• ঢাকা
  • বুধবার, ১৫ মে, ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

মেয়েদের লক্ষ্য এবার ‘সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ’


ক্রীড়া প্রতিবেদক মার্চ ৯, ২০১৯, ০৫:৪৪ পিএম
মেয়েদের লক্ষ্য এবার ‘সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ’

ছবি: বাফুফে

ঢাকা: গত কয়েক বছর ধরেই বয়সভিত্তিক ফুটবলে দুর্দান্ত খেলে আসছে বাংলাদেশের মেয়েরা। শুধু এশিয়াই নয়, ইউনিসেফের মাধ্যমে গোটা বিশ্ব এরইমধ্যে জেনে গিয়েছে বাংলাদেশের নারী ফুটবলের সাফল্যের কথা। দেশে এবং দেশের বাহিরে প্রতিপক্ষকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে একের পর এক সাফল্য অর্জন করেছে লাল সবুজের মেয়েরা। একদম তরতাজা সাফল্য হলো মাত্র কয়েক দিন আগে ফিলিপাইন ও স্বাগতিক মিয়ানমারকে হারিয়ে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্ত পর্বের টিকেট নিশ্চিত করেছে তহুরা-মনিকা চাকমারা। এবার লক্ষ্য ‘সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ’।

বর্তমান রানার্সআপ হিসেবে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের পঞ্চম আসরে শিরোপা জিততে চায় বাংলাদেশের মেয়েরা। এক্ষেত্রে সাবিনা-মারিয়াদের সামনে বাঁধার দেয়াল হয়ে দাঁড়াতে পারে উদীয়মান নেপাল আর শক্তিশালী ভারতীয় নারী দল। তবে বাংলাদেশের মেয়েরাও পিছিয়ে নেই। গত দুই বছরে অনেক আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে মারিয়া, তহুরা, শামসুন্নাহাররা। তাই তাদের মধ্যে এসেছে পরিপক্কতা। মেয়েরা এখন ভয়ডরহীন ফুটবল খেলতে শিখেছে। আর তাতে সাফ নিয়ে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছে লাল সবুজের ফুটবল সমর্থকরা।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) নেপালে বসতে যাচ্ছে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের পঞ্চম আসর। দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে মেয়েদের শ্রেষ্ঠত্বের এই লড়াইয়ে বাংলাদেশ দলের অংশগ্রহণ ও লক্ষ্য সম্পর্কে অবহিত করতে শনিবার (৯ মার্চ) দুপুরে বাফুফে ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে নিজেদের লক্ষ্য তুলে ধরেন বাংলাদেশ নারী জাতীয় ফুটবল দলের প্রধান কোচ ও অধিনায়ক।

বাফুফে ভবনে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জাতীয় নারী দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন

কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন বলেন, ‘গত সাফে আমাদের এই দলটা ছিল অনভিজ্ঞ। মেয়েদের অনেকের বয়সও ছিল কম।  গত দুই বছরে এরা অনেক আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে। খেলোয়াড়দের মধ্যে পরিপক্কতা এসেছে।  আশা করছি গত সাফের চেয়ে মেয়েরা এবার আরও ভালো ফুটবল খেলবে। গ্রুপ পর্ব নিয়ে আমাদের একটা পরিকল্পনা আছে। গত সাফে যেমন আমরা ভারত আফগানিস্তানকে ৫ গোল দিয়েছিল; আমাদের লক্ষ্য ছিল ওদের ছয় গোল দেওয়ার এবং দিয়েছিলাম। পরে আমরা ভারতের সঙ্গে ড্র করে গ্রুপ সেরা হয়ে সেমি-ফাইনালে নেপালকে এড়িয়েছিলাম।’

তিনি বলেন, ‘এবারও আমাদের লক্ষ্য থাকবে গ্রুপে নেপালের চেয়ে ভালো করে সেমি-ফাইনালে ভারতকে এড়ানোর নেপাল শক্তিশালী দল। কেননা তারা কিছু দিন ভারতের মাঠে তাদেরকে হারিয়ে এসেছে। তবে এই নেপালের সঙ্গে কিছুদিন আগে আমরা মিয়ানমারে (অলিম্পিক বাছাই) ড্র করেছিলাম। এই অভিজ্ঞতায় সাফে কাজে আসবে।’

বাংলাদেশ দলের কোচ বলেন, ‘আমার দলে মূল শক্তি গোল করার অনেক ফুটবলার আছে। সাবিনা, শামসুন্নাহার, কৃষ্ণার সঙ্গে তহুরা আছে। তহুরা মিয়ানমারে ভালো করেছে। সিরাজ জাহান স্বপ্না, ইশরাত জাহান রত্না গত দুই বছরে এদের মধ্যে অনেক পরিপক্কতাি এসেছে। আমাদের প্রথম লক্ষ্য ভালোভাবে গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে সেমি-ফাইনালে ওঠা। যদিও আমরা গতবারের রানার্সআপ, তবু আমরা সেমির পর ফাইনাল নিয়ে ভাবব। গতবার এই দলটা নিয়ে কিন্তু আমাদের কোনো প্রত্যাশা ছিল না। আমরা কোনো লক্ষ্য নিয়ে যাইনি। কিন্তু আমরা ফাইনালে উঠেছিলাম।’

বাফুফে ভবনে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জাতীয় নারী দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন

বাংলাদেশ জাতীয় নারী দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন বলেন, ‌‘নেপাল ও ভারত শক্তিশালী দল।  তবে আমাদের সঙ্গে তাদের মূল পার্থক্য হচ্ছে অভিজ্ঞতায়। যেমন ভারতের এমন অনেক খেলোয়াড় আছে যার আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলার চেয়েও আমাদের দলের অনেকের বয়স কম। তবে আমরা নিজেদের উজাড় করে খেলব। ভালো ফল পাওয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’

বাফুফের টেকনিক্যাল এন্ড স্ট্যাটেজিক জিরেক্টর পল থমাস স্মলি

বাফুফের টেকনিক্যাল এন্ড স্ট্যাটেজিক জিরেক্টর পল থমাস স্মলি বলেন, ‘আমাদের জাতীয় দলের খেলোয়াড়ই আছে মাত্র ১৬ জন। সেখানে অনান্য দেশগুলোর জাতীয় দলের খেলোয়াড় সংখ্যা অনেক। আমরা যেখানে বয়সভিত্তিক পর্যায়ে ভালো, তখন ওরা জাতীয় দলে ভালো। কেননা বাকি দলগুলো অভিজ্ঞতার কারণে ছোটখাট ভুলগুলো করে না এবং আমাদের ছোট ছোট ভুলের সুযোগ নেয়। আসলে এ মুহূর্তে এ বিষয়টি সর্ট আউট করতে আমাদের ধৈর্য্যই ধরতে হবে। আমাদের এই দলটায় একটা সময় দারুণ একটা জাতীয় দল হবে।’

দক্ষিণ এশিয়ার নারী ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের এই লড়াইয়ে অংশ নিতে রোববার সকাল ১০টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে নেপালের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!