• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

চাকরির নামে প্রতারণা, ১৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ


নাটোর প্রতিনিধি  এপ্রিল ৪, ২০২৪, ০৪:০৫ পিএম
চাকরির নামে প্রতারণা, ১৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

নাটোর: নাটোরের নলডাঙ্গা মাধনগর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ নয়ন চন্দ্র প্রামানিকের বিরুদ্ধে অন্যের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে নিজের নামে বেতন উত্তোলন, সরকারি টাকা আত্মসাৎ এবং চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার করে টাকা নেওয়ার নানা অভিযোগ তুলেছেন মোজাম্মেল হক নামে ভুক্তভোগী এক শিক্ষক।

এসময় ভুক্তভোগী ওই শিক্ষক অধ্যক্ষের চাকুরিচ্যুত, প্রতারণার ১৩ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং ১৩ বছরের বেতনের টাকা ফেরতের দাবি জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে নাটোর শহরের একটি অফিস রুমে সংবাদ সম্মেলন করে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী শিক্ষকের বোন জামাই ইব্রাহিম হোসেন ও ভাগ্নে মিজানুর রহমান মিজান উপস্থিত ছিলেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষক মোজাম্মেল হক বলেন, ২০১৩ সালে ওই কলেজে উদ্যোক্তা উন্নয়ন (প্রভাষক) পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়। নিয়োগের পর জানতে পারি, আমার উদ্যোক্তা উন্নয়ন (প্রভাষক) পদে বেতনের জন্য জিও লেটারর অনুমোদন নেই। বিষয়টি অধ্যক্ষকে জানালে জিও হয়ে যাবে বলে আমাকে তিনি আশ্বস্ত করেন। সেই আশায় আমি প্রতিদিন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে নিয়মিত কলেজে ক্লাস নিয়েছি। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে জিও অনুমোদন হয়। আমি বেতন বিষয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমার এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সঠিক নয়। পরবর্তীতে এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট করে দিবে বলে আমার কাছ থেকে ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা নেন। সেই সার্টিফিকেট এনটিআরসিএর ওয়েবসাইট এ রয়েছে। এরপর আমাকে দিয়ে সকল সার্টিফিকেট সত্যায়িত করে নেন। তারপর ইউএনও স্যারের স্বাক্ষরের জন্য সেই ফাইল কলেজের সভাপতি জমা দেন। ৭ দিন পর অধ্যক্ষের স্ত্রীর বোনকে নিয়োগ দিবে বলে তিনি জানান। আমাকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন তিনি। আমি টাকা দিতে অস্বীকার করলে আমার এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট জাল বলে শনাক্ত করে। পরবর্তীতে আমি প্রতিষ্ঠানের ২৫ লাখ টাকা ক্ষতি করেছি বলে আমার নামে নলডাঙ্গা থানায় একটি মামলাও দায়ের করে।

এ শিক্ষক বলেন, ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশে নয়ন চন্দ্র প্রামানিকসহ ৬১ জন অধ্যক্ষের নামে ইউসার আইডি ও পাসওয়ার্ড জাল করে শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকায় অবৈধভাবে বেতন উত্তোলন করে আসছে। এবং দুদকের সেগুন বাগিচায় একটি মামলা রয়েছে। অথচ আমি বেতন ফাইল সরকারের দপ্তরে প্রেরণ করিনি। এবং কলেজ থেকে আমাকে কোনো বেতন-ভাতা দেওয়া হয়নি। অথচ আমার নামে মামলা করা হয়।

তিনি আরও বলেন, অধ্যক্ষের স্ত্রী বিধীকা কম্পিউটার বিষয়ে সিনিয়র প্রভাষক। তিনি ২০০৫ সালে কলেজে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। যার জন্য প্রয়োজন চার বছরের অনার্স কিন্তু তিন বছরের অনার্স ছিল তার। যার জন্য মাস্টার্সের সার্টিফিকেট প্রয়োজন। কিন্তু তিনি ২০০৫ সালে মাস্টার্স পাস করেনি। তিনি ২০১২ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত সরকারি প্রাইমারি স্কুল মোমিনপুরে কর্মরত ছিলেন। বিধায় পাসের সাল অনুযায়ী তার নিয়োগ অবৈধ। ২১-২২ অর্থ বছরের বরাদ্দ করা সরকারি অর্থ প্রতিষ্ঠানে ব্যয় না করে নিজে আত্মসাৎ করেন। আমি এ দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষের চাকুরিচ্যুত, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাসহ আমার ১৩ বছরের বেতন ফেরত চাই।

এ বিষয়ে অধ্যক্ষের স্ত্রী বিথীকা সরকার ঢাকা মেইলকে বলেন, আমি ২০০২ সালে অনার্স পাস করি। এবং ২০০৩ সালে মাস্টার্স পাস করি। আমার এ পদে ২০০৫ সালে নিয়োগ হয়। যেহেতু আমার কলেজ ২০১০ সালে এমপিও হয়েছে। ফলে ২০১২ সালে আমার বেতন হয়। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত ক্রমে আমিসহ ২১০ জনের বেতন চালু করেন। একজন জাল সনদধারী শিক্ষক আমাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করছেন। তার জাল সনদ ধরা পড়ার কারণে তিনি উল্টা-পাল্টা কথা বলছেন। আমাদের বিভিন্ন সময় হুমকি প্রদান করছেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ নয়ন চন্দ্র প্রামানিক তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে ঢাকা মেইলকে বলেন, মোজাম্মেলের জাল সনদ ধরা পড়ায় ইউএনও তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ বিষয়ে আমার কিছু করার নেই। এটা আইনের বিষয়। ফলে তিনি বিভিন্ন সময় আমার বিরুদ্ধে নানা রকম অভিযোগ করছেন।

দুদকের মামলার বিষয়ে প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি এসব বিষয়ে কিছুই জানি না। আমি বলতেও পারব না। এসব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিষয় বলে জানান তিনি।

এমএস

Wordbridge School
Link copied!