• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

‘যৌনদাসী’ নাদিয়া হলেন জাতিসংঘের গুডউইল অ্যাম্বাসাডর


আন্তর্জাতিক ডেস্ক সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৬, ০৬:৫৫ পিএম
‘যৌনদাসী’ নাদিয়া হলেন জাতিসংঘের গুডউইল অ্যাম্বাসাডর

নাদিয়া মুরাদ। ইসলামিক স্টেট-এর যৌনদাসী হিসেবে দিনের পর দিন তিনি গণধর্ষিতা হয়েছেন। সম্প্রতি তিনি জাতিসংঘের গুডউইল অ্যাম্বাসাডর হিসেবে কাজ শুরু করলেন।

নানা অকথ্য অত্যাচারের শিকার হয়েছে নাদিয়া মুরাদ। সেই কাহিনি তিনি শুনিয়েছেন প্রায় এক বছর আগে। শুনিয়েছিলেন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে। শুনিয়েছিলেন তাঁর যন্ত্রণার কথা।

ইরাকের মেয়ে নাদিয়া। কুর্দ জনগোষ্ঠীর ইয়াজিদি ধর্মের মেয়ে। ২০১৪ সালে ইরাক যখন প্রায় ইসলামিক স্টেটের দখলে তখন সদ্য ১৯-এর নাদিয়ার জীবনে অন্ধকার নেমে আসে। তাঁদের বাড়ি যেখানে ছিল, সেখানে তখন আইএস-এর দাপট । জঙ্গিরা তখন ইয়াজিদি মহিলাদের জোর করে ধরে নিয়ে যাচ্ছে দিকে দিকে। তেমনভাবে একদিন থাবা বসল নাদিয়ার উপরেও। সেই সময়ে হাজার পাঁচেক মহিলাকে অপহরণ করে আইএস।

জাতিসংঘে নাদিয়া জানিয়েছিলেন, একদিন আইএস জঙ্গিরা তাঁদের গ্রামে হানা দেয়। শুরু হয় জোর করে ধর্মান্তরণ। প্রতিবাদ করলেই গুলি। মৃত্যু। গ্রামের আরও মেয়েদের সঙ্গে নাদিয়াও একটি স্কুলে আশ্রয় নেন। কিন্তু টেনে টেনে বের করা হয় তাঁদের। বাসের মধ্যেই শুরু হয় গণধর্ষণ। সেই অত্যাচার সহ্য করতে করতেই নাদিয়ার মনে পড়েছিল, তাঁকে যখন ধরে নিয়ে যাচ্ছিল জঙ্গিরা তখন তাঁর ভাই, বাবা, মা বাধা দিতে আসেন। কিন্তু মুহূর্তেই মধ্যেই তাঁদের গুলি করে মেরে ফেলা হয়। চারিদিকে রক্তের স্রোত। সেই রক্তের মধ্য দিয়েই তাঁর মতো আরও অনেক মেয়েকে টেনে টেনে বাসে তোলা হয়। সেই মেয়েদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন নাদিয়ার নিজের কিংবা তুতো-বোন।

এর পরে শুরু হয় বন্দিজীবন। শুরু হয় গণধর্ষণ। দিন নেই, রাত নেই যখন তখন চলত ধর্ষণ। তিন মাসেরও বেশি সময় বন্দি ছিলেন নাদিয়া। এই দীর্ঘ সময়ে কতবার যে তিনি ধর্ষিত হয়েছেন, তা গুণে শেষ করা যাবে না। সেই যৌন অত্যাচারের সময়ে অনেক দিনই তাঁর মনে হত আত্মহত্যা করবেন।

এক সময়ে তাঁকে অন্ধকার কুঠুরির মধ্যে রাখা শুরু হল। বন্ধ হল খাবার। কিন্তু একটি দিনের জন্য ধর্ষণ বন্ধ হল না। তার মধ্যেই বার বার পালানোর ছক কষে গিয়েছেন তিনি। ধরা পড়ে যাওয়ার জন্য আরও বেশি বেশি করে ধর্ষিত হতে হয়েছে নাদিয়াকে। একদিন সেই বন্দিত্ব থেকে মুক্তি পেয়েছেন নাদিয়া নিজের চেষ্টায়। অনেকদিন কাটিয়েছেন জার্মানির এক অ্যাসাইলামে। অবশেষ হলেন গুডউইল অ্যাম্বাসাডর।

এখন তিনি কাজ করছেন এমন অত্যাচারিত মহিলাদের নিয়ে। সেই কাজেরই পুরস্কার দিল জাতিসংঘ। ইতিমধ্যেই নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য নাদিয়ার নাম প্রস্তাব করেছে ইরাক।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!