• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

জামায়াত ইস্যুতে যুক্তফ্রন্ট-জাতীয় ঐক্যে বিভক্তি


বিশেষ প্রতিনিধি সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৮, ০৬:৪৫ পিএম
জামায়াত ইস্যুতে যুক্তফ্রন্ট-জাতীয় ঐক্যে বিভক্তি

ঢাকা : বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর থাকা, না থাকা কয়েকদিন ধরে কানাঘুষা চলছে। বিশেষ করে জামায়াত বিষয়ে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতিবাচক মন্তব্যের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে জামায়াতে ইসলামী হঠাৎই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। আর জাতীয় ঐক্যে ‘জামায়াত’ খটকা দূর করতেই রুদ্ধদ্বার বৈঠকও করেছে কামাল হোসেনের গণফোরাম ও তিন দলের সমন্বয়ে গঠিত দল যুক্তফ্রন্ট।

তবে গুঞ্জন আছে নতুন জোট গড়ার পর সপ্তাহ না যেতেই জামায়াতে ইসলামী ইস্যুতে বিভক্তি দেখা দিয়েছে যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায়।

ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ড. কামাল বলছেন, জামায়াত থাকলে জোট হবে না। কিন্তু তার এই কথাকেই শেষ কথা মনে করছেন না জোটের অন্য নেতারা। বিএনপি বলছে, জামায়াতকে বাদ দিয়ে জোট গঠনের কোনো প্রস্তাব এখনো তাদের দেওয়া হয়নি।

প্রক্রিয়া শুরু বেশ আগে থেকেই, ঘটা করে। এর মধ্যে বিকল্প ধারার ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের আ স ম আব্দুর রব এবং নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মিলে যুক্তফ্রন্ট এবং গণফোরামের ড. কামাল হোসেন আলাদা করে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বান জানান। এ চার দল শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার ব্যানারে ঘোষণা করেন ৯টি লক্ষ্য ও ৫ দফা দাবি মালা।

ঘোষিত লক্ষে, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে কাজ না করার অঙ্গীকার করা হলেও সপ্তাহ না যেতেই এখন জামায়াত ইস্যুতে বিভক্ত বক্তব্য এ জোটের নেতাদের।

গণফোরামের ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা ক্লিয়ারলি বলেছি, জামায়াতের সঙ্গে আমাদের জোটের কোনো সম্ভাবনা নেই। আমাদের অবস্থানের বিষয়ে বিএনপির অবশ্যই জানা আছে।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান বলেন, জামায়াত এখন নিবন্ধিত নয়। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনে জন্য যেখানে লড়াই করেছি, সেখানে তারা আসতে পারবে না। এটা ইস্যু করে ঐক্যটা ক্ষতি করতে চাই না।

এদিকে, ২০ দলীয় জোট বলছে, জামায়াত ইস্যুতে এখনো তাদের কিছু জানায়নি নতুন এ জোট। আর আওয়ামী লীগ মনে করে, জামায়াতের সঙ্গে বন্ধুত্ব হতে পারে একমাত্র স্বাধীনতা বিরোধীদেরই।

২০ দলের সমন্বয়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, (জামায়াত) নিয়ে আমাদের সাথে কোনো আলোচনা হয়নি। যখন আসবে তখন দেখা যাবে। জামায়াত এখন ২০ দলের সঙ্গে রয়েছে।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতা বিরোধী যে চক্র, জামায়াতে সঙ্গে কোনো ধরনের নির্বাচনী জোটসহ যেকোনো ব্যাপারে আলোচনার অবকাশ নেই।’

মুখে নিবন্ধন না থাকার অজুহাত দেখানো হলেও আদর্শের জায়গা থেকে জামায়াতকে এ ছাড়ের কারণ হতে পারে ক্ষমতায় যেতে দলটির ভোটাররা, এমনটি মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘দল হিসেবে তাদের নিবন্ধন নেই। তারা নির্বাচন করতে পারবে না। তাদেরকে নিয়ে কেন এত কথা হচ্ছে, আমি নিজেও বুঝতেছি না।   

রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক রওনক জাহান বলেন, ‘তাদের (জামায়াত) যে ভোটার তারাতো দেশের মধ্যে রয়েছে। অতএব সেটাকে কেউ উপেক্ষা করতে পারবে না। ওদের সাপোর্টটা দুইটা বড় দলের জন্য প্রয়োজন।

জামায়াত ইস্যু স্পষ্ট করে মূলধারার বড় কোনো রাজনৈতিক জোটের সঙ্গে যেতে না পারলে এ যুক্তফ্রন্ট- জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ ঐক্য এবং লক্ষ্য শেষ পর্যন্ত কতদূর যায়, সেটাও আগ্রহের জায়গায় থাকছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!