মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) মাহবুবুর রহমান রাজু বলেন, আমিতো কাজ করেছি। অনেকে কাজ না করেই বিল উত্তোলন করে নিয়ে যান। তাদের নিয়ে কোন সংবাদ হয় না। এখন আমারটা নিয়ে মাতামাতি কেন।

বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সদর উপজেলা কার্যালয়ের সামনে ক্ষিপ্ত হয়ে জনসম্মুখে ইউপি সদস্য রাজু বলেন, কাজের আগেই আমি বিল পেয়ে গেছি। পিআইও আমাকে বিল দিয়ে দিয়েছেন। নিউজ করে কোন লাভ নেই।

সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি ব্রিজটির প্রকল্প পরিবর্তন করার জন্য। কিন্তু বরাদ্দটি সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শাহজাহান কামালের ছিল। উনি মারা গেছেন। তাঁর স্বাক্ষর ছাড়া পরিবর্তনের সুযোগ নেই। আর কাজ না করে বিল নেওয়ারও সুযোগ নেই।

ওয়াইএ

Wordbridge School
Link copied!