ছবি: সংগৃহীত
উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিতে তাঁর পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান ঢাকায় পৌঁছেছেন। তবে শুক্রবারই খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রার কথা থাকলেও কাতার সরকারের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের কারিগরি ত্রুটিকে কেন্দ্র করে পুরো পরিকল্পনাই পিছিয়ে গেছে।
শুক্রবার বেলা পৌনে ১১টায় ডা. জুবাইদাকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সকাল ১০টার মধ্যে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে পৌঁছাবেন এবং দুপুর নাগাদ দেশ ছাড়বেন-এমনটাই জানানো হয়েছিল দলের পক্ষ থেকে। কিন্তু বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পরপরই বিএনপি জানায়, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ত্রুটির কারণে শুক্রবার তা ঢাকায় আসছে না।
এদিকে জুবাইদার আগমনকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই হাসপাতালের সামনে ভিড় করেন বিএনপির নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। দীর্ঘ অপেক্ষার পর বেলা ১১টা ৫৩ মিনিটে এভারকেয়ার হাসপাতালে প্রবেশ করেন তিনি। সেখানে আড়াই ঘণ্টার মতো অবস্থান করে দুপুর আড়াইটায় ধানমন্ডিতে মায়ের বাসার উদ্দেশে বের হন। হাসপাতালে উপস্থিতি, দ্রুত ফিরে যাওয়া—এসব নিয়ে দল বা পরিবারের কেউ গণমাধ্যমকে কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি। তিনি কী বার্তা নিয়ে এসেছেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, কাতারের আমির প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিকল্প একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, নতুন এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি শনিবার বিকেল ৫টায় ঢাকায় পৌঁছাতে পারে। এরপর রবিবার খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
এর আগে নয়াপল্টনে দোয়া-মাহফিলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে তাঁর শারীরিক অবস্থার ওপর। তিনি ফ্লাই করার উপযোগী আছেন কিনা, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে মেডিকেল বোর্ড।
দলীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, ডা. জুবাইদার আগমন চিকিৎসা-ব্যবস্থাপনার অংশ। কেউ কেউ মনে করছেন, তাঁর হঠাৎ আগমন এবং দলের নীরবতা আরও বড় কোনও রাজনৈতিক বা চিকিৎসাগত বার্তার ইঙ্গিত দিতে পারে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী জানান, জুবাইদার তরফ থেকে বা দায়িত্বশীল পর্যায় থেকে একটি ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রত্যাশা ছিল।
গত ২৩ নভেম্বর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন খালেদা জিয়া। তাঁর দীর্ঘ চিকিৎসাব্যবস্থা ঘিরে প্রতিদিনই নেতাকর্মীদের ভিড় দেখা যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাতে লন্ডনে নেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে মধ্যরাত থেকেই এভারকেয়ারের সামনে নতুন করে জড়ো হতে থাকেন নেতাকর্মীরা। অনেকে পুরো রাত সেখানে কাটান।
শুক্রবারও দেশের বিভিন্ন স্থানে দোয়া-মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায়।
এসএইচ
আপনার মতামত লিখুন :