ছবি: সোনালীনিউজ
ভোরের আলো ফোটার ঠিক আগে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাতের নিস্তব্ধতা আর নির্বাচনী উত্তেজনার ক্লান্তি মিশ্রিত অবস্থায় ঘোষণা করা হলো এক ঐতিহাসিক ফলাফল। দীর্ঘ ৪৪ বছরের অপেক্ষার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে (চাকসু) ইসলামী ছাত্রশিবির নেতৃত্বে ফিরে এসেছে।
সংগঠনটির সমর্থিত প্যানেল ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ ভিপি ও জিএসসহ ২৪টি পদে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করে ক্যাম্পাসের রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। এই প্রত্যাবর্তন শুধু একটি সংগঠনের জয় নয়, বরং দীর্ঘ ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের রায় প্রতিফলিত করেছে।
নবনির্বাচিত সহ-সভাপতি (ভিপি) মো. ইব্রাহিম হোসেন বলেন, এই নির্বাচনে কেউ পরাজিত হননি। সবাই বিজয়ী হয়েছেন। আমরা নির্বাচনে বিভিন্ন প্রার্থীকে সৃজনশীল চিন্তা প্রকাশ করতে দেখেছি। শিক্ষার্থীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, যে দায়িত্ব শিক্ষার্থীরা আমাদের ওপর দিয়েছেন, তা আমরা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পালন করব।
নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সাঈদ বিন হাবিব বলেন, আমাদের প্রথম কাজ হলো ইশতেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া।
ভিপি পদে মো. ইব্রাহিম হোসেন ৭ হাজার ৯৮৩ ভোটে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের সাজ্জাদ হোসেন পেয়েছেন ৪ হাজার ৩৭৪ ভোট। জিএস পদে সাঈদ বিন হাবিব ৮ হাজার ৩১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. শাফায়াত পেয়েছেন ২ হাজার ৭৩৪ ভোট।
চাকসুর ২৬টি পদের মধ্যে ছাত্রদল প্যানেল থেকে একমাত্র জয় পেয়েছেন আইয়ুবুর রহমান। সহ-খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে তামান্না মাহবুব জয়ী হয়েছেন।
ছাত্রশিবির সর্বশেষ জয় পেয়েছিল ১৯৮১ সালের নির্বাচনে। এরপর ৪৪ বছর ধরে ক্যাম্পাসে তাদের প্রকাশ্য কার্যক্রম বন্ধ ছিল। দীর্ঘ নীরবতার পর গত বছরের আগস্টে তারা রাজনীতিতে ফিরে আসে এবং মাত্র এক বছরের মাথায় চাকসু নির্বাচনে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করে।
১৯৭০ সাল থেকে চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে মাত্র সাতবার। ২৭ হাজার ৫১৬ জন ভোটারের মধ্যে ৬৫ শতাংশ শিক্ষার্থী তাদের রায় প্রদান করেছেন। পাঁচটি অনুষদ ভবনের ৭০০টি বুথে ভোটগ্রহণ হয়েছে।
এসএইচ
আপনার মতামত লিখুন :