উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় নকলের মহোৎসব

  • প্রতিনিধি, শরণখোলা (বাগেরহাট) | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ২৬, ২০১৮, ০৫:১২ পিএম

বাগেরহাট : জেলার শরণখোলায় নকলে বাধা দেয়ায় পরীক্ষার্থীদের হাতে এক শিক্ষা কর্মকর্তা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার (২৬ মে) দুপুরে উপজেলার উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শরণখোলা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে।

কলেজ ও শিক্ষার্থীদের সূত্র জানায়, শনিবার সকল ৯টায় উপজেলার রাজৈরস্থ শরণখোলা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ডিগ্রি সমমানের ৩য় সেমিষ্টারের ভূগোল পরীক্ষায় ৪৬ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। ওইদিন সকল ১১টার দিকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান খান পরীক্ষার্থীদের কক্ষ পরিদর্শনে গিয়ে নকলের ছড়াছড়ি দেখে হতবাক হন। এ সময় এক শিক্ষার্থীর খাতা জব্দ করেন তিনি।

একপর্যায় ৩/৪ জন পরীক্ষার্থী ওই শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে বাকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। তবে ঘটনার সময় কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্বে থাকা কলেজটির বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক বিপ্রত রায় ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের প্রভাষক হিরু শেখ কোনো প্রতিবাদ না করে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে, এক শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষা কর্মকর্তা টাকার জন্য আমাদের বিরক্ত করেন। তার টাকা ফরম পূরণের সময় কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক শারমিন সুলতানার কাছে দেয়া হয়েছে। তারপরেও আমাদের বিরক্ত করবেন কেন?

অপরদিকে, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা টাকার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, তিনি পরীক্ষার্থীদের হাতে ব্যাপক নকল দেখে বাধা দেন। পরে পরীক্ষার্থী নামধারী ৩/৪ জন বখাটে তার সাথে খারাপ আচরণ করে। এ ছাড়া কলেজের অধ্যক্ষ মো. নুরুল আলম ফকির এলাকায় না থাকায় তিনি বিষয়টি তাকে জানাতে পারেননি। কক্ষপরিদর্শক বিপ্রত রায় ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পরীক্ষার্থীরা অধিকাংশই বয়স্ক হওয়ায় তারা প্রতিবাদ করেননি। তবে, যা ঘটেছে তা দুঃখজনক।

অন্যদিকে, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার সার্বিক দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা (হল সুপার) প্রভাষক শারমিন সুলতানা বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। খোঁজ-খবর নিয়ে দেখবেন।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ৯ মে ওই কলেজের এইচএসসি পরীক্ষায় নকলে মহোৎসবের কারণে তৎকালীন কেন্দ্র সচিবের দায়িত্বে থাকা সহকারী অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান নকল নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে পদত্যাগ করেন। এ নিয়ে ওই সময় পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে টনক নড়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের। তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ অতুল মন্ডল বাদী হয়ে একাধিক শিক্ষককে বিবাদী করে শরণখোলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরীক্ষার পাশের হার বাড়িয়ে কলেজটি সরকারি করণের উদ্দেশে এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিংকন বিশ্বাসের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর