• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

গাইবান্ধায় আবাদি জমি পশুর চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে


গাইবান্ধা প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৩, ১০:১৩ এএম
গাইবান্ধায় আবাদি জমি পশুর চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে

গাইবান্ধা: গাইবান্ধায় ৪ বছর ধরে  ৬০ বিঘা দুই ফসলী জমিতে চাষাবাদ বন্ধ রয়েছে। এই জমিগুলো এখন গবাদী পশুর চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। ফলে ওই জমিগুলির বর্গা চাষ করা অর্ধশতাধিক চাষী পরিবারগুলির চার শতাধিক সদস্যের জীবনে নানা দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। চার বছর ধরে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে।

গাইবান্ধার বোয়ালী ইউনিয়নের খামার বোয়ালী গ্রামে গেলে ভুক্তভোগী বর্গাচাষীরা জানায়, ওই গ্রামের আব্দুস সবুর, শহীদুল ইসলাম, শাহাবুদ্দীন ও শরিফুল ইসলাম নামের তিন ভাই জমিগুলোর মালিক। নিজেদের পারিবারিক কোন্দলের কারণে তাদের পৈত্রিক জমিগুলো ভাগাভাগি বন্ধ করে দিয়ে বর্গাচাষীদের চাষাবাদও বন্ধ করে দিয়েছে। এতে পরিবার নিয়ে তারা খাদ্য সংকটে পড়েছে। গবাদি পশুর খাদ্যও মিলছেনা তাদের। বাধ্য হয়ে তারা গরু বাছুর বিক্রি করে দিচ্ছে।

বর্গাচাষী আনছার আলী, নজরুল, আয়নাল, মমতাজ, আবু হোসেন, ফরিদ মিয়া, শহীদুল ইসলাম জানায়, দুই ফসলী জমি গুলিতে আউস ও আমন ধান আবাদ করত তারা। বিঘা প্রতি ১০ থেকে ১৫ মন বর্গার ধান রেখে বাকী ৭ থেকে ১০ মণ ধান জমির মালিককে দিতো। মালিকরা সবাই বিত্তশালী। কিন্তু তারা সবাই গরীব দিনমজুর ফলে ধান না পাওয়াতে চাল কিনে তিন বেলা খাবার জুটছে না। পরিবার নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছে দিনমজুর বর্গাচাষিরা।

অন্যদিকে জমির মালিক আব্দুস সবুর জানান, তাদের বাবা হাজী সামছুল হক সরকার ২০১৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তার জীবদ্দশা হতেই জমিগুলোতে বর্গাচাষীরাই চাষাবাদ করে আসছে। আবাদ করতে আগ্রহী নন যে দুই ভাই তাদের একজন বর্তমানে বোয়ালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম। তিনি এবং অন্য ভাইয়েরা জমি ভাগাভাগিও করছেন না বর্গাচাষিদের চাষাবাদও করতে দিচ্ছে না। বর্গা চাষীদের অভাব অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি সমাধানের চেষ্টা করে বিফল হয়েছেন। কিন্তু দুই ভাই ইচ্ছাকৃতভাবে সমাধানে রাজী নন। সরকার ঘোষণা দিয়েছে এক ইঞ্চি আবাদি জমিও চাষাবাদের বাইরে রাখা যাবে না। সেখানে আমাদের এত বিপুল পরিমাণ জমি অনাবাদী থাকা উচিত নয় বলে আমরা নিজেরাও মনে করি।

এ বিষয়ে বোয়ালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলামকে প্রশ্ন করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি।

গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শরীফুল আলম বলেন, এ বিষয়ে কোন অভিযোগ কেউ  করেনি। জমিগুলো অনাবাদী থাকার বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে দেখা হবে।

গাইবান্ধার কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ বেলাল উদ্দিন জানান রাষ্ট্রীয় নির্দেশের প্রেক্ষিতে আবাদী জমি অনাবাদী ফেলে রাখার কোন সুযোগ নেই, বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে এ ব্যাপারে বর্গাচাষীরা এই বিপুল পরিমাণ অনাবাদি জমি আবাদের আওতায় ফিরিয়ে আনতে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে লিখিত আবেদন করা হয়েছে। 

সোনালীনিউজ/এম

Wordbridge School
Link copied!