• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

আমি ওই মানব সেতুতে উঠতে চাইনি...


জেলা প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৭, ০৯:৫৮ পিএম
আমি ওই মানব সেতুতে উঠতে চাইনি...

চাঁদপুর: ‘আমি ওই মানব সেতুতে উঠতে চাইনি। আমার বিবেক বাধা দিয়েছে। কিন্তু তাদের জোরাজুরির কারণে বাধ্য হয়েছি। তারা বলেছে, এটা নাকি তাদের বিদ্যালয়ের ঐতিহ্য।’

এভাবেই আত্মপক্ষ সমর্থন করলেন হাইমচর উপজেলার চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটোয়ারী। যিনি জুতা পায়ে স্কুলছাত্রদের পিঠ দিয়ে তৈরি পদ্মা সেতু হেঁটে পাড় হয়ে তুমুল আলোচনায় উঠে এসেছেন।

গেল ৩১ জানুয়ারি হাইমচরের নীলকমল উছমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ওই ঘটনা ঘটে। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সেই দৃশ্যের ছবি ভাইরাল হয়। এতে জনপ্রতিনিধিকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে। গণমাধ্যমে খবরও প্রকাশ হয়।

বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) দিনভর এ নিয়ে তুমুল তর্কবিতর্কের পর সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকর্মীরা যোগাযোগ করেন ওই জনপ্রতিনিধির সঙ্গে। আত্মপক্ষ সমর্থন করে হাইমচর উপজেলার চেয়ারম্যান গণমাধ্যমে কথা বলেছেন।

নূর হোসেন পাটোয়ারী বলেছেন, ‘মানবসেতু তৈরি করে তার উপর দিয়ে প্রধান অতিথিকে হেটে পাড় করানো নাকি তাদের বিদ্যালয়ের ঐতিহ্য। এমনকি তারা আমাকে জুতা খুলেও উঠতে দেয়নি। কারণ সেতুতে নাকি কেউ জুতা খুলে ওঠে না। এর আগেও নাকি অনেকে উঠেছে। পরে সম্মানী হিসাবে আমি পাঁচ হাজার টাকাও দিয়েছি।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোশাররফ হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, প্রতিবছর বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীরা এরকম সেতু তৈরি করে থাকে। ওই সেতুতে প্রতিবছরই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথিকে হেঁটে যাবার অনুরোধ করা হয়। তিনি নিজেও হেঁটেছেন। তার আগে একজন ইউএনও হেঁটেছিলেন। এমন ছবিও আছে।

প্রধান শিক্ষক বলেন, ঐতিহ্য অনুযায়ী এবারও শিক্ষার্থীরা মানবসেতু তৈরি করে প্রধান অতিথি উপজেলা চেয়ারম্যানকে হেঁটে যাওয়ার অনুরোধ করে। তবে প্রথমে তিনি রাজি হননি। পরে আবার রাজি হন।

ঘটনাটি নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যেও দেখা গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। তারা এটাকে অমানবিক বলে স্বীকার করেছে। তবে তারা বলেছে, অনেকদিন ধরেই বিদ্যালয়ে এটা চলছে। আগে তারা বুঝতে পারেনি এটা কতটা অমানবিক। এক শিক্ষার্থী আরেক শিক্ষার্থীর গায়ে হয়তো উঠতে পারে, কিন্তু বয়স্কদের ক্ষেত্রে এটা ঠিক নয়।

এদিকে, ফেসবুকে এ ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে। ছাত্রদের শরীরের উপর জুতো পায়ে হাঁটার ঘটনায় উপজেলা চেয়ারম্যানের পাশাপাশি বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদেরও শাস্তি দাবি করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে হাইমচর উপজেলার চেয়ারম্যান আবারো বলেন, ‘আমার বিবেক বাধা দিয়েছে। কিন্তু তাদের জোরাজুরির কারণে বাধ্য হয়েছি।’ তবে এরপর থেকে এ ধরনের মানব সেতুতে আর হাঁটবেন না বলে কথা দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, আগামীতে এ বিদ্যালয়ে যেন এ ধরনের আয়োজন করা না হয় সে বিষয়েও ব্যবস্থা নেবেন।

ছাত্রদের পিঠ পদ্মাসেতু, পার হলেন আ.লীগ নেতা!

সোনালীনিউজ/এমএন

Wordbridge School
Link copied!