• ঢাকা
  • বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

সড়কের ৬ উৎসে দুর্নীতি ঠেকাতে দুদকের ৭ সুপারিশ


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ৩১, ২০২২, ০৪:৪৮ পিএম
সড়কের ৬ উৎসে দুর্নীতি ঠেকাতে দুদকের ৭ সুপারিশ

ঢাকা: বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সেক্টরে ৬টি উৎসে দুর্নীতির ঘটনা ঘটছে। এই দুর্নীতি ঠেকাতে ৭ দফা সুপারিশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসকল সুপারিশমালার বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে সংস্থাটি। দুদক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো চিঠিতে দুদক সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, রেজিস্ট্রেশনের সময় যানবাহনের যথাযথ পরীক্ষা করে রেজিস্ট্রেশন করার বিধান থাকলেও যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে অনেক সময় বাস্তবে যানবাহন না দেখে অবৈধ অর্থের বিনিময়ে রেজিস্ট্রেশন করে দেয়া হয়। রেজিস্ট্রেশনের সাথে সংশ্লিষ্টগণ অবৈধ সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে। এতে রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়।

যানবাহনের ফিটনেস সনদ দেওয়ায় সময় পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই অবৈধ অর্থের বিনিময়ে ফিটনেস সনদ দেয়া হয়। রেজিস্ট্রেশনের সাথে সংশ্লিষ্টগণ সেবা গ্রহিতার নিকট থেকে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে।

ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদনকারীদের পরীক্ষার তারিখ উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিলম্বিত করা হয়, যাতে আবেদনকারীরা দালালের খপ্পরে পড়ে বা দালাল ধরতে বাধ্য হয়। এতে দালালের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশনের সাথে সংশ্লিষ্টগণ সেবা গ্রহিতার নিকট থেকে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে। লাইসেন্স আবেদনকারীদের পরীক্ষায় শুধুমাত্র টাকার বিনিময়েও পাশ দেখিয়ে দেয়।

একই কর্মচারীকে একাধিক ডেস্কে দায়িত্ব দিয়ে সেবা প্রদান কার্যক্রমে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দালালদের অবৈধ দৌরাত্বের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়। ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে সকল তথ্য সংগ্রহের পরেও তা সরবরাহে দীর্ঘ সময় নেওয়া হয়। আবেদনকারীরা জরুরী প্রয়োজনে দালালের খপ্পরে পড়ে বা দালাল ধরতে বাধ্য হয়। যানবাহনের প্রকৃত মালিকের পরিচয় না জেনে/রেজিস্ট্রেশন সনদ প্রদান করা। এতে কালো টাকার মালিকগণ বেনামিতে গাড়ি কেনার সুযোগ পাচ্ছে। তারা রেজিস্ট্রেশনের সাথে সংশ্লিষ্টগণের সহযোগিতায় নিজের পরিচয় গোপন রেখে অবৈধ অর্থে বিলাসী জীবন যাপন করছে।

এই দুর্নীতি প্রতিরোধে ৭ দফা সুপারিশ করে দুদক। সুপারিশগুলো হলো, গ্রাহকবৃন্দ যাতে কোন প্রকার বিড়ম্বনা ছাড়া সেবা গ্রহণ করতে পারে সে বিষয়ে একটি ডিজিটালাইজড তথ্য কেন্দ্র প্রয়োজন। ইলেকট্রনিক স্কুলের মাধ্যমে শুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও নির্দেশনা প্রদর্শন করার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তথ্য প্রত্যেক সেবা গ্রহীতাকে একটি টোকেন নম্বর দিবে, যাতে সে সংশ্লিষ্ট বুধের সাথে সংযুক্ত হয়ে যাবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়ার মত অন-লাইন আবেদন গ্রহণ করা যেতে পারে। মোটরযান পরিদর্শন পরবর্তী আবেদন গ্রহণ ডেস্কে সার্বক্ষণিকভাবে একজন কর্মচারী আবেদন গ্রহণের জন্য উপস্থিত রাখতে হবে। সিসিটিভি পর্যবেক্ষণ জোরদার করতে হবে।

ফিটনেস পরিদর্শন পরবর্তী কার্যক্রম দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করতে হবে ও যথাযথভাবে গাড়ি পরিদর্শন সাপেক্ষে ত্রুটিমুক্ত গাড়িসমূহ ফিটনেস প্রদান করতে হবে। লাইসেন্স নবায়ন শাখায় ন্যূনতম তিনজন লোক পদায়ন করলে আবেদন নিষ্পত্তিতে স্বল্প সময় লাগবে। ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফিঙ্গার প্রিন্ট ও বায়োমেট্রিক্স গ্রহণের পরে সর্বোচ্চ এক মাসের মধ্যে ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহ করা উচিত। বেনামী গাড়ি রেজিস্ট্রেশন হলে অবৈধ গাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বর্তমানে বিআরটিএ'র কোন আইনী ব্যবস্থা নেই। এ বিষয়ে আইন প্রয়োগের সুযোগ থাকা প্রয়োজন।

ফিটনেস, রেট্রো রিফ্লেকটিভ নাম্বার প্লেট, ডিজিটাল ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রভৃতি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রস্তুত করতে বিলম্বের কারণে অনেক সময় সরবরাহ করতে দেরি হয়। তাছাড়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অনেক সময় যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে না ও মানসম্পন্ন কাগজ/বস্তু ব্যবহার করে না। তাই ঠিকাদারের কাজে আরো নজরদারী বাড়ানো প্রয়োজন।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারী বদলীর ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট বদলীর নীতিমালা করা প্রয়োজন। বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র ছাড়া লটারীর মাধ্যমে বদলীর ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ প্রদান করা যেতে পারে।

সোনালীনিউজ/এসআই/আইএ

Wordbridge School
Link copied!