• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে ৮ গ্রামের মানুষের পারাপার 


নড়াইল প্রতিনিধি জুলাই ১৯, ২০২৩, ০৩:০৭ পিএম
ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে ৮ গ্রামের মানুষের পারাপার 

নড়াইল: নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কোটাকোল ইউনিয়নের ঘাঘা খালের ওপর নির্মিত সেতুর মাঝ বরাবর ভেঙ্গে একটি অংশ দেবে গেছে। ভেঙ্গে গেছে সেতুর রেলিং। বাধ্য হয়ে ৮টি গ্রামের মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন সেতু দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে। এছাড়া ঝুঁকি নিয়েই চলছে ইজিবাইক, অটোভ্যান, মোটরসাইকেল, কৃষকের ধান নেয়া ঘোড়ার গাড়ি, শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়া। তবে যেকোন মুহূর্তে সেতুটি ধসে পড়ে হতাহতের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯১ সালে স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে ঘাঘা খালের উপর নির্মিত হয় ২০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুটি। প্রায় ৩২ বছরের পুরোনো সেতুটি নড়বড়ে হয়ে পড়েছে বছর দুয়েক আগে। এরপরও সেতুর সংস্কার করা হয়নি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৫০ ফুট দীর্ঘ সেতুর মাঝ বরাবর ভেঙ্গে দেবে গছে। ভাঙ্গা সেতু দিয়ে চলছে ইজিবাইক, অটোভ্যান, মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, কৃষকের পাট নেয়া ঘোড়ার গাড়ি। তবে এলাকার বেশির ভাগ লোকজন ও স্কুল-কলেজ এর শিক্ষার্থীরা হেঁটেই পার হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানায়,দুই বছর আগেই সেতুর মাঝের একটি পিলার দেবে যায়। এতে ধসে না পড়লেও মাঝ বরাবর ভেঙ্গে যায় সেতুটি। এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন কোটাকোল ইউনিয়নের ঘাঘা,  যোগিয়া, ধলইতলা, কোটাকোল, কুমারডাঙ্গা সহ ৮টি গ্রামের বাসিন্দারা ঝুঁকি কি নিয়ে চলাচল করে।

ঘাঘা গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর বিশ্বাস বলেন, প্রায় দুইবছর আগে একটি ট্রাক পার হতে গিয়ে সেতুটি মাঝ বরাবর ভেঙ্গে দেবে যায় এবং দুপাশের রেলিং ও ভেঙ্গে যায়। আমাদের যাতায়াতের অনেক কষ্ট হচ্ছে। ফসল গাড়িতে নিয়ে পারাপার অনেক ঝুঁকি কি নিয়ে করতে হচ্ছে। 

ঘাঘা এলাকার ইজিভাইক চালক বিপ্লব বলেন, আমরা ইজিবাইক চালকরা এই সেতুর উপর দিয়ে চালাতে অনেক ভয় পাই। আমাদের দাবি কতৃপক্ষের কাছে সেতুটি যেনো দ্রুত করে দেয়া হয়।

ঘাঘা গ্রামের লিয়াকত হোসেন রজব বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সেতুটি ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। সেতুর ওপারে মসজিদে নিয়মিত নামাজ আদায় করতে যেতে হয়। পাশে স্কুল রয়েছে। স্কুলের শিক্ষার্থীদের চলাচলে ও সমস্যা হচ্ছে সবাই ঝঁকি নিয়ে পার হচ্ছে।

ঘাঘা-যোগিয়া শেফালী জ্যোতিস্ময় মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র মুবিন বলেন, আমি প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়া আসা করি। বিদ্যালয়ের যাওয়ার সময় আমার খুব ভয় করে সেতু দিয়ে যেতে। আমাদের দাবি সেতুটি যেনো দ্রুত করে দেয়া হয়। যাতে করে আমরা ভালভাবে বিদ্যালয়ে যাওয়া আসা করতে পারি।

কোটাকোল ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান হাসান আল মামুদ বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ মাসিক সমন্বয় মিটিংয়ে সেতুর বিষয়ে জানানো হয়েছে। বিকল্প রাস্তা না থাকায় ভেঙ্গে যাওয়া সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও প্রতিদিন হাজারও মানুষ চলাচল করছে।

কোটাখোল ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড সদস্য (মেম্বার) শেখ শাহ আলম বলেন, সেতুটি ভেঙ্গে পড়ার পর সপ্তাহ খানেক গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পরে বিকল্প সড়ক না থাকায় মানুষের দুর্দশার কথা বিবেচনা করে সেতুটি খুলে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে এলজিইডির লোহাগড়া উপজেলা প্রকৌশলী কাজী আবু সাঈদ মো.জসিম বলেন, এই সেতুটি বর্তমানে জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে আমরা বিষয়টি অবগত রয়েছি। গত ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে আমরা প্রকল্পটির প্রস্তাবনা দিয়েছি। এটি পাশ হলে আমরা সেতুটি বাস্তবয়ন করতে সক্ষম হবো।

সোনালীনিউজ/আর/এসআই

Wordbridge School
Link copied!