• ঢাকা
  • বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

১ বছরেও ওঠেনি পুঁজিবাজারের ফ্লোর প্রাইস


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ২, ২০২৩, ১২:৪১ পিএম
১ বছরেও ওঠেনি পুঁজিবাজারের ফ্লোর প্রাইস

ঢাকা : দেশের পুঁজিবাজারে দ্বিতীয় দফায় ফ্লোর প্রাইস আরোপ করা হয় ২০২২ সালের ৩১ জুলাই। যার মেয়াদ ইতোমধ্যে এক বছর পূর্ণ হয়েছে। এরই মধ্যে এক দফায় ১৬৯টি কোম্পানির সর্বনিম্ন শেয়ারদর বা ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতেও দরপতন অব্যাহত থাকায় পুনরায় তা আরোপ করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এতে দীর্ঘ এক বছর সময় আটকে আছেন অনেক বিনিয়োগকারী।

২০২২ সালে দেশে যখন প্রথমবার ফ্লোর প্রাইস আরোপ করা হয়েছিল তখন প্রায় সব বিনিয়োগকারীই ফ্লোর প্রাইসকে আশীর্বাদ হিসেবে নিয়েছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় বা চলমান ফ্লোর প্রাইসের বিপক্ষেও অবস্থান নিয়েছেন কোনো কোনো বিনিয়োগকারী। তবে এখনও ফ্লোরের পক্ষে অবস্থান নেওয়া বিনিয়োগকারীদের সংখ্যাই বড়। এদিকে বাজার-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বাজার বিশ্লেষক, এমনকি স্টক এক্সচেঞ্জকেও ফ্লোর প্রাইসের বিপক্ষে অবস্থান নিতে দেখা গেছে। অনেক সংগঠনের পক্ষ থেকে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পুঁজি রক্ষার কথা বলে বহাল রাখার সিদ্ধান্তে অটল ছিল বিএসইসি। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ার‍ম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ফ্লোর প্রাইস বহাল রাখার পেছনে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পুঁজি রক্ষাকেই কারণ হিসেবে তুলে ধরেছেন।

ফ্লোর প্রাইসের বছরপূর্তির পর এ বিষয়ে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ‘যতদিন পর্যন্ত সাধারণ মানুষের পুঁজি রক্ষা নিয়ে সংকট থাকবে ততদিন ফ্লোর প্রাইস থাকবে। বাজারের গতিবিধি নজরদারি করা হচ্ছে, পরিস্থিতি অনূকূলে এলে ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে নেওয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৭৫টি স্টক এখন নিয়মিত ফ্লোর প্রাইসের ওপরে লেনদেন হচ্ছে, যা বাজারের অবস্থান অনেকটা ভালোর দিকে বলেও ইঙ্গিত করছে।’

২০২২ সালের ৩১ জুলাই ফ্লোর প্রাইস আরোপের দিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক বেড়েছিল ১৫৩ পয়েন্ট। পরের দুই মাস আগস্ট ও সেপ্টেম্বরজুড়ে পুঁজিবাজার অনেকটা ইতিবাচক ও গতিশীল থাকলেও তা ধরে রাখতে পারেনি বাজার। ফলে আবারও ফ্লোর প্রাইসে আটকে যায় বেশিরভাগ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর।

২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত ফ্লোর প্রাইস বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গতকাল সোমবার দিন শেষে ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের সংখ্যা ছিল ২২৩টি। অথচ গত বছর ২৫ সেপ্টেম্বর সর্বমোট ১৭২টি কোম্পানি ফ্লোর প্রাইসে লেনদেন হয়েছিল। কিন্তু এরপরে এই সংখ্যা বেড়েছে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত। এরপর কয়েক দফায় কিছুটা কমলেও সময়ের ব্যবধানে আবারও বাড়ছে। ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর সর্বমোট ৩১০টি কোম্পানি ফ্লোর প্রাইসে ট্রেড হয়েছে, যা ডিএসইর মূল মার্কেটে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ৭৫ শতাংশের ওপর।

চলমান এই ফ্লোর প্রাইসের মধ্যেই গত ২২ ডিসেম্বর ১৬৯টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। ওই আদেশে বলা হয়েছিল, চলতি বছরের ২৮ জুলাই জারি করা ফ্লোর প্রাইস আরোপ সংক্রান্ত নির্দেশনা ১৬৯টি কোম্পানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। এ কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দর কমার ক্ষেত্রে ১ শতাংশ সার্কিট ব্রেকার আরোপ করা হয়েছে। এতে এক দিনে সর্বোচ্চ ১ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারবে এসব শেয়ারের দর। কিন্তু এতেও শেয়ারের দর অব্যাহতভাবে হারাতে থাকলে ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে বিএসইসি। ২ মার্চ থেকে আগের পাঁচ দিনের ভারিত গড় মূল্যকে ভিত্তি ধরে নতুন ফ্লোর প্রাইস আরোপ করা হয়।

২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের খবরে পুঁজিবাজারে যে ধস নামে, সে সময় ১৯ মার্চ বিএসইসি প্রথমবারের মতো ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে। তবে সেই উদ্যোগ সফলও হয়েছিল। ৬৬ কর্মদিবস সাধারণ ছুটি শেষে ২০২০ সালের মে মাস থেকে পুঁজিবাজার উত্থানে ফেরে। ২০২১ সালের ৭ এপ্রিল প্রথমবারের মতো ৬৬টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করে এক দিনে সেগুলোর দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ করা হয়। দ্বিতীয় ধাপে ৩ জুন প্রত্যাহার করা হয় আরও ৩০টি কোম্পানির ফ্লোর। এই ৯৬টি কোম্পানির চিত্র পর্যালোচনা করে ১৭ জুন ফ্লোর প্রাইস পুরোপুরি তুলে দেওয়া হয়।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!