• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

১৭ ডিসেম্বর ‘বড় কিছু’ ঘটতে যাচ্ছে: মান্না


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ১৩, ২০২৩, ০৬:৪২ পিএম
১৭ ডিসেম্বর ‘বড় কিছু’ ঘটতে যাচ্ছে: মান্না

ঢাকা: সরকারবিরোধী আন্দোলনে আগামী ১৭ ডিসেম্বর ‘বড় কিছু’ ঘটতে যাচ্ছে বলে ঘোষণা এসেছে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে। বুধবার দুপুরে রাজধানীর পল্টনে মোড়ে এক সমাবেশে মঞ্চের নেতা নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না এ ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, ‘‘১৭ তারিখ (ডিসেম্বর) কী হয় দেখবেন। ১৭ তারিখের পরেও যতই দিন যাক এই সরকারের পতন পর্যন্ত আন্দোলন থামবে না। এই ‘অবৈধ, একতরফা পাতানো নির্বাচনকে’ আমরা প্রতিহত করব।”

আগামী ১৭ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। বিএনপি-জামায়াত ও সমমনাদের বর্জনের এই ভোটে শেষ পর্যন্ত যারা ভোটে থাকতে না চান, তাদের সেই দিন পর্যন্ত সরে যাওয়ার সুযোগ আছে।

বাংলাদেশে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর উদাহরণ আছে। ২০১৪ সালে বিএনপির বর্জনের ভোটেও জাতীয় পার্টির হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ শেষ দিনে তার নেতাদের মনোনয়নপত্র তুলে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরে তার স্ত্রী রওশন এরশাদের পক্ষ থেকে ঘোষণা আসে, ভোটে থাকবে তার দল।

এরশাদের একটি মনোনয়নপত্র সে সময় প্রত্যাহারও হয়েছিল। সেটি জমা দেওয়া হয় ঢাকা-১৭ আসনে। তবে রংপুর-৩ ও লালমনিরহাট-১ আসনে সময় শেষ হয়ে যাওয়ার কারণ দেখিয়ে সে আবেদন ফিরিয়ে নেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা।

জাতীয় পার্টির বর্তমান চেয়ারম্যান জি এম কাদেরও সে সময় মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের কথা বলেছিলেন। তিনি সেই নির্বাচনে অংশও নেননি।

জাতীয় পার্টি এবার নানা টানাপড়েনের মধ্যে ভোটে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিলেও শেষ পর্যন্ত তারা থাকবে কি না, এ নিয়ে স্বয়ং সংশয় প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে সরকারপ্রধান এই সংশয় প্রকাশ করেন। পরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের একে ‘অনানুষ্ঠানিক বক্তব্য’ বলে বর্ণনা করেন।

২০১৪ সালেও এবারের মতোই জাতীয় পার্টি জোটে না দিয়ে আলাদা নির্বাচন করেছিল। তবে আওয়ামী লীগ তাদেরকে ৩৪টি আসনে ‘ছাড়’ দিয়েছিল। এবার আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি- দুই দলই বারবার আলোচনায় বসলেও আসন নিয়ে সমঝোতার কথা অস্বীকার করছে।

এর মধ্যে বিএনপি, জামায়াত, গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট ও সমমনাদের টানা আন্দোলন চলছেই। গত ২৯ অক্টোবর থেকে সপ্তাহে একদিন বিরতি দিয়ে টানা হরতাল ও অবরোধ ডাকা হচ্ছে। চলতি সপ্তাহেই কেবল তিন দিন বিরতি মিলেছে।

হরতাল অবরোধের কার্যকারিতা অবশ্য নেই। নগর পরিবহনে প্রায় স্বাভাবিক চিত্র ফিরে এসেছে। শুরুতে দূরপাল্লার বাস কম চলছেও এখন বেড়েছে, আন্তজেলায় চলছে এমনকি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গাড়িগুলোও।

আন্দোলন সফল হবে ঘোষণা দিয়ে মান্না বলেন, “আন্দোলন হচ্ছে, আন্দোলন চলবে, আরও বড় আকারে আন্দোলন হবে। বাম-ডান যত দল আছে যুগপৎ ভিত্তিতে সবাই মাঠে নামবে এবং এবার দেখবেন আন্দোলনের জোয়ারে এই সরকার ভেসে যাবে।”

বাংলাদেশে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মহাসচিব সাইফুল হক বলেন, ‘‘যদি সরকার সোজা পথে না হাঁটে, আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের পর থেকে রাজপথে বিরোধী দলগুলো এই অবৈধ নির্বাচন, তামাশার নির্বাচন, জালিয়াতির নির্বাচন বন্ধ করার জন্যে লক্ষ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নতুনভাবে আন্দোলন গড়ে তুলব। “দলমত নির্বিশেষে সবাই রাজপথে দাঁড়িয়ে আন্দোলনকে এগিয়ে নেব। বিজয় নিশ্চিত করে আমরা ঘরে ফিরবে।”

আগামী ১৮ ডিসেম্বর থেকে ভোটের প্রচার ছাড়া কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচির অনুমতি না দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্বাচন কমিশনের চিঠির তীব্র সমালোচনা করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলের সাংবিধানিক অধিকার আছে। তারা জনগনকে ভোট ‘না’ দেওয়ার কথা বলতে পারে।

‘‘৭ তারিখে (জানুয়ারি) বাংলাদেশের কোনো দেশপ্রেমিক মানুষ ভোট দিতে যাবে না। এ কথা আমরা বলতেই থাকব। কোনো নিষেধাজ্ঞা দিয়ে এ কথা থামানো যাবে না।”

এআর

Wordbridge School
Link copied!