ঢাকা : মুজিববর্ষ উপলক্ষে মানবিক কারণে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছেন এক আইনজীবী।
মঙ্গলবার (১০ মার্চ) সকালে ডাকযোগে আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এই আবেদন পাঠান। ‘অসুস্থতার কথা বিবেচনা করে’ খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে অনুরোধ করেন এ আইনজীবী।
মুজিববর্ষে মানবিক কারণে সংবিধানের প্রস্তাবনা, ১১, ৪৮(৩), ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফের জন্য রাষ্ট্রপতি বরাবর আবেদন করেছেন সুপ্রিম কোর্টের ওই আইনজীবী।
এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য মুক্তি চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন করেছে তার পরিবার। গত বুধবার খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর এ চিঠি দেন। খালেদা জিয়ার অনুমতি নিয়েই এই চিঠি দেয়া হয়েছে বলে খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম জানিয়েছে।
এসময় তিনি আরো বলেন, এটা আমরা আমাদের পারিবারিক সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে করছি। এখানে দলের বা তার আইনজীবীদের কোনো মতামত নেয়া হয়নি। সেটা তাদের রাজনৈতিক ব্যাপার। স্বজন হিসেবে আমরা তার সুচিকিৎসার জন্য সরকারের কাছে তার প্যারল বা সাময়িক মুক্তির আবেদন জানিয়েছি। তিনি খুবই অসুস্থ।
জানা গেছে, খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে সরকার ও বিএনপি এবং তার পরিবারের মধ্যে একটা সমঝোতা চলছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। জামিনে বিদেশে যাবেন খালেদা জিয়া এমন শর্তে পুনরায় হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। ২৭ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিন আবেদনে নতুন কোনো কারণ না পাওয়ায় কথা জানিয়ে তা খারিজ করে দেন। এর ফলে আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার মুক্তির পথ সঙ্কুচিত হয়ে যায়। ফের সামনে চলে আসে প্যারোলের বিষয়টি। এমন পরিস্থিতিতে পরিবারের পক্ষ থেকে তার সাময়িক মুক্তি চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এতে খালেদা জিয়ার সম্মতিও রয়েছে।
এর আগে পরিবারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে বিএসএমএমইউ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বরাবর একটি চিঠি দেয়া হয়। খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, তার অবস্থা খুবই খারাপ। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়া প্রয়োজন।
পরিবারের পক্ষ থেকে তার চিকিৎসা ব্যয় বহন করা হবে বলেও চিঠিতে বলা হয়েছে। জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে বন্দি আছেন খালেদা জিয়া।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দণ্ডিত হওয়ার পর তাকে নেয়া হয় পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে। কয়েক দফায় সেখান থেকে এনে তাকে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসা দেয়া হয়। সর্বশেষ গত বছর ১ এপ্রিল খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে সেখানেই চিকিৎসাধীন তিনি।
সবশেষ সোমবার (৯ মার্চ) বেগম খালেদা জিয়ার সাময়িক মুক্তির আবেদন আইন মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি জানান, খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি বিচার বিভাগের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে, তাঁর সাময়িক মুক্তির আবেদন আইন মন্ত্রনালয়ে মতামতের জন্য পাঠানো হয়েছে।
সোনালীনিউজ/এএস
আপনার মতামত লিখুন :