মানিকগঞ্জ : রাঙামাটিতে পাহাড় ধসে নিহতদের উদ্ধার করতে গিয়ে মাটিচাঁপা পড়ে লাশ হয়েছেন চার সেনাসদস্য। এদের মধ্যে নিহত মেজর মাহফুজুর রহমানের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার তালেবপুর ইউনিয়নের ইরতা গ্রামে। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মানিকছড়ি ক্যাম্পে মেজর হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা মোজাম্মেল হোসেন ও বেনি বেগমের ছেলে মাহফুজ ছোটবেলা থেকেই ঢাকায় থাকতেন। সেখানেই তিনি বড় হয়েছেন। বিয়েও করেছেন ঢাকাতেই। তার স্ত্রী ও পাঁচ বছর বয়সী এক ছেলে রয়েছে।
মেজর মাহফুজ ১৯৮১ সালের ১৬ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। ‘সমরে আমরা শান্তিতে আমরা সর্বত্রই আমরা দেশের তরে’- এই স্লোগানকে বুকে ধারণ করে দেশের সেবা করতে ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে যোগ দেন। তিনি ৪৪ বিএমএ লং কোর্সে কমিশন প্রাপ্ত হন।
মেজর মাহফুজের মৃত্যুতে পুরো গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। একমাত্র ছেলের মৃত্যুর খবরে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন নিহত মাহফুজের মা বাবাসহ নিকট আত্মীয়রা। বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন স্ত্রী, কিন্তু নির্বাক ছেলে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, গতকাল মঙ্গলবার ভোরে রাঙামাটির মানিকছড়িতে একটি পাহাড় ধসে মাটি ও গাছ পড়ে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়ক বন্ধ হয়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে রাঙামাটি জোন সদরের নির্দেশে মানিকছড়ি আর্মি ক্যাম্প থেকে সেনাবাহিনীর একটি দল ওই সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে। উদ্ধার কার্যক্রম চলাকালে বেলা ১১টার দিকে পাহাড়ের একটি বড় অংশ উদ্ধারকারী দলের ওপর ধসে পড়লে তারা মূল সড়ক থেকে ৩০ ফুট নিচে পড়ে যান।
পরবর্তীতে একই ক্যাম্প থেকে আরো একটি উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুই সেনা কর্মকর্তাসহ চার সেনাসদস্যকে মৃত এবং ১০ সেনাসদস্যকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। আহতদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারযোগে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়। তবে উদ্ধার কার্যক্রম চালানোর সময় পাহাড় ধসে মাটিচাপা পড়ে সৈনিক মো. আজিজুর রহমান এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন।
সোনালীনিউজ/ এসও
আপনার মতামত লিখুন :