ঢাকা : ভারতে দীর্ঘদিনের বিতর্কিত ‘সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল’ বা ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় পাশ হয়েছে। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এই বিলে শিলমোহর দিয়েছে। এদিন এই বিল সংসদে পেশ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ২০১৬ বিগত লোকসভায় সংসদের দুই কক্ষে পাস করা যায়নি। সংসদের একটি যৌথ কমিটি দ্বারা বিলটির তদন্ত হয়েছিল। তারপরে লোকসভায় পাস হলেও রাজ্যসভায় তা পাস করতে পারেনি মোদী সরকার।
বিশেষত আসামসহ উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে এই বিলের বিপক্ষে ব্যাপক প্রতিবাদ হয়েছিল। তারপরও বিজেপির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল, বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের নিপীড়িত হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টানদের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদানের জন্য নাগরিকত্ব আইন ১৯৫৫ সংশোধন করা হবে।
সম্প্রতি, রাঁচীতে এক সভায় অমিত শাহ জানিয়ে দিয়েছেন, ২০২৪ সালের আগে গোটা দেশে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি তৈরি করবে সরকার। চিহ্নিত করা হবে অনুপ্রবেশকারীদের। কিন্তু আসামের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে অমুসলিমদের মধ্যে দেশ ছাড়া হওয়ার আশঙ্কা দূর করতে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি আগে পাশ করাতে চায় নরেন্দ্র মোদী সরকার। যে বিলে বলা হয়েছে, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ থেকে যে অমুসলিমেরা (হিন্দু, পার্সি, শিখ, খ্রিস্টান) ধর্মীয় পীড়নের কারণে এ দেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব দেবে সরকার।
যদিও বিলে প্রতিবেশী দেশ থেকে আসা মুসলিমদের বিষয়ে কোনও উল্লেখ করা হয়নি। ধর্মের ভিত্তিতে কেন ওই ভেদাভেদ, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই সিলেক্ট কমিটির বৈঠকে আপত্তি জানিয়েছেন অধিকাংশ বিরোধী দল।
এর আগে সোমবারই সংসদে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন যে, অনুপ্রবেশকারীদের ভারতে থাকতে দেওয়া হবে না। সবাইকে বহিষ্কার করা হবে। সেই সঙ্গে অমিত শাহ এও জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের মধ্যে গোটা দেশে জাতীয় পঞ্জিকরণ তথা ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ সিটিজেনস বাস্তবায়িত হবে।
ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রথমে বিজেপি শাসিত আসামে এনআরসি বাস্তবায়ন করা হয়। কিন্তু তাতে দেখা গিয়েছে প্রচুর হিন্দুর নামও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি থেকে বাদ পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে আসামের বিজেপি নেতারাই রাজনৈতিক ভাবে বিপন্ন বোধ করছেন। আবার বাংলাতেও সদ্য উপনির্বাচনে দেখা গিয়েছে, তিনটি আসনেই হেরেছে বিজেপি। অনেকে বিশেষ করে তৃণমূল প্রচার করছে এনআরসি নিয়ে মানুষকে ভয় দেখানোর জন্যই জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে বিজেপি। সেই সঙ্গে তৃণমূল আরো জোরদার এনআরসি বিরোধী প্রচার শুরু করে দিয়েছে।
সোনালীনিউজ/এএস
আপনার মতামত লিখুন :