• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

সরকারি কর্মচারিদের ৯ম পে-স্কেল ঘোষণার ৮ যৌক্তিকতা


নিউজ ডেস্ক জানুয়ারি ৭, ২০২২, ১২:৪০ পিএম
সরকারি কর্মচারিদের ৯ম পে-স্কেল ঘোষণার ৮ যৌক্তিকতা

ঢাকা : ২০১৫ সালে প্রদত্ত ৮ম পে-স্কেল সংশোধন করে ৯ম পে-স্কেল ঘোষণার মাধ্যমে বেতন বৈষম্য নিরসন করে গ্রেড অনুযায়ী বেতন স্কেলের পার্থক্য সমহারে নির্ধারণ ও গ্রেড সংখ্যা কমাতে হবে।

সরকারি কর্মচারী তথা ১১-২০ গ্রেডের স্টাফদের ৮ দফা দাবির বাস্তবায়নে তাগিদের পেছনে যৌক্তিতা।

প্রথমত, ৭ম পে-স্কেল থেকে ৮ম পে-স্কেলে টাকা অংকে বৈষম্যের পরিমাণ বেড়েছে। ১-১০ গ্রেডে গ্রেডভিত্তিক ব্যবধানের হার সর্বনিম্ন ২.২২% ও সর্বোচ্চ ৯.৬০% যাহা ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারিদের ক্ষেত্রে স্পষ্ট বৈষম্য।

দ্বিতীয়ত, একই শিক্ষা গত যোগ্যতায় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে নিয়োগের ক্ষেত্রে বেতন গ্রেড ও পদ মর্যাদায় বৈষম্য সৃষ্টি হয়। তাহা নিরসনে আমাদের এই দাবি।

তৃতীয়ত, ১-১০ গ্রেডে যাহারা চাকরি করে, তাহারা একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর পদোন্নতি পেয়ে থাকেন; কিন্তু ১১-২০ গ্রেডে চাকরিজীবীরা ১৫/২০ বছরে, অনেকে ব্লক পেস্টের কারণে সারা জীবনেও পদোন্নতি পান না বা পদোন্নতি পেলেও গ্রেডে ভিত্তিক বেতন বৈষম্যের কারণে আর্থিক ভাবে লাভবান হন না। তাই নির্ধারিত ৫ বছর পরপর পদোন্নতি বা পদের স্বল্পতায় তাহা সম্ভব না হলে উচ্চতর গ্রেড প্রদান করলে কর্মচারীরা উৎসাহিত হবে ও সরকারের কাজ আরও গতিশীল হবে।

চতুর্থত, ২০১৫ সালের ৮ম পে-স্কেলের মাধ্যমে টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাতিল করা হয়। পূর্বে কোন চাকরিজীবী নিয়মিত পদোন্নতি না পেলেও ৪ বৎসর পূর্তিতে সিলেকশন গ্রেড পেতেন। এছাড়া ৮, ১২, ১৫ বছর পূর্তিতে টাইম স্কেল পেতেন। কিন্তু ২০১৫ সালের নতুন পে স্কেলে প্রদত্ত উচ্চতর গ্রেড নামক প্রহসন করে (১০ বছর ও ১৬ বছর চাকরি করে বেতন মাত্র ১০ টাকা বাড়ে) উক্ত টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাতিল করা হয়।

পঞ্চমত, এই শিক্ষাগত যোগ্যতায় একই পদবি অর্থাৎ ১৬তম গ্রেড এর অফিস সহকারী/ অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে (একই ক্যাটাগরি/ সমস্কেলের পদসমূহ) নিয়েঅগের পর সচিবালয়ে কর্মরত থাকিলে পদোন্নতিতে ১০ গ্রেডে প্রধান সহকারী পর্যন্ত/ সমমানে পদোন্নতি পেয়েও তুলনামূলক ভাবে লাভবান হয় না (এইরূপ ১১-২০ গ্রেডের সকল পদ)।

ষষ্ঠত, ২০১৫ সালের ৮ম পেস্কেলে চিকিৎসা ভাতা ১৫০০/-, যাতায়াত ভাতা ৩০০/-, টিফিন ভাতা ২০০/- নির্ধারণ করা হয়। যাহার দ্বারা ১ মাসের চিকিৎসা খরচ, অফিসে যাতায়াত, দুপুরের নাস্তা, সন্তানের লেখাপড়া ও পোষাকের পরিচ্ছন্নতা করা একেবারেই অসম্ভব। তাই বর্তমানে চিকিৎসা ভাতা ৫০০০/-, যাতায়াত ভাতা ৩০০০/-, টিফিন ভাতা ৩০০০/- শিক্ষা সহায়ক ভাতা ২০০০/-, ধোলাই ভাতা ক্ষেত্র বিশেষে ১০০০/-, ঝুঁকিপূণ নিয়োজিতদের মূল বেতনের ৩০% ঝুঁকি ভাতা, মাঠ পর্যায়ে কর্মরতদের ২০% মাঠ ভাতা ও বাড়ি ভাড়া ভাতা ৮০%, বৈশাখী ভাতা ২০% এর স্থলে ১০০% ও বিজয় দিবস ভাতা চালু করার যৌক্তিক দাবি জানাচ্ছি।

সপ্তমত, বর্তমান বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের জীবন চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। উচ্চ গ্রেড বেতন প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সাথে নিম্ন গ্রেডে বেতন প্রাপ্ত কর্মচারীদের একই বাজার ব্যবস্থায় বাজার করতে গিয়ে অসম প্রতিযোগিতার সম্মুখিন হতে হচ্ছে। এমতাবস্থায় বিশেষ বিশেষ সরকারী সংস্থা (সামরিক বাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, আনসার) সদস্যদের ন্যায় ন্যায্যমূল্যে মান সম্মত রেশন প্রদানের অনুরোধ জানাচ্ছি। একজন ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারী চাকুরী হইতে অবসর গ্রহণের পর যে পরিমাণ গ্র্যাচুইটি ও পেনশন আহরণ করেন, তাহা অবসর পরবর্তী জীবন যাত্রার জন্য অপ্রতুল। তাই আনুতোষিকের পরিমাণ ৯০% এর স্থলে ১০০% প্রদান ও গ্র্যাচুইটি ১ টাকায় ২৩০ টাকার স্থলে ৫০০ টাকা প্রদানের অনুরোধ জানাচ্ছি।

অষ্টমত, ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের কাজের ধরন একই হওয়া সত্ত্বেও (যেমন অফিস সহকারী/ অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, উচ্চমান সহকারী, প্রধান সহকারী, স্টেনো টাইপিস্ট) ভিন্ন ভিন্ন পদবী আবার একই পদবী হওয়া সত্ত্বেও বিভিন্ন দপ্তরে বিভিন্ন গ্রেডে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে থাকে। এসকল কর্মচারীদের ক্ষেত্রে আর্থিক সুযোগ সুবিধা প্রাপ্তিতেও বিভিন্ন প্রকার অসংগতি রয়েছে।

উপরোক্ত যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নের মাধ্যমে কর্মচারীদের সন্তুষ্টি, জীবন মান উন্নয়ন ও সরকারি কাজে গতি আনা সম্ভব বলে ১১-২০ গ্রেডের সরকারি চাকুরিজীবীদের সম্মিলিত অধিকার আদায় ফোরাম মনে করে।  সূত্র: কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!