ঢাকা : রাজধানীর দক্ষিণখানে চাঞ্চল্যকর স্ত্রী ও দুই সন্তান হত্যাকাণ্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছে আসামি রকিব উদ্দিন আহম্মেদ।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কে সি মডেল স্কুলের পেছনে প্রেমবাগান এলাকায় রকিব উদ্দিনের বাসা থেকে তার স্ত্রী মুন্নী বেগম (৩৭), ছেলে ফোরকান উদ্দিন (১২) ও মেয়ে লাইভার (৪)-এর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পলাতক ছিলেন রকিব উদ্দিন। অবশেষে গত সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ লাইনের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করে ডিবি।
আসামির স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর ডিবি (উত্তর) জানায়, রকিব উদ্দিন ঘটনার আগের রাতে হিন্দি কোনো চ্যানেলে ঋণে জর্জরিত হয়ে কীভাবে স্বামী তার স্ত্রী ও সন্তানদের হত্যা করে সেই দৃশ্য দেখেছিল। পরদিন ১২ ফেব্রুয়ারি সকালে ঘুম থেকে উঠে সে অনুযায়ী স্ত্রী ও সন্তানদের হত্যার পরিকল্পনা করে সে।
হিন্দি চ্যানেলের ওই দৃশ্যের মতো সেও হাতুড়ি দিয়ে ঘুমন্ত স্ত্রী মুন্নী রহমানের মাথায় আঘাত করতে থাকে। স্ত্রী নিস্তেজ হওয়ার পর পাশের রুমে বড় ছেলে ফারহানের কাছে যায়। মশারির ফিতা দিয়ে তার গলায় ফাঁস লাগানোর চেষ্টা করে। এ সময় ছেলে বাধা দেয়ার চেষ্টা করে এবং বলে- বাবা কেন তুমি আমাকে ফাঁসি দিচ্ছো। এরপর আর কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে গলায় ফিতা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে রকিব। ছেলের মরদেহ সেই ঘরে ফেলে রেখে নিথর মায়ের পাশে ঘুমন্ত মেয়ে লাইভারকে গলাটিপে হত্যা করে।
হত্যার পর রকিব তার বাসায় বসে ডায়েরিতে নিজের হাতে লেখে, ‘আজ থেকে তোমাদের মুক্তি দিয়ে গেলাম। আমাকে পাওয়া যাবে রেললাইনে।’ এরপর বাইরে থেকে বাসায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনার পরদিন মরদেহগুলোর ময়নাতদন্ত শেষে রাতে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়। পরে ওই রাতেই নিহত মুন্নী রহমানের বড় ভাই মুন্না রহমান দক্ষিণখান থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় একমাত্র আসামি করা হয় নিখোঁজ রকিব উদ্দিন আহম্মেদকে। তার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর থানার ভাতশালী গ্রামে।
সোনালীনিউজ/এএস
আপনার মতামত লিখুন :