নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে যৌতুকের টাকা না পেয়ে পরকিয়ার মিথ্যা অপবাদ দিয়ে এক গৃহবধুকে নির্যাতন করে গরম চামচের ছ্যাঁকা দিয়ে মাথার চুল কেটে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। বুধবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের মামরকপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নির্যতিতা গৃহবধূর নাম শিরিনা আক্তার। তাকে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এঘটনায় নির্যাতিতা গৃহবধূ শিরিনা আক্তার বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় সন্ধ্যায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের পর পুলিশ বাড়ি মজলিস গ্রামে অভিযান চালিয়ে নির্যাতনকারী স্বামী সুমনকে গ্রেপ্তার করেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের মামরকপুর গ্রামের মৃত আব্দুর বরের ছেলে সুমন ওরফে জামানের সঙ্গে বারদী ইউনিয়নের আলগীর চর গ্রামের আব্দুল মালেকের মেয়ে শিরিনা আক্তারের দশ বছর আগে তার বিয়ে হয়। সাংসারিক জীবনে তাদের সাদিয়া ও সুমাইয়া নামের দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের কয়েক বছর পর তার স্বামী সুমন মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। কাজকর্ম না করে স্ত্রীর কাছে জমানো টাকা নিয়ে মাদক সেবন করে। বিভিন্ন সময়ে তার বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করত। টাকা এনে না দিলে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। পরে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সিএনজি কেনার কথা বলে বাবার বাড়ির সম্পত্তি বিক্রি করে এক লাখ টাকা এনেও দেন নির্যাতিত গৃহবধূ।
সম্প্রতি তাকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে না দেয়ায় পরকিয়ার অপবাদ দেয় স্বামী। এ বিষয়ে তাদের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে স্বামী সুমন গৃহবধু শিরিনাকে পিটিয়ে মারাক্তকভাবে আহত করে। এ ঘটনার জের ধরে বুধবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে ওই গৃহবধূকে পুনরায় টাকা আনার জন্য চাপ দেয়। টাকা আনতে পারবে না এ কথা বলার পর স্ত্রী শিরিনার বিরুদ্ধে পরকিয়ার মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারধর করে আহত করে। এসময় গৃহবধূর মাথার চুল কেটে দেয়। সুমন শুধু চুল কেটেই ক্ষান্ত হয়নি। চুলার আগুনে স্টিলের চামচ গরম করে মুখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাঁকা দেয়।
ঘটনার পর শিরিনা আক্তারের চিৎকারে প্রতিবেশিরা তাকে উদ্ধার করে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
সোনারগাঁও থানার ওসি শাহ মো. মঞ্জুর কাদের জানান, এ ঘটনায় অভিযোগ গ্রহন করা হয়েছে। আসামি সুমনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম