পাকিস্তানে প্রবল বৃষ্টিতে ১৮০ জনের মৃত্যু

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ২০, ২০২৫, ১১:৫৭ এএম
পাকিস্তানে প্রবল বৃষ্টিতে ১৮০ জনের মৃত্যু

ঢাকা : পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশজুড়ে টানা ভারী বর্ষণে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৫ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০০ জন। জুনের শেষ দিক থেকে শুরু হওয়া এই মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে এখন পর্যন্ত দেশব্যাপী মৃতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ১৮০ জনে দাঁড়িয়েছে। পাঞ্জাব প্রাদেশিক কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় বার্তা সংস্থা আল জাজিরা।

ভারী বৃষ্টিতে প্রদেশের পূর্বাঞ্চলীয় রাজধানী লাহোরে ১৫ জন, ফয়সালাবাদে ৯ জন এবং কৃষিপ্রধান শহর ওকারা, সাহিওয়াল ও পাকপত্তনে আরও কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে।

দক্ষিণাঞ্চলের নদীর ধারে অবস্থিত গ্রামগুলো থেকে সকালেই উদ্ধারকারী দলগুলো নৌকার মাধ্যমে লোকজনকে সরিয়ে নিয়েছে, তবে দুপুর নাগাদ পানি নামতে শুরু করে।

লাডিয়ান গ্রামের ৫১ বছর বয়সী এক কৃষক তারিক মাহবুব ভাট্টি বলেন, “বাচ্চারা সাহায্যের জন্য চিৎকার করছিল, আর মহিলারা ছাদে দাঁড়িয়ে ওড়না নেড়ে উদ্ধারের আকুতি জানাচ্ছিল।”

রাজধানী ইসলামাবাদের পাশ্ববর্তী শহর রাওয়ালপিন্ডির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নাল্লা লাই নদীর আশপাশে বসবাসরত নিচু এলাকার বাসিন্দাদের পানি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার এক নারী মুখপাত্র জানান, “উদ্ধার দলগুলো আরও লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত অবস্থায় রয়েছে।”

রাওয়ালপিন্ডি সরকার বৃহস্পতিবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করে যাতে মানুষ ঘরে থাকে।

আল জাজিরার কামাল হায়দার পাঞ্জাবের চাকওয়াল জেলা থেকে জানিয়েছেন, “ভারি বৃষ্টিপাত ব্যাপক ক্ষতি এবং প্রাণহানির কারণ হচ্ছে” পাঞ্জাব জুড়ে।

তিনি আরও বলেন, “বৃষ্টির তোড়ে ছোট ছোট বাঁধ ভেঙে গেছে,” এবং সেনাবাহিনী হেলিকপ্টারের মাধ্যমে এখন পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধারে নিয়োজিত রয়েছে।

“গত কয়েক বছর ধরেই পাকিস্তানে বিধ্বংসী বন্যা দেখা যাচ্ছে। এবারের মৌসুমি বৃষ্টিপাতও তার ব্যতিক্রম নয়,” যোগ করেন হায়দার। তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে ভবিষ্যতে দেশটি আরও চরম আবহাওয়ার মুখোমুখি হতে পারে।

পাঞ্জাব প্রদেশে জুনের শেষ থেকে শুরু হওয়া মৌসুমি বৃষ্টিপাতে এখন পর্যন্ত ১০৩ জন নিহত এবং ৩৯৩ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া ১২০টিরও বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ছয়টি গবাদিপশু মারা গেছে।

উত্তরের শহর মাঙ্গলায় ঝেলাম নদীতে পানির প্রবাহ বিপজ্জনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সেখানে উচ্চ বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান আবহাওয়া অধিদপ্তর। কর্তৃপক্ষ সতর্ক করেছে, আশপাশের ছোট খাল ও নদীগুলোও আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উপচে পড়তে পারে, যা আশপাশের জনপদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

মৌসুমি বৃষ্টিপাত দক্ষিণ এশিয়ার জলবায়ুর একটি স্বাভাবিক অংশ এবং এটি ফসল চাষ ও পানির উৎস পুনরায় পূরণে গুরুত্বপূর্ণ। তবে, নগরায়নের দ্রুত প্রসার, অপর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্রমবর্ধমান চরম আবহাওয়ার কারণে এর নেতিবাচক প্রভাব সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আরও বেড়ে গেছে।

পিএস

Link copied!