• ঢাকা
  • বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

‘দলে শুধু কাউয়া নয়, ফার্মের মুরগিও ঢুকেছে’


মেহেরপুর প্রতিনিধি এপ্রিল ১৭, ২০১৭, ০৪:৫৪ পিএম
‘দলে শুধু কাউয়া নয়, ফার্মের মুরগিও ঢুকেছে’

মেহেরপুর: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, দলের ভেতরে শুধু কাউয়া নয়, ফার্মের মুরগি ঢুকেছে।’

তিনি বলেন, ‘সিলেটে কাউয়া বলেছিলাম, এখানে কাউয়া বলবো না। তবে এখানেও মনে হয় ফার্মের মুরগি ঢুকে গেছে। দেশি মুরগি দরকার, ফার্মের মুরগি নয়। ফার্মের মুরগি স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল নয়।’

সোমবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে মেহেরপুরের আম্রকাননে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। জেলা আওয়ামী লীগ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

ওবায়দুল কাদের আলোচনা সভার মঞ্চ দেখিয়ে তিনি বলেন, এখানে সবাই নেতা। পাতি নেতা, ছোট নেতা, বড় নেতা, তিনি নেতা, উনি নেতা, নেতার আর অভাব নেই। তবে আওয়ামী লীগের নাম দিয়ে অপকর্ম করলে নেতা কিন্তু সহ্য করা হবে না। আওয়ামী লীগের নামে অপকর্ম চলবে না।

রোববার (১৬ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত  ইউপি নির্বাচনের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে জয় অবধারিত। তাই দলের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।

বিএনপি’র কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করে সেতুমন্ত্রী আরো বলেন, বিএনপি হচ্ছে- বাংলাদেশ নালিশ পার্টি। তাদের কোনো ইস্যু নেই। একটার পর একটা ইস্যু সামনে নিয়ে আসে। তাদের ইস্যু তৈরির ফ্যাক্টরি আছে। আন্দোলের ডাক দিয়ে বিএনপি নেতারা বাসায় বসে স্টার জলসা দেখেন। তারা নির্বাচনে না গিয়ে ভুল করেছে। তাই জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।

শেখ হাসিনাকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী সর্বোচ্চ সম্মান দিয়েছে তাই বিএনপির গাত্রদাহ অভিযোগ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিস্তা-গঙ্গা বিএনপি নেতাদের অন্তরে নেই। গঙ্গা যারা চুক্তি করেছে তারাই তিস্তা চুক্তি করবে। এটা তাদের চেতনা। এটা তাদের আদর্শ। এটা তাদের অন্তরের কামনা।

প্রায় ২০ মিনিটের বক্তব্যের শুরুতেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা, জাতির পিতা ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আবেগে আপ্লুত ছিলেন ওবায়দুল কাদের।

সভাপতির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ২০১৯ সালের সংসদ নির্বাচন শেখ  হাসিনার অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে। অন্য কোনভাবে নির্বাচন হওয়ায় কোন সুযোগ নেই। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচ হনে। এর বাইরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, জনগণ যেভাবে রায় দেবে আমরা তাই মেনে নেব। আমরা কুমিল্লার সিটি নির্বাচনে হেরেছি। কিন্তু তা মেনে নিয়েছি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধাদের বছরে ২০ হাজার টাকা উৎসব ভাতা দেয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের কথা বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, স্বাধীনতার ইতিহাস সংরক্ষণে শেখ হাসিনার সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এই মুজিবনগরকে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে  তুরে ধরতে সম্প্রতি ৩০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।  

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বিএনপির প্রতি প্রশ্ন তুলে বলেন, বিএনপি কোন মুক্তিযোদ্ধার দল? জিয়াউর রহমান কখনো প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। জিয়াউর রহমান পাকিস্তানের এজেন্ট হিসেবে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, রাজশাহী সিটি সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন, মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন দোদুল, মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন, চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগর টগর, ঝিনাইদহ-২ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল হাই, মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক, মেহেরপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম রসুল, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা সভাপতি-সম্পাদকবৃন্দসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

সকাল সাড়ে ১০টায় ওবায়দুল কাদের ও মোহাম্মদ নাসিমসহ নেতৃবৃন্দ মুজিবনগর স্মৃতি সৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এর পরে আম্রকাননে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সেখানে পুলিশ, আনছার, বিজিবি ও গালর্স গাইড অভিবাদন গ্রহণ করেন অতিথিবৃন্দ। অভিবাদন শেষে আনছার-ভিডিপি একটি দল ‘হে তারণ্য রুখে দাঁড়াও’ শিরোনামে গীতিমাল্য উপস্থাপন করে। পৌনে ১১টায় শেখ হাসিনা মঞ্চে শুরু হয় আলোচনা সভা। অনুষ্ঠান ঘিরে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলে পুলিশ।

এর আগে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে স্মৃতিসৌধে পতাকা উত্তোলন করে জেলা প্রশাসন। সকাল থেকে জেলা ছাড়াও বিভিন্ন এলাকা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আম্রকাননে উপস্থিত হয় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!